রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার কাউন্সিলের সভায় পাকিস্তানকে একহাত নিল ভারত। রাষ্ট্রপুঞ্জের ওই সভায় পাকিস্তানের অর্থনীতি, সে দেশের মানবাধিকারের অবক্ষয় এবং রাজনীতিতে সেনার প্রভাব খাটানোর প্রসঙ্গে ইসলামাবাদকে নিশানা করে ভারত। সভায় ভারতীয় দূত ক্ষিতিজ ত্যাগী বলেন, “নিজেদের লোকের উপরে বোমা ফেলা থেকে ফুরসত পেলে ওরা (পাকিস্তান) মানবাধিকার রক্ষায় নজর দিক।”
মঙ্গলবার রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার কাউন্সিলের সভায় নাম না-করে ইসলামবাদকে বিঁধল নয়াদিল্লি। ত্যাগী বলেন, “একটি প্রতিনিধিদল ভারতের বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন এবং উস্কানিমূলক বক্তব্যের জন্য এই মঞ্চের অপব্যবহার করে যাচ্ছে। আমাদের ভূখণ্ড (দখল)-এর লোভ ছেড়ে তাদের উচিত অবৈধ ভাবে দখল করে রাখা ভারতীয় ভূখণ্ড থেকে সরে যাওয়া। এ সব ছেড়ে তাদের উচিত নিজেদের ‘লাইফ সাপোর্টে’ থাকা অর্থনীতি, সেনার হস্তক্ষেপে বিধ্বস্ত রাজনৈতিক ব্যবস্থা এবং মানবাধিকারের অবক্ষয় দূর করতে পদক্ষেপ করা। অবশ্য যদি তারা সন্ত্রাস ছড়ানো, রাষ্ট্রপুঞ্জের ঘোষিত জঙ্গিদের আশ্রয় দেওয়া এবং নিজেদের লোকেদের উপর বোমা ফেলা থেকে অবকাশ পায়।”
সম্প্রতি পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে একটি বিস্ফোরণে অন্তত ২৪ জনের মৃত্যু হয়। সংবাদ সংস্থা এপি-র তথ্য বলছে, নিহতদের মধ্যে মহিলা এবং শিশুও রয়েছে। এই প্রদেশে দীর্ঘ দিন ধরে সক্রিয় তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান (টিটিপি) বা পাকিস্তানি তালিবান নামক জঙ্গিগোষ্ঠী। পাকিস্তানের স্থানীয় পুলিশের দাবি, জঙ্গিদের ডেরায় মজুত করে রাখা বোমা ফেটে এই বিস্ফোরণ। যদিও সে দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল তেহরিক-ই-ইনসাফ( পিটিআই) দাবি করেছে, পাক সেনা হামলার কারণেই ওই বিস্ফোরণ। যদিও পাক প্রশাসন তা অস্বীকার করেছে।
আরও পড়ুন:
আন্তর্জাতিক মঞ্চে এর আগেও বার বার সন্ত্রাসবাদের প্রসঙ্গে পাকিস্তানকে নিশানা করেছে ভারত। ‘অপারেশন সিঁদুর’ এবং ভারত-পাক সংঘর্ষ পরবর্তী সময়ে তা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজ়েশন (এসসিও)-এর বৈঠকেও পাকিস্তানকে বিঁধেছে নয়াদিল্লি। গত রবিবার দু’দিনের সফরে মরক্কোয় গিয়েছিলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। সে দেশে বসবাসকারী ভারতীয়দের সঙ্গে দেখা করেন তিনি। তাঁদের সঙ্গে আলাপচারিতায় রাজনাথ বলেন, “পাক অধিকৃত কাশ্মীর খুব শীঘ্রই ভারতের অংশ হবে। সেখানকার মানুষ ইতিমধ্যেই সেই দাবি তুলতে শুরু করেছেন।” একই সঙ্গে রাজনাথের সংযোজন, “পাঁচ বছর আগে আমি কাশ্মীর উপত্যকায় ভারতীয় সেনার এক অনুষ্ঠানে বলেছিলাম, পাক অধিকৃত কাশ্মীর দখল করতে আমাদের আক্রমণ করার প্রয়োজন নেই। ওটা এমনিতেই আমাদের হবে। পাক অধিকৃত কাশ্মীরও বলবে, আমরা ভারতের অংশ। ওই দিন আসতে চলেছে।”