Advertisement
E-Paper

অস্বস্তির চাপে জিয়োয় ঢোক গিলছে কেন্দ্র

প্রায় দু’বছর সমীক্ষা চালানোর পরে দেশের ছ’টি বিশ্ববিদ্যালয়কে গত কাল উৎকর্ষের শিরোপা দেয় মোদী সরকার। পাঁচটি প্রতিষ্ঠানকে ঘিরে সমস্যা না হলেও, প্রশ্ন ওঠে ষষ্ঠ নাম জিয়ো নিয়ে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ জুলাই ২০১৮ ০৩:২৬

অস্তিত্ব কাগজে-কলমে। ঘোষণা হয়েছে সবে মার্চ মাসে। চার মাসে শুধু জমি কেনা হয়েছে। আর এর মধ্যেই অম্বানীদের প্রস্তাবিত ‘জিয়ো ইনস্টিটিউট অব রিলায়্যান্স ফাউন্ডেশন’-কে দেশের উৎকর্ষ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তালিকায় ঠাঁই দিয়ে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছে নরেন্দ্র মোদীর সরকার। অস্বস্তিতে পড়ে আপাতত সার্চ কমিটির ঘাড়ে দায় চাপিয়ে পিঠ বাঁচাতে চাইছেন প্রকাশ জাভড়েকর। মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক আজ জানিয়েছে, উৎকর্ষ তালিকায় কারা স্থান পাবে তা বাছাইয়ের দায়িত্বে ছিল এই কমিটি। মন্ত্রক কেবল তাদের তালিকায় সিলমোহর বসিয়েছে। সরকারের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলে কংগ্রেসের বক্তব্য, পাইয়ে দেওয়ার রাজনীতি করতে গিয়ে মাত্রাজ্ঞান হারিয়ে ফেলেছে মোদী সরকার।

প্রায় দু’বছর সমীক্ষা চালানোর পরে দেশের ছ’টি বিশ্ববিদ্যালয়কে গত কাল উৎকর্ষের শিরোপা দেয় মোদী সরকার। পাঁচটি প্রতিষ্ঠানকে ঘিরে সমস্যা না হলেও, প্রশ্ন ওঠে ষষ্ঠ নাম জিয়ো নিয়ে। কী ভাবে এটি উৎকর্ষের তালিকায় এল, প্রশ্ন ওঠে সব মহলে। অস্বস্তিতে পড়েন মন্ত্রকের কর্তারা। সব মহলে প্রবল সমালোচনা শুরু হলেও কাল রাত পর্যন্ত নিজেদের সিদ্ধান্ত অনড় ছিল মন্ত্রক। গভীর রাতে তারা টুইটারে ব্যাখ্যাও দেয় একপ্রস্ত। কিন্তু বিতর্ক ক্রমেই বড় আকার নিচ্ছে দেখে আজ কার্যত ঢোঁক গিলে মন্ত্রক জানায়, ‘জিয়ো ইনস্টিটিউট’-কে তিন বছরের মধ্যে সম্পূর্ণ পরিকাঠামো গড়ে পঠন-পাঠন শুরু করে দিতে হবে। নয়তো তাদের কাছ থেকে ওই শিরোপা কেড়ে নেওয়া হবে।

সার্চ কমিটির উপরে দায় চাপাতে সকালে মুখ খোলেন উচ্চশিক্ষাসচিব আর সুব্রহ্মণ্যম। জানান, তিনটি বিভাগে ছ’টি প্রতিষ্ঠান বেছে নেওয়া হয়েছে। সরকারি প্রতিষ্ঠান হিসাবে স্থান আইআইটি মুম্বই ও দিল্লি এবং আইআইএসসি বেঙ্গালুরু। বেসরকারি প্রতিষ্ঠান হিসাবে বিটস পিলানি ও মণিপাল। আর ‘গ্রিনফিল্ড’ অর্থাৎ নতুন বা প্রস্তাবিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিভাগে স্থান পেয়েছে জিয়ো। তৃতীয় বিভাগে মোট ১১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নাম দিয়েছিল। একমাত্র জিয়োই উৎকর্ষের শিরোপা পাওয়ার ৪টি মাপকাঠি পূরণ করেছে। তাই ওই প্রতিষ্ঠানকে বেছেছে কমিটি।

এর পরে বিতর্ক এড়াতে উচ্চশিক্ষাসচিব বলেন, ‘‘জিয়োকে যে আমরা উৎকর্ষের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে চাই, সে কথা কেবল জানানো হয়েছে। ওদের হাতে তিন বছর সময় রয়েছে। তার মধ্যে সমস্ত পরিকাঠামো গড়ে পড়ানো শুরু করতে হবে।’’

মন্ত্রকের কর্তারা বলেন, কমিটি স্বাধীন ভাবে কাজ করে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মন্ত্রকের কোনও হাত নেই। সুব্রহ্মণ্যমও বলেন, ‘‘কমিটি নিজের বিবেচনায় সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমরা তার মতামতকে সম্মান করি। কারণ, ওই কমিটিতে বিশিষ্ট ব্যক্তিরা রয়েছেন। যাঁদের সততা প্রশ্নাতীত। আমরা নিশ্চিত, তাঁরা সব দিক ভেবেই ওই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।’’

তবু প্রশ্ন উঠেছে, খোদ মানবসম্পদ মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর যে সিদ্ধান্ত ঘোষণা করছেন, সেই সিদ্ধান্তের দায় কী ভাবে সরকার বা মন্ত্রকের কর্তারা এড়াতে পারেন? বিশেষ করে মন্ত্রকই যখন জানাচ্ছে, জিয়ো এখন পর্যন্ত কেবল ৮০০ একর জমি কিনেছে। নবি মুম্বইয়ের কাছে কারজাতে ওই জমিতে তিন বছরে সম্পূর্ণ পরিকাঠামো গড়ে তারা পড়ানো শুরু করে দেবে— এমনটা হওয়া যে বেশ কঠিন তা স্বীকার করে নিতে বাধ্য হচ্ছেন মন্ত্রকের কর্তারাই। যা নিয়ে বিরোধী শিবিরের এক নেতার টিপ্পনী, মোদী এখন অজাতেরও মিত্র!

IIT Delhi প্রকাশ জাভরেকর Reliance Foundation Jio Institute of Reliance
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy