দু’দিন ধরে তটস্থ নাগপুর পুলিশ। শহরের বিভিন্ন জায়গায় চলছে টহলদারি ও নজরদারি। কারণ, যে কোনও সময় যে কোনওখানে হামলা হতে পারে! কারণ? নাগপুরের কুখ্যাত গুন্ডাদল খোঁজ করছে এক ‘গদ্দারের।’ অভিযোগ, সর্দারের স্ত্রীর সঙ্গে গোপনে প্রেম করত সে। তার পর বেড়াতে নিয়ে গিয়ে বসে্র স্ত্রীকে মেরে ফেলেছে। অন্য দিকে, প্রাণের ভয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছে সেই যুবক।
নাগপুর পুলিশ সূত্রে খবর, বেশ কিছু দিন ধরে নতুন করে ‘ইপ্পা গ্যাং’-এর উৎপাত শুরু হয়েছে। মাঝেমধ্যেই এলাকায় গুন্ডামিতে নাম জড়ায় ওই দলের। তবে এ বার দলের সদস্যেরা হন্যে হয়ে খুঁজছে তাদেরই এক সদস্যকে। তার নাম আরশাদ টোপী। হাতে পেলেই আরশাদকে খুন করার নির্দেশ রয়েছে তাদের।
গত বৃহস্পতিবার এক যুবতীকে বাইকের পিছনের আসনে বসিয়ে ঘুরতে বেরিয়েছিল আরশাদ। বাইকটির সঙ্গে একটি পে লোডারের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। জখম হয় বাইকচালক আরশাদ। কিন্তু সঙ্গিনীর মৃত্যু হয়। তার পরেই জানা যায়, যে যুবতীকে নিয়ে আরশাদ বেরিয়েছিল, তিনি আদতে দলের সর্দারের স্ত্রী। এই তথ্য ফাঁস হতেই হুলস্থুল পড়ে যায় দলের অন্দরে। আরশাদকে ‘গদ্দার’ ঠাউরে তার খোঁজ শুরু করেছে দল। তারা মনে করছে, ‘বস্’কে লুকিয়ে তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে প্রেম করত আরশাদ। এখন বসে্র স্ত্রীকে খুন করে পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেছে সে।
পে লোডারের সঙ্গে সংঘর্ষে আরশাদ অল্প আঘাত পান। কিন্তু রক্তাক্ত হন বাইকের পিছনের আসনে বসা যুবতী। ঘটনাস্থলে ছিল কোরাদি বিদ্যুৎ দফতরের একটি গাড়ি। বিদ্যুৎকর্মীরা দু’জনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু ওই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ যুবতীর শারীরিক পরিস্থিতি দেখে ভর্তি নেননি। যুবতীকে আরও একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেও ‘না’ বলে দেওয়া হয়।
পুলিশ সূত্রে খবর, আরশাদ তখন একটি অ্যাম্বুল্যান্স ভাড়া করে যুবতীকে নাগপুরের সরকারি মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যান। শুক্রবার সকালে তাঁর মৃত্যু হয়। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছে, ওই রক্তাক্ত হওয়া যুবতীকে নিয়ে আরশাদের হাসপাতালে ঢোকার দৃশ্য।
আরও পড়ুন:
এর মধ্যে পুরো ঘটনার কথা চাউর হতেই ‘ইপ্পা গ্যাং’-এর অন্দরে তোলপাড় পড়ে গিয়েছে। তারা চায়, ‘গদ্দার’ আরশাদকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দিতে। দলের প্রায় ৪০ গুন্ডা শহর তন্ন তন্ন করে ফেলছে। অন্য দিকে, বিপদের গন্ধ পেয়ে সোজা ডিসিপি-র দ্বারস্থ হয়েছে আরশাদ। শুক্রবার রাতে পুরো ঘটনার কথা জানিয়ে পুলিশের সাহায্য চায় সে। ডিসিপি আরশাদকে কোরাদি থানায় পাঠান। সেখানে বয়ান রেকর্ড হয় যুবকের।
প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ মনে করছে, পথদুর্ঘটনাতেই মারা গিয়েছেন আরশাদের সর্দারের স্ত্রী। খুন হননি। কিন্তু সর্দার বা দল কি আর ও সব বোঝে! আরশাদ আপাতত গা-ঢাকা দিয়েছে। পুলিশ ওই গুন্ডাবাহিনীকে নিয়ে সতর্ক থাকছে।