Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
antibiotics

প্রশ্ন উঠছে শিল্পমহলে, কাঁচামালে চিনের ‘কারসাজি’! দাম বাড়ছে ওষুধের

ভারতে ওষুধের দাম বৃদ্ধি নিয়ে এই সঙ্কটের পিছনে চিনের কারসাজি রয়েছে কি না, তা নিয়ে শিল্পমহলে প্রশ্ন উঠেছে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২১ মার্চ ২০২১ ০৫:৫৬
Share: Save:

এপ্রিল মাস থেকে রোজকার প্রয়োজনের ওষুধের দাম সামান্য হলেও বাড়বে। এর ফলে এখনকার চেয়ে কিছুটা বেশি দামে কিনতে হবে ব্যথা, সংক্রমণ, হৃদ্‌রোগের ওষুধ ও অ্যান্টিবায়োটিক। পাইকারি মূল্যবৃদ্ধির সূচকে ০.৫ শতাংশ পরিবর্তন হয়েছে বলে কেন্দ্রীয় সরকারের ওষুধের দাম নিয়ন্ত্রক সংস্থা এর অনুমতি দিয়েছে। কিন্তু চিন থেকে আমদানি করা ওষুধের কাঁচামালের দাম মাত্রাছাড়া হচ্ছে বলে ওষুধ সংস্থাগুলি এতে খুশি নয়। তাদের দাবি, ওষুধের দাম অন্তত ২০ শতাংশ বাড়াতে দেওয়া হোক।

ভারতে ওষুধের দাম বৃদ্ধি নিয়ে এই সঙ্কটের পিছনে চিনের কারসাজি রয়েছে কি না, তা নিয়ে শিল্পমহলে প্রশ্ন উঠেছে। ওষুধ সংস্থাগুলি মনে করছে, চিন থেকে যে সব ওষুধ তৈরির কাঁচামাল ভারততে আমদানি করতে হয়, চিন সে সবের দাম বাড়াচ্ছে। ফলে এ দেশে প্যারাসিটামলের মতো রোজকার প্রয়োজনের ওষুধ তৈরির খরচও বেড়ে যাচ্ছে। উল্টোদিকে, ভারত যে সব ওষুধ তৈরির কাঁচামাল বিদেশে রফতানি করে, চিন সে সবের কাঁচামালের দাম কমিয়ে দিচ্ছে। যাতে ভারতের ওষুধ সংস্থাগুলি প্রতিযোগিতায় এঁটে উঠতে না পারে।

কোভিড পরিস্থিতি থেকে শিক্ষা নিয়ে নরেন্দ্র মোদী সরকার ওষুধের কাঁচামাল তৈরিতে স্বনির্ভর হতে ওষুধ শিল্পকে উৎসাহ ভাতা দেওয়ার নীতি ঘোষণা করেছে। এখন হৃদ্‌রোগ, ডায়াবিটিস, অ্যান্টিবায়োটিকস, অ্যান্টি-ইনফেকটিভস, ভিটামিনের কাঁচামাল চিন থেকেই আসে। ওষুধের মূল উপকরণের ৮০ থেকে ৯০ শতাংশই আসে চিন থেকে। মোদী সরকারের এই নীতি সফল হলে চিনের ব্যবসা কমে যাবে। কারণ প্যারাসিটামলের মতো রোজকার প্রয়োজনের ওষুধের মূল উপকরণ বা এপিআই-এর জন্য ভারত চিনের উপর নির্ভরশীল। ভারত এপিআই তৈরি শুরু করলে চিন-নির্ভরতা কমবে, এমনকি তা অন্য দেশেও রফতানি হবে। ফলে সে দিক থেকেও চিনের ব্যবসা মার খেতে পারে। সেই কারণেই চিন আগেভাগে ভারতীয় সংস্থাগুলিকে বিপাকে ফেলার চেষ্টা করছে কি না, সেই প্রশ্ন উঠেছে।

সরকারি সূত্রের দাবি, প্রতি বছরই পাইকারি মূল্যবৃদ্ধির সূচক খতিয়ে দেখে ওষুধ সংস্থাগুলি সেই মতো দাম বাড়ানোর অনুমতি দেওয়া হয়। ২০২০-তে পাইকারি মূল্যবৃদ্ধির সূচকে ০.৫ শতাংশর মতো পরিবর্তন হয়েছে। ওষুধের দাম নিয়ন্ত্রক সংস্থা (ন্যাশনাল ফার্মাসিউটিক্যালস প্রাইসিং অথরিটি) সেই অনুযায়ীই দাম বৃদ্ধির ছাড়পত্র দিয়েছে। কিন্তু ওষুধ সংস্থাগুলির ওষুধ তৈরির খরচ যে অনেকখানিই বেড়ে গিয়েছে, তা-ও মানছেন সরকারের কর্তা-ব্যক্তিরা।

এর পিছনে চিন থেকে আসা কাঁচামালের দাম বেড়ে যাওয়াই প্রধান কারণ বলে শিল্পমহলের মত।

ওষুধ তৈরিতে মূলত দু’টি উপকরণ কাজে লাগে। এক, এপিআই বা অ্যাক্টিভ ফার্মাসিউটিক্যাল ইনগ্রেডিয়েন্টস। এতেই রোগ নিরাময় হয়। দুই, সিএই বা কেমিক্যালি অ্যাক্টিভ এক্সসিপিয়েন্টস। এর কাজ হল এপিআই-কে রোগীর শরীরে পৌঁছে দেওয়া। এবার গত নভেম্বর থেকেই এপিআই-এর দাম অস্বাভাবিক ভাবে বাড়ছে। প্যারাসিটামলের দাম বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। গত বছর মার্চ-এপ্রিলে কোভিডের ধাক্কায় চিনের বহু সংস্থায় কাজকর্ম বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এই রকম অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধি দেখা গিয়েছিল। কিন্তু এখন চিনের কিছু ক্ষেত্রে দাম বৃদ্ধি, কিছু ক্ষেত্রে দাম কমানোর কোনও আপাত ব্যাখ্যা মিলছে না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

India China Price Hike antibiotics medicines
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE