Advertisement
E-Paper

শনিবারের দু’ঘণ্টা: মিসাইল আর ড্রোনের ধুন্ধুমারের মধ্যেই ফোনের পর ফোন! কোন কোন দেশ ভূমিকা নিল যুদ্ধবিরতিতে

গত চার দিনে ভারত এবং পাকিস্তানের সম্পর্কের অবনতি হয়েছে ক্রমাগত। দুই ‘চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী’র মধ্যে কী ভাবে সম্ভব হল সমঝোতা? অনুঘটক হয়ে উঠলেন কারা? কী হল শেষ দু’ঘণ্টায়?

(নীচে বাঁ দিকে) ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ় শরিফ (নীচে ডান দিকে)। (উপরে বাঁ দিক থেকে) পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনির, আমেরিকার ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভান্স, ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এবং মার্কিন বিদেশসচিব মার্কো রুবিয়ো।

(নীচে বাঁ দিকে) ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ় শরিফ (নীচে ডান দিকে)। (উপরে বাঁ দিক থেকে) পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনির, আমেরিকার ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভান্স, ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এবং মার্কিন বিদেশসচিব মার্কো রুবিয়ো। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১১ মে ২০২৫ ১৪:৩৩
Share
Save

চার দিনের টানা সংঘাতের পর অবশেষে যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছে ভারত এবং পাকিস্তান। শনিবার বিকেল ৫টা থেকে শুরু হয়েছে সংঘর্ষবিরতি। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিকেলে সমাজমাধ্যমে পোস্ট করে সে কথা প্রথম জানান। তার পর ভারতের বিদেশ মন্ত্রকও বিবৃতি দিয়ে সংঘর্ষবিরতির কথা ঘোষণা করে। দুই দেশের এই বোঝাপড়ায় আমেরিকা-সহ একাধিক দেশের হাত ছিল বলে খবর। তবে প্রথম ঘোষণা করে সংঘর্ষবিরতির অধিকাংশ কৃতিত্বই নিয়ে নেন ট্রাম্প। রাতে অবশ্য পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আবার চুক্তির শর্ত লঙ্ঘনের অভিযোগ করে ভারত। জম্মু-কাশ্মীর-সহ সীমান্তবর্তী একাধিক এলাকায় গোলাবর্ষণ করে পাক সেনা। যদিও সংঘর্ষবিরতির পর রবিবার সকাল থেকে পরিস্থিতি মোটের উপর ‘শান্ত’। রাতে নতুন করে আর কোথাও বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়নি, হয়নি নতুন কোনও ড্রোন হামলা।

কিন্তু ভারত এবং পাকিস্তান, দুই ‘চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী’র মধ্যে কী ভাবে সম্ভব হল এই সমঝোতা? গত চার দিনে দুই দেশের সম্পর্কের অবনতি হয়েছে ক্রমাগত। হামলা-পাল্টা হামলায় বিধ্বস্ত হয়েছে সীমান্তের এ পার, ও পার। পরিস্থিতি একেবারে হাতের বাইরে বেরিয়ে যাওয়ার আগে কী ভাবে ‘রাশ’ টানলেন ট্রাম্প? আর কারা এতে সক্রিয় ভূমিকা নিলেন? ভারত-পাক সমঝোতায় অন্যতম প্রধান ভূমিকা যে আমেরিকারই, তা একপ্রকার স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। সেই আমেরিকার সংবাদমাধ্যম সিএনএন দাবি করেছে, শনিবারের দু’ঘণ্টাই ভারত-পাক সংঘর্ষবিরতির মূলে রয়েছে।

নাছোড়বান্দা ভারত-পাক

পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার পর প্রথম থেকেই সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে বার্তা দিয়ে আসছিলেন ট্রাম্প। তবে তিনি কোনও পক্ষ নেননি। ভারত এবং পাকিস্তানকে বার বার উত্তেজনা প্রশমন এবং কূটনীতির পথে আলোচনায় বসতে বলছিল আমেরিকা। যদিও তাতে খুব একটা লাভ হয়নি। ভারত নিজের অবস্থানে অটল ছিল। ভারতের বক্তব্য, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই জারি থাকবে। পাকিস্তানে কেবল জঙ্গি ঘাঁটি ধ্বংস করা হচ্ছে, সাধারণ মানুষের যাতে ক্ষতি না-হয়, তার জন্য যথাসম্ভব চেষ্টা করে জবাব দেওয়া হচ্ছে। পাকিস্তান প্রথম থেকেই পহেলগাঁও কাণ্ডের সঙ্গে যোগ অস্বীকার করে এসেছে। তারা নিরপেক্ষ আন্তর্জাতিক তদন্তের দাবি জানিয়েছে বরাবর। তাদের বক্তব্য ছিল, ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’-এ সাধারণ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। ধর্মীয় স্থানে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। দেশের সার্বভৌমত্ব বজায় রাখতে তারা প্রত্যাঘাত করেছে।

কূটনীতির ভাবনা

মার্কিন সংবাদমাধ্যমের দাবি, গত কয়েক দিন ধরে টানা আঘাত-প্রত্যাঘাতের পর শুক্রবার রাতে আলোচনার পথে হাঁটার ভাবনাচিন্তা করছিল পাকিস্তান। মার্কিন বিদেশসচিব মার্কো রুবিয়োর সঙ্গে পাক কর্তৃপক্ষের সেইমতোই কথা হয়েছিল। সব ঠিক থাকলে শনিবার সকালেই দুই দেশ আলোচনার টেবিলে বসতে পারত। কিন্তু ওই দিন ভোরে ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র এসে পড়ে পাকিস্তানের একাধিক বায়ুসেনা ঘাঁটিতে। তার পর খুব দ্রুত পরিস্থিতির অবনতি হয়।

শেষ দু’ঘণ্টা

সিএনএন জানিয়েছে, ভারতের মিসাইল হানার পর প্রত্যাঘাত করতে শুরু করে পাকিস্তান। কূটনৈতিক আলোচনার ভাবনা তলিয়ে যায় অথৈ জলে। ভোর থেকে পর পর মিসাইল, ড্রোন হামলায় ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হয় পুঞ্চ, রাজৌরী, পঠানকোটের মতো সীমান্তবর্তী এলাকায়। বাজতে থাকে সাইরেন। পাল্টা ভারত থেকেও পাকিস্তানের দিকে গোলাবর্ষণ করা হয়। দুই পরমাণু শক্তিধর দেশকে শান্ত করতে এর পরেই আসরে নামে আমেরিকা। রুবিয়ো কথা বলেন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনিরের সঙ্গে। তার পরেই ফোন করেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করকে। সিএনএন-এর বক্তব্য, শেষ দু’ঘণ্টাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভান্স, রুবিয়ো এবং ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনা করে সরাসরি ফোন করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে। জানান, দুই দেশের মধ্যে সরাসরি আলোচনা হওয়া প্রয়োজন। এর পরেই দুই দেশের ডিরেক্টর জেনারেল অফ মিলিটারি অপারেশনের (ডিজিএমও) ফোনে কথা হয়। সিদ্ধান্ত হয় সমঝোতার। যা হওয়ার শেষ দু’ঘণ্টাতেই হয়েছে, দাবি মার্কিন সংবাদমাধ্যমের।

নেপথ্যে কারা

পাকিস্তানের মন্ত্রী দাবি করেছেন, ভারত এবং পাকিস্তানের এই সমঝোতার নেপথ্যে তিন ডজন দেশের সক্রিয় ভূমিকা ছিল। সূত্রের খবর, আমেরিকা ছাড়াও সেই তালিকায় রয়েছে সৌদি আরব, তুরস্ক, ইরান, চিন, রাশিয়া, ইটালি, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি, কাতারের মতো দেশ। রাশিয়ার বিদেশমন্ত্রী কিছু দিন আগেই ফোন করে দুই দেশকে সমঝোতার বার্তা দিয়েছিলেন। পাকিস্তানে কথা বলেছিলেন চিনের বিদেশমন্ত্রীও। পরে তাঁর সঙ্গে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালেরও কথা হয়। সৌদির বিদেশ দফতরের মন্ত্রী কোনও পরিকল্পিত সূচি ছাড়াই ভারতে চলে এসেছিলেন। জয়শঙ্করের সঙ্গে দেখা করে তিনি চলে যান পাকিস্তানে। ফোন আসে সংযুক্ত আরব আমিরশাহি এবং কাতার থেকে। ইটালির বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গেও জয়শঙ্করের কথা হয়েছিল সম্প্রতি। পহেলগাঁও হামলার পরপরই ইরানের প্রেসিডেন্ট ফোন করে মোদী এবং শরিফের সঙ্গে কথা বলেছিলেন। সব দেশের উৎসাহ, শান্তির বার্তা ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে এই সমঝোতা সম্ভব করেছে।

India Pakistan India Pakistan Tension ceasefire US

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে আপনার সাবস্ক্রিপশন আপনাআপনি রিনিউ হয়ে যাবে

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।