অসময়ে বেআইনি ভাবে ধরা হচ্ছে ইলিশ। এর জন্য কড়া নিয়ম তৈরি করার কথা ছিল সরকারের। কিন্তু তা এখনও হয়নি। এ বার ইলিশ বাঁচাতে এগিয়ে এলেন ভারত ও বাংলাদেশের মৎস্যজীবীরা।
ইলিশের সঙ্গে যুক্ত এই দু’দেশের মৎস্যজীবীরা যৌথ প্রয়াসে ইলিশ বাঁচানোর উপর জোর দিচ্ছেন। ইন্টারন্যাশনাল ওয়াটার অ্যাসোসিয়েশন বা আন্তর্জাতিক জল সংগঠন ইলিশ বাঁচানোর তাগিদে দু’দেশের মৎস্যজীবীদের নিয়ে এরকম প্রয়াস নিয়েছে।
ইতিমধ্যে এ রাজ্যের কয়েকজন মৎস্যজীবী ঘুরে এসেছেন বাংলাদেশ থেকে। ইউনাইডেট ফিশারমেন অ্যাসোসিয়েশনে কাকদ্বীপের দুই নেতা বিজন মাইতি এবং সতীনাথ পাত্ররাও ছিলেন সেই দলে। তাঁরা বলেন, ‘‘ইলিশ সংরক্ষণ নিয়ে বাংলাদেশের সরকারি পদক্ষেপ প্রশংসার যোগ্য। বেআইনি মাছ শিকারে জেল-জরিমানা, ট্রলারের রেজিস্ট্রেশন বাতিল করা, বেআইনি জাল পুড়িয়ে দেওয়ার মতো নিয়মকানুন আমাদের এখানেও চালু করা উচিত।’’
মৎস্যজীবীরা জানান, বাংলাদেশের ইলিশ সংরক্ষণে তাঁরা নিজেদের এলাকায় প্রচার করছেন।
তবে ইলিশ বাঁচাতে মৎস্যজীবীদের আলাদা করে প্রকল্প তৈরি করতে হচ্ছে কেন? বাংলাদেশ এত কিছু করতে পারলে ভারত কেন কড়া পদক্ষেপ নিতে পারবে না? এ বিষয়ে মৎস্যমন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ বলেন, ‘‘বিষয়গুলি নিয়ে আমরাও চিন্তাভাবনা করছি। তবে তাতে কিছুটা সময় লাগবে।’’
আরও খবর
ভাঁড়ার খালির হিড়িক সাবেক, নেট বাজারে
কী কী করা হবে মৎস্যজীবীদের এই প্রকল্পে?
মৎস্যজীবীরা জানান, ইলিশ সংরক্ষণে ভারতের কিছু ভাল আইন আছে যা বাংলাদেশে নেই। আবার বাংলাদেশের কিছু ভাল আইন আছে যা ভারতে নেই। এই আইনগুলি বলবৎ করতে হবে। কড়া আইন চালু না করলে অসময়ে ইলিশ ধরা বন্ধ হবে না। তা ছাড়া দু’দেশের মৎস্যজীবীর মধ্যে আরও সচেতনতা তৈরি করার মতো বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। আন্তর্জাতিক জল সংগঠনে ভারতের প্রতিনিধি হিসেবে রয়েছেন যাদবপুরের গবেষক সৌরভকুমার দুবে। তিনিই দু’দেশের সমন্বয়ের বিষয়টি দেখছেন। তিনি জানান, ভারতে বৈশাখ-জৈষ্ঠ এবং বাংলাদেশে চৈত্র-বৈশাখ সামুদ্রিক মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। মৎস্যজীবীরা চান, এই নিষেধাজ্ঞার সময়টা দুই দেশে একই সঙ্গে পালিত হয়। তা ছাড়াও মেঘনা, পদ্মায় যে ভাবে বাচ্চা ইলিশ ধরার উপর কড়াকড়ি করা হয়, এখানেও তা দ্রুত চালু হওয়া প্রয়োজন।
ইলিশ সংরক্ষণে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলিকে আরও শক্তিশালী করার লক্ষ্যেই এই প্রকল্প করা হচ্ছে। এতে দু’দেশের মৎস্যজীবীদের একটি যৌথ মঞ্চ তৈরি করার চেষ্টা চলছে। সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যেও আরও নিবিড় সমন্বয়ের প্রস্তাব দেওয়া হবে। যেমন, ইলিশ বাঁচাতে, বন, পুলিশ, টাস্কফোর্স-সহ আরও বেশ কয়েকটি সরকারি দফতর বাংলাদেশে এক ছাতার তলায় এসেছে। এখানেও এরকম প্রস্তাব দেবে ওই সংস্থা।
কতজন মৎস্যজীবী ইলিশের উপর জীবীকা নির্বাহ করেন তারও একটি পরিষ্কার ছবি যাতে সরকার পায় সেই প্রস্তাবও দেওয়া হবে রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় সরকারকে। তবে তার আগে বাংলাদেশের মৎস্যজীবীদের এখানে নিয়ে আসা হবে।
এ রাজ্যের মৎস্যজীবীরা গিয়ে দেখেছেন, সেখানে সংগঠনগুলি সেরকম জোরদার নয়। অভাব রয়েছে মৎস্যজীবীদের নিরাপত্তা, গভীর সমুদ্রে যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং পরিচয়পত্রেরও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy