Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Narenrda Modi

BJP: ভিন্নমত হলেই নেমে আসবে খাঁড়া, জাতীয় কর্মসমিতির তালিকায় বুঝিয়ে দিলেন মোদী-শাহ

মূলত উত্তরপ্রদেশের নির্বাচনের কথা মাথায় রেখেই তৈরি করা হয়েছে জাতীয় কর্মসমিতির তালিকা। এই তালিকায় ১৩ জন সদস্য রয়েছেন কেবল উত্তরপ্রদেশ থেকে।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৯ অক্টোবর ২০২১ ০৮:০৪
Share: Save:

দলের বিরুদ্ধে মুখ খুললেই খাঁড়া যে নেমে আসবে, তা গত কালের জাতীয় কর্মসমিতির তালিকার মাধ্যমে বুঝিয়ে দিলেন নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহ।

লখিমপুর কাণ্ডে দল যখন বিড়ম্বনায় সেই সময়ে উত্তরপ্রদেশের যোগী আদিত্যনাথ সরকারের সমালোচনা করে দলকে আরও অস্বস্তিতে ফেলার জন্য বরুণ গাঁধীকে ব্রাত্য করার সিদ্ধান্ত নেন বিজেপি নেতৃত্ব। বাদ যান তাঁর মা মানেকা গাঁধীও। তেমনি হরিয়ানার সাংসদ রাও ইন্দ্রজিৎ সিংহ ও চৌধরি বীরেন্দ্র সিংহ প্রকাশ্যে বেশ কয়েকবার সরকারের কৃষি নীতির সমালোচনা করায় দলের কোপে পড়েছেন। বাদ পড়েছেন দলের অন্দরে মোদী-শাহের বিরোধী বলে পরিচিত বসুন্ধরা রাজের ছেলে দুষ্মন্ত সিংহ। সব মিলিয়ে গত কালের তালিকা জে পি নড্ডার নামে প্রকাশিত হলেও, রাজনীতিক বিশ্লেষকদের একাংশের মতে, যাঁরাই দলে সরকারের দুই শীর্ষ নেতার বিরোধী বলে পরিচিত, তাঁরাই স্থান পাননি নতুন কর্মসমিতিতে। তাঁদের বেছে বেছে বাদ দেওয়া হয়েছে। ওই তালিকায় স্থান হয়নি একদা সুষমা স্বরাজ ঘনিষ্ঠ সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়ারও।

বিজেপি সূত্রের খবর, মূলত উত্তরপ্রদেশের নির্বাচনের কথা মাথায় রেখেই ওই তালিকা তৈরি করা হয়েছে। নতুন কর্মসমিতির তালিকায় ১৩ জন সদস্য রয়েছেন কেবল উত্তরপ্রদেশ থেকেই। সব মিলিয়ে উত্তরপ্রদেশের প্রতিনিধিদের সংখ্যাটি প্রায় ৪০-এর কাছাকাছি। কিন্তু তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে ওই তালিকায় এমন কিছু নাম নেই, যা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে পদ্মশিবিরের অভ্যন্তরেই। এক সময়ে বিজেপির রাম মন্দির আন্দোলনের অন্যতম মুখ ছিলেন বিনয় কাটিয়ার। কিন্তু মোদী-শাহের সঙ্গে ‘মধুর’ সম্পর্কের জেরে এ বারে তিনিও ব্রাত্য। নাম কাটা গিয়েছে প্রয়াত কল্যাণ সিংহের (যাঁর মুখ্যমন্ত্রিত্বকালে বাবরি মসজিদ ভাঙা হয়েছিল) ছেলে রাজবীর সিংহের। রাম মন্দির আন্দোলনের সঙ্গে জড়িতদের এ ভাবে গুরুত্বহীন করে দেওয়া নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে দলে। যদিও বিজেপির একাংশের দাবি, আন্দোলনের দিন পেরিয়ে রাম মন্দির নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। তাই বিনয় কাটিয়ারও দলে গুরুত্ব হারিয়েছেন। তা ছাড়া, উত্তরপ্রদেশের মানুষ ভাল করেই জানেন মোদী প্রধানমন্ত্রী না থাকলে রাম মন্দির নির্মাণ শুরু হত না।

মন্ত্রকের কাজ নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় বাদ পড়েছেন প্রহ্লাদ সিংহ পটেল। প্রথমে মন্ত্রিত্ব থেকে বাদ পড়ার পরে এ বার জাতীয় কর্মসমিতি থেকে নাম কাটা গিয়েছে অরুণ জেটলি ঘনিষ্ঠ সুরেশ প্রভুর। বাদ পড়েছেন প্রবীণ নেতা লালকৃষ্ণ আডবাণীর ঘনিষ্ঠ বর্ষীয়ান নেতা সি পি ঠাকুর, বিজয় গয়ালের মতো প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের। নাম কাটা গিয়েছে আডবাণী-ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত দিল্লির প্রাক্তন মেয়র আরতি মেহরার। বয়স্ক নেতাদের বসিয়ে দেওয়ার পিছনে দলের এক নেতার দাবি, যাঁরা বয়সের কারণে বসে গিয়েছেন, তাঁদের বদলে নতুন মুখকে জায়গা দেওয়া হয়েছে। তা ছাড়া, দলের পরিধি বেড়েছে। দেশের সব রাজ্যের প্রতিনিধিদের স্থান করে দিতেই পুরনো অনেক নেতাকে বাধ্য হয়ে সরানো হয়েছে। দলের লক্ষ্যই হল কমবয়সি নেতাদের প্রাধান্য দেওয়া। যাঁরা ভাল কাজ করেছেন, দলের আদর্শের প্রতি নিষ্ঠাবান, তাঁরাই গুরুত্ব পেয়েছেন। দলের সংবিধান অনুযায়ী, তিন মাস অন্তর বিজেপির কর্মসমিতির বৈঠক হওয়ার কথা। অতীতে বাজপেয়ী-আডবাণীর সময়ে সেই নিয়ম কঠোর ভাবে মানা হত। মূলত সেই সময়ে ভোটমুখী রাজ্যগুলিতেই কর্মসমিতির বৈঠক বসত। কিন্তু শাহ দলের সভাপতি হওয়ার পর থেকে মূলত দিল্লিতেই কর্মসমিতির বৈঠক হওয়া শুরু হয়। সূত্রের মতে, প্রায় দু’বছরের মাথায় ৭ নভেম্বর ফের যে কর্মসমিতির বৈঠকটি হতে চলেছে। বসবে সেই দিল্লিতে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Narenrda Modi Amit Shah BJP
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE