Advertisement
E-Paper

ওজন কমেছে ৩০০ কেজি! মানছে না পরিবার

কেমন আছেন ইমান আহমেদ? চিকিৎসকেরা বলছেন, ওজন কমেছে প্রায় তিনশো কেজি। নানাবিধ শারীরিক জটিলতা কমায় ক্রমশ সুস্থ হয়ে উঠছেন রোগী। অথচ পরিবারের দাবি, তেমন কিছুই হয়নি।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২৭ এপ্রিল ২০১৭ ০৩:৫৩
রূপান্তর:  ইমান আহমেদ। অস্ত্রোপচারের আগে  (বাঁ দিকে) ও পরে।

রূপান্তর: ইমান আহমেদ। অস্ত্রোপচারের আগে (বাঁ দিকে) ও পরে।

কেমন আছেন ইমান আহমেদ?

চিকিৎসকেরা বলছেন, ওজন কমেছে প্রায় তিনশো কেজি। নানাবিধ শারীরিক জটিলতা কমায় ক্রমশ সুস্থ হয়ে উঠছেন রোগী। অথচ পরিবারের দাবি, তেমন কিছুই হয়নি।

মিশরের বাসিন্দা এই ইমান। পৃথিবীর সব চেয়ে স্থূলকায়া মহিলা বলে খ্যাত ছিলেন। বয়স ৩৬। ওজন ছিল ৫০৪ কিলোগ্রাম। অতিরিক্ত বেশি ওজন ছাড়া আরও অনেক রোগে আক্রান্ত। পায়ের গঠনে বিকৃতি রয়েছে বলে কোনও দিন ভাল করে হাঁটতেই পারেননি। আর ১১ বছর বয়সে স্ট্রোক হওয়ার পর থেকে সম্পূর্ণ শয্যাশায়ী।

গত বছর ডিসেম্বরের কথা। ভারতে চিকিৎসা করতে আসার জন্য ভিসা না পেয়ে বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের সঙ্গে যোগাযোগ করেন ইমানের বোন সাইমা সেলিম। সুষমার হস্তক্ষেপে ভিসা পান ইমান ও তাঁর আত্মীয়েরা। ইমানের চিকিৎসার দায়িত্ব নেয় মুম্বইয়ের সইফি হাসপাতাল। গত ফেব্রুয়ারিতে মিশর থেকে বিশেষ বিমানে করে নিয়ে আসা হয় ইমানকে। হাসপাতালের একতলার অনেকটা জুড়ে ইমানের চিকিৎসার ও তাঁর আত্মীয়দের থাকার ব্যবস্থা করা হয়।

ইমানের চিকিৎসার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল ১২ জনের এক চিকিৎসক দলকে। যার নেতৃত্বে নামজাদা বেরিয়াট্রিক সার্জেন মুফজল লকড়াওয়ালা। ১১ এপ্রিল অস্ত্রোপচার হয় ইমানের। অস্ত্রোপচারের পরে হাসপাতাল থেকেই একটি ভিডিও প্রকাশ করে দেখানো হয়, কী ভাবে সেরে উঠছেন ইমান। বহু বছর পরে উঠিয়ে বসানোও হয় ইমানকে।

আরও পড়ুন: আরও ভাল বাইক চাই, বিয়ে ভাঙলেন কনে

কিন্তু কয়েক দিন আগেই ইমানের বোন সাইমা সেলিম দাবি করেন, সইফি হাসপাতালের চিকিৎসকরা মিথ্যে কথা বলছেন। মুফজল লকড়াওয়ালার দিকে সরাসরি আঙুল তুলে সাইমা বলেন, ‘‘চিকিৎসকদের সমস্ত দাবি মিথ্যে। অনেক আশা করে ইমানকে ভারতে নিয়ে এসেছিলাম। কিন্তু কিছুই হলো না দেখছি।’’ এই অবস্থায় ইমানকে তাঁরা কোনও মতেই মিশরে ফেরত নিয়ে যাবেন না বলেও জানিয়ে দিয়েছেন সাইমা।

সাইমার অভিযোগ সম্পূর্ণ উড়িয়ে দিয়েছেন চিকিৎসকেরা। হাসপাতালের চিফ অপারেটিং অফিসার (সিওও) হুসেফা শোহাবি জানিয়েছে, অস্ত্রোপচারের পরে ইমানের ওজন প্রায় ৩০০ কিলোগ্রাম কমেছে। সম্প্রতি তাঁর মস্তিষ্কের সিটি স্ক্যানও হয়েছে। সিটি স্ক্যান যন্ত্রে ২১৪ কিলোগ্রামের বেশি ওজন চাপানো যায় না। ফলে ইমানের ওজন যে কমে দু’শো কেজির কাছাকাছি চলে এসেছে, তা সহজেই বোঝা যাচ্ছে বলে দাবি হাসপাতাল সূত্রের। ইমানের চিকিৎসার দায়িত্বে থাকা এক শল্যবিদ অপর্ণা ভাস্কর সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, ‘‘মনে হয় ইমানের পরিবার ওঁকে এত তাড়াতাড়ি মুম্বই থেকে নিয়ে যেতে চাইছেন না। কারণ এখানে ইমানকে যে পরিমাণ যত্নে রাখা হচ্ছে, তার কিছুই মিশরে সম্ভব নয়।’’ ইমানের পরিবারের অভিযোগে ক্ষুব্ধ চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, নিজে থেকে তাঁরা আর ইমানকে দেখতে যাবেন না। ইমান বা তাঁর পরিবারের কেউ ডাকলে তবেই যাবেন। ইমানকে মিশর থেকে নিয়ে আসা এবং এখানকার চিকিৎসায় ইতিমধ্যেই তাদের দু’কোটি টাকা খরচ হয়ে গিয়েছে বলে জানিয়েছে সইফি হাসপাতাল।

এত টানাপড়েন সত্ত্বেও এখনই হাল ছাড়তে রাজি নন লকড়াওয়ালা। ইমানের ওজন একশো কেজির নীচে নামিয়ে অতিরিক্ত স্থূলকায়দের আশার আলো দেখাতে এবং বেরিয়াট্রিক সাজার্রির ইতিহাসে এক অনন্য নজির গড়তে বদ্ধপরিকর তিনি।

Weight Loss Iman Ahmed
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy