Advertisement
E-Paper

১৭ নম্বর ছাত্রাবাসের ‘রুম নম্বর ১৩’! হরিয়ানার বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ঘরে বসেই বোমা হামলার ছক কষেছিলেন মুজ়াম্মিলেরা

৭০ একর জমির উপর বিস্তৃত আল-ফালাহ্ হরিয়ানা-দিল্লি সীমান্ত থেকে প্রায় ২৭ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। ডাক্তারি পড়ুয়াদের ছাত্রাবাসটি রয়েছে ক্যাম্পাসের ভিতরে। সেখানেই উমর এবং তাঁর সহযোগীরা গোপনে দেখা করতেন। ওই ঘরটি আপাতত ‘সিল’ করে দেওয়া হয়েছে।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৩ নভেম্বর ২০২৫ ১৪:০৪
(বাঁ দিকে) ছাত্রাবাসের এই বিল্ডিংয়েই ছিল মুজ়াম্মিলের ঘর। ধৃত মুজ়াম্মিল (ডান দিকে)

(বাঁ দিকে) ছাত্রাবাসের এই বিল্ডিংয়েই ছিল মুজ়াম্মিলের ঘর। ধৃত মুজ়াম্মিল (ডান দিকে) ছবি: সংগৃহীত।

হরিয়ানার বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৭ নম্বর আবাসিক ভবন। সেখানকার একচিলতে এক ঘরে থাকতেন চিকিৎসক মুজ়াম্মিল আহমেদ— দিল্লির বিস্ফোরণকাণ্ডে অন্যতম অভিযুক্ত। বদ্ধ, স্যাঁতসাঁতে সেই ঘরে প্রায়ই আসর বসত মুজ়াম্মিল ও তাঁর ঘনিষ্ঠদের। ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে চলত গোপন আলোচনা। ওই ঘরে বসেই নাকি বিস্ফোরণের ছক কষেছিলেন তাঁরা! সেই ‘রুম নম্বর ১৩’ই এখন তদন্তকারীদের আতশকাচের নীচে।

দিল্লিকাণ্ডে হরিয়ানার আল-ফালাহ্ বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল চিকিৎসক পড়ুয়ার যোগসূত্র মিলেছে। ফরিদাবাদের ধৌজ গ্রামের ওই মেডিক্যাল কলেজেই কর্মরত ছিলেন ধৃত দুই চিকিৎসক মুজ়াম্মিল এবং শাহীন সিদ্দীকী। পরে তদন্তে জানা যায়, শ্রীনগরে জইশ-ই-মহম্মদের সমর্থনে পোস্টার সাঁটানোর অভিযোগে ধৃত আদিল মাজ়িদ রাথরের সঙ্গেও যোগ ছিল আল-ফালাহ্‌ মেডিক্যাল কলেজের। এমনকি, ‘ঘাতক’ গাড়ির চালক উমর উন-নবিও সম্ভবত ওই হাসপাতালেই কর্মরত ছিলেন। তাঁদের মধ্যে জুনিয়র ডাক্তার হিসাবে কর্মরত মুজ়াম্মিল থাকতেন ছাত্রাবাসের ১৭ নম্বর ভবনের ১৩ নম্বর ঘরে। তদন্তকারীদের অনুমান, বিস্ফোরণের যাবতীয় পরিকল্পনার কেন্দ্রবিন্দু ছিল ওই ঘরই।

৭০ একর জমির উপর বিস্তৃত আল-ফালাহ্ হরিয়ানা-দিল্লি সীমান্ত থেকে প্রায় ২৭ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। ডাক্তারি পড়ুয়াদের ছাত্রাবাসটি রয়েছে ক্যাম্পাসের ভিতরেই। সেখানেই উমর এবং তাঁর সহযোগীরা গোপনে দেখা করতেন। মুজ়াম্মিলের ঘর থেকে মাত্র কয়েক মিটার দূরেই ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষাগার। তদন্তকারীদের অনুমান, প্রথমে সেখান থেকেই বোমা তৈরির রাসায়নিক পাচারের পরিকল্পনা করেছিলেন অভিযুক্তেরা। উমর এবং শাহীন দু’জনেই বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মী হওয়ায় তাঁরা পরীক্ষাগার থেকে কিছু রাসায়নিক সরিয়েও ফেলেন। তার পর তা পাঠিয়ে দেওয়া হয় ফরিদাবাদের ধৌজ এবং তাগা গ্রামের আলাদা আলাদা দু’টি গোপন ডেরায়। তদন্তের স্বার্থে ছাত্রাবাসের সেই ১৩ নম্বর ঘরটি এখন ‘সিল’ করে দেওয়া হয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, একাধিক বৈদ্যুতিন ডিভাইস এবং পেনড্রাইভ উদ্ধার করা হয়েছে সেখান থেকে।

পুলিশ সূত্রকে উদ্ধৃত করে সংবাদ সংস্থা পিটিআই আরও জানিয়েছে, দিল্লির বিভিন্ন প্রান্তে ধারাবাহিক হামলা চালানোর জন্য কয়েক মাস ধরে মোটা অঙ্কের টাকা জোগাড় করেছিলেন চার চিকিৎসক। প্রায় ২৬ লক্ষ টাকা সংগ্রহ করা হয়েছিল। ওই টাকা যাতে নিরাপদে থাকে, সে জন্য গোটা টাকাটাই হস্তান্তর করা হয়েছিল উমরের কাছে। পরে সেই টাকার একাংশ দিয়ে গুরুগ্রাম, নুহ এবং আশপাশের শহরের বাজার থেকে প্রায় ২৬ কুইন্টাল এনপিকে সার কেনেন অভিযুক্তেরা, যা ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস (আইইডি) তৈরির অন্যতম উপাদান। এ জন্য মোট ৩ লক্ষ টাকা খরচ হয়।

অন্য দিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাব থেকে পাচার হওয়া রাসায়নিকগুলি অল্প পরিমাণে অ্যামোনিয়াম নাইট্রেটকে অক্সিডাইজ়ার বা জারকের সঙ্গে মিশিয়ে বিস্ফোরক তৈরির কাজে ব্যবহৃত হত। যদিও এ সব দাবি উড়িয়ে দিয়েছেন আল-ফালাহ্ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে জানানো হয়েছে, ধৃত চিকিৎসকদের সঙ্গে কাজের বাইরে আর কোনও সম্পর্ক ছিল না বিশ্ববিদ্যালয়ের। বরং ভুল তথ্য ছড়িয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম নষ্টের চেষ্টা চলছে। কোথাও আবার দাবি করা হচ্ছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাবরেটরিতে বিস্ফোরক তৈরি করা হত। এ সব খবর ‘মিথ্যা’ বলে দাবি করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

Delhi Delhi Blast Red Fort Explosion Hostel
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy