কাশির ওষুধ বিতর্কে এ বার আরও কড়া নির্দেশিকা জারি করল কেন্দ্রীয় সরকার। ‘সেন্ট্রাল ড্রাগস স্ট্যান্ডার্ড কন্ট্রোল অর্গানাইজেশন’ (সিডিএসসিও) ভারতের সমস্ত ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থাকে জানিয়েছে, বিশ্বব্যাপী যে মানদণ্ড বা ‘গুড ম্যানুফ্যাকচারিং প্র্যাকটিস’ (জিএমপি) মেনে চলতে হবে। আগামী ১ জানুয়ারির মধ্যে বিষয়টি নিশ্চিত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নচেৎ সংস্থা ঝাঁপ বন্ধ করতে হবে! জিএমপি মেনে চলার জন্য আর সময়সীমা বৃদ্ধি করা হবে না।
যে সব ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থার বার্ষিক লেনদেনের পরিমাণ (টার্নওভার) ২৫০ কোটির কম, এমন ১,৪৭০টি সংস্থার উদ্দেশে সিডিএসসিও শেষ নির্দেশিকায় জানিয়েছিল, জিএমপি মানতে হবে। তার জন্য সময়সীমা বৃদ্ধি করে ১ জানুয়ারি, ২০২৬ করা হয়। এ বার সিডিএসসিও জানিয়ে দিল, এর পর আর সময়সীমা বৃদ্ধি সম্ভব নয়।
শুধু দেশে নয়, আন্তর্জাতিক বাজারেও ভারতের কয়েকটি কাশির ওষুধ নিয়ে বিতর্ক দানা বাঁধে। অভিযোগ, গাম্বিয়া, উজ়বেকিস্তান, ক্যামেরুনের মতো দেশে শিশুমৃত্যুর সঙ্গে এই সব বিতর্কিত কাশির ওষুধের নাম জড়িয়ে যায়। তার পর থেকেই ভারত সরকার আন্তর্জাতিক মহলে সমালোচনার মুখে পড়ে। নজরদারির অভাবের অভিযোগও ওঠে। এই আবহেই ভারতের ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ শুরু করে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক।
আরও পড়ুন:
সম্প্রতি মধ্যপ্রদেশের ছিন্দওয়াড়ায় বেশ কয়েক জন শিশুর মৃত্যু ঘিরে প্রশ্ন উঠেছে। কাশির ‘বিষাক্ত’ সিরাপ খাওয়ার ফলেই তাদের কিডনি বিকল হয়ে মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ। শুধু মধ্যপ্রদেশ নয়, রাজস্থানেও একই কারণে কয়েকটি শিশুর মৃত্যু ঘটে বলে অভিযোগ। তার পরেই একে একে দেশের বেশ কয়েকটি রাজ্য ‘বিতর্কিত’ কাশির সিরাপ নিষিদ্ধ করে। পাশাপাশি বিশ্বের কয়েকটি দেশেও ‘বিতর্কিত’ কাশির সিরাপ খেয়ে শিশুমৃত্যুর ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই নড়েচড়ে বসে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)।
শিশুমৃত্যুর সঙ্গে নাম জড়ানো কোনও কাশির সিরাপ বিদেশে রফতানি হয়েছে কি না, তা দিল্লির থেকে জানতে চেয়েছিল তারা। তার জবাবে কেন্দ্রীয় ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ‘ড্রাগস কন্ট্রোলার জেনারেল অফ ইন্ডিয়া’ (ডিসিজিআই) হু-কে জানিয়েছে, ভারত থেকে কোনও দূষিত কাশির সিরাপ রফতানি করা হয়নি। শুধু তা-ই নয়, অবৈধ ভাবে কোনও রফতানিরও প্রমাণ নেই। তবে হু বিশ্বব্যাপী এক সতর্কবার্তা জারি করে। চিহ্নিত তিনটি কাশির সিরাপ— কোল্ডরিফ, রেসপিফ্রেস টিআর এবং রিলাইফ নিয়ে সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দেওয়া হয়।