Advertisement
E-Paper

রাশিয়া থেকে কতটা তেল কেনে ভারত? আমেরিকা থেকেই বা আমদানি কতটা? ট্রাম্পের হুমকি বাণিজ্যে কী বদল আনতে পারে

ভারত দীর্ঘ দিন ধরেই রাশিয়ান খনিজ তেলের অন্যতম ক্রেতা। তবে আগে রাশিয়া থেকে তারা অনেক কম তেল আমদানি করত। বর্তমানে আমদানির পরিমাণ বেড়েছে।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০১ অগস্ট ২০২৫ ১১:০০
(বাঁ দিকে) ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন (ডান দিকে)। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (পিছনে)।

(বাঁ দিকে) ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন (ডান দিকে)। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (পিছনে)। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

রাশিয়া থেকে ভারতের খনিজ তেল আমদানিতে অসন্তুষ্ট আমেরিকা। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তা নিয়ে হুমকিও দিতে শুরু করেছেন। জানিয়েছেন, রাশিয়া থেকে তেল এবং অস্ত্র আমদানির জন্য ভারতকে ‘জরিমানা’ করা হবে। ভারতীয় এবং রুশ অর্থনীতিকে ‘মৃত’ বলেও কটাক্ষ করেছেন তিনি। কিন্তু আমেরিকা থেকেও খনিজ তেল আমদানি করে থাকে ভারত। রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্য নিয়ে কেন এত ক্ষোভ ট্রাম্পের? মূলত, ভারতের সঙ্গে গত অর্থবর্ষে রাশিয়ার সার্বিক বাণিজ্যের পরিমাণ বেড়ে হয়েছিল ৬.৮ হাজার কোটি ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৬ লক্ষ কোটি টাকা)। তার মধ্যে ভারত থেকে রাশিয়ায় রফতানি করা হয়েছে ৪৯০ কোটি ডলারের (৪২ হাজার কোটি টাকা) পণ্য। রাশিয়া থেকে ভারত আমদানি করেছে ৬.৩ হাজার কোটি ডলারের (৫.৫ লক্ষ কোটি টাকা) পণ্য।

ভারত-রাশিয়া তেল বাণিজ্য

ভারত দীর্ঘ দিন ধরেই রাশিয়ান খনিজ তেলের অন্যতম ক্রেতা। তবে আগে রাশিয়া থেকে তারা অনেক কম তেল আমদানি করত। বর্তমানে আমদানির পরিমাণ বেড়েছে। তেল আমদানিকারী দেশ হিসাবে সারা বিশ্বে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ভারত। এই মোট আমদানির ৩৫ শতাংশই এখন আসে রাশিয়া থেকে। সবচেয়ে বেশি তেল এই দেশ থেকে কিনে থাকে ভারত। আগে খনিজ তেলের জন্য ভারত মূলত নির্ভর করে থাকত সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরশাহির মতো পশ্চিম এশিয়ার দেশগুলির উপর। কয়েক বছর আগে ইউক্রেন আক্রমণ করে রাশিয়া। পূর্ব ইউরোপে শুরু হয় যুদ্ধ। সেই সময় রাশিয়ার উপর আমেরিকা-সহ পশ্চিমি বিশ্বের দেশগুলি একাধিক বিধিনিষেধ আরোপ করেছিল। কিন্তু ভারত পিছিয়ে আসেনি। বিক্রি বাড়াতে রাশিয়া সস্তায় এবং অধিক ছাড়ে তেল বিক্রি শুরু করেছিল। ভারত তখন থেকেই রাশিয়ার তেল আমদানি বাড়িয়ে দেয়। এক ধাক্কায় এক শতাংশ থেকে ৩৫ শতাংশে পৌঁছে যায় ভারতের আমদানির পরিমাণ। এতে নয়াদিল্লির অনেক সাশ্রয় হয়েছে। কিন্তু পশ্চিমি দুনিয়া এই পদক্ষেপকে ভাল চোখে দেখেনি।

ভারত-রাশিয়া অস্ত্র বাণিজ্য

শুধু তেল নয়, রাশিয়া থেকে প্রচুর অস্ত্রও কেনে ভারত। যা ট্রাম্পের মাথাব্যথার অন্যতম কারণ। ভারতে অস্ত্রের সবচেয়ে বড় জোগানদার ভ্লাদিমির পুতিনের দেশ। গত কয়েক বছরে এই আমদানি আরও বেড়েছে। ভারত যুদ্ধবিমান, ট্যাঙ্ক এবং একাধিক শক্তিশালী ক্ষেপণাস্ত্র আমদানি করেছে রাশিয়া থেকে। অস্ত্র আমদানিতে সারা বিশ্বে দ্বিতীয় ভারত। তবে সাম্প্রতিক অতীতে অস্ত্রের বিষয়ে রাশিয়ার উপর নয়াদিল্লির নির্ভরশীলতা কিছুটা কমেছে। বরং আমেরিকা এবং ইউরোপীয় দেশগুলি থেকে অস্ত্র কেনা বাড়িয়েছে ভারত। গত পাঁচ বছরে অস্ত্র নিয়ে রাশিয়ার সঙ্গে তেমন বড় কোনও চুক্তি নয়াদিল্লি করেনি।

আমেরিকার অসন্তোষ কেন

ভারতের সঙ্গে রাশিয়ার ঘনিষ্ঠতা নিঃসন্দেহে আমেরিকার বড় অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় আমেরিকার অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী চিন। ভারতের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়িয়ে চিনকে দমিয়ে রাখার কৌশল নিয়েছিল ওয়াশিংটন। কিন্তু সম্প্রতি ভারতের সঙ্গে রাশিয়ার ঘনিষ্ঠতা বৃদ্ধি পাওয়ায় সেই পরিকল্পনা ভেস্তে যাওয়ার মুখে। গত অক্টোবরে রাশিয়া সফরে গিয়েছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। চলতি বছরের শেষে পুতিনের এ দেশে আসার কথা। এই পরিস্থিতিতে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় বিকল্প হিসাবে পাকিস্তানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বৃদ্ধির চেষ্টা চালাচ্ছে আমেরিকা। সম্প্রতি তাদের সঙ্গে একটি বড়সড় জ্বালানি চুক্তি স্বাক্ষর করেছেন ট্রাম্প। কটাক্ষের সুরে বলেছেন, অদূর ভবিষ্যতে কখনও হয়তো পাকিস্তান তেল বিক্রি করবে ভারতে। যদিও তা নিয়ে এখনই নয়াদিল্লির চিন্তার কারণ নেই। কারণ, পাকিস্তানের খনিজ তেলের ভান্ডার সম্পূর্ণ ভাবে অন্য দেশের উপর নির্ভরশীল। ভারতের পণ্যের উপর ২৫ শতাংশ শুল্ক ঘোষণা করেছেন ট্রাম্প। সঙ্গে বাড়তি ‘জরিমানা’র হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। জরিমানার অঙ্ক নির্দিষ্ট করেননি। এই পরিস্থিতিতে ভারত তাদের অবস্থান স্পষ্ট করে জানিয়েছে, জাতীয় স্বার্থ সুরক্ষিত করার জন্য সব ধরনের পদক্ষেপ করা হবে।

India Russia Trade India US Trade Crude Oil Narendra Modi Vladimir Putin Donald Trump
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy