আমেরিকার সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে দর কষাকষির মধ্যেই কুয়ালা লামপুরে আসিয়ানের পার্শ্ববৈঠকে সে দেশের বিদেশসচিব মার্কো রুবিয়োর সঙ্গে একপ্রস্থ আলোচনা সারলেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। সূত্রের খবর, রাশিয়া থেকে তেল আমদানি কমানো নিয়ে রুবিয়ো অনুরোধ করেছেন বিদেশমন্ত্রীকে। এই নিয়ে দু’টি রাস্তার কথাই বিবেচনা করা হচ্ছে, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। তবে রাশিয়া থেকে তেল কেনা কমানোর সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তিকে সফল ভাবে সংযুক্ত করে দিতে পেরেছে ট্রাম্প প্রশাসন, এমনটাই মনে করছে কূটনৈতিক মহল।
যে দু’টি পথ ভারতের সামনে খোলা রয়েছে, তার মধ্যে প্রথমটি হল আমেরিকার নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে মস্কো থেকে তেল আমদানি বহাল রাখা। সে ক্ষেত্রে আমেরিকার সরাসরি কিছু বলার থাকবে না। অথবা আমেরিকার নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়া রাশিয়ার দু’টি বড় তেল সংস্থাকে বাদ দিয়ে অন্য সংস্থার কাছ থেকে তেল কেনা। কিন্তু এই দু’টি ক্ষেত্রেই আমেরিকার খামখেয়ালি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কোন মূর্তি ধারণ করবেন, তার কোনও নিশ্চয়তা মোদী সরকারের কাছে নেই।
দ্বিতীয় পথটি হল, রাশিয়া থেকে তেল কেনা বন্ধ বা কমানোর বিষয়টিকে আমেরিকার সঙ্গে বাণিজ্য এবং কৌশলগত দর কষাকষির ক্ষেত্রে কাজে লাগানো। সরকারের একটি বড় অংশের মতে এই পথটিই অনেক বাস্তবসম্মত এবং কূটনৈতিক ভাবে লাভজনক। এক পা এগিয়ে এমনটাও মনে করা হচ্ছে, এটা হল ট্রাম্প প্রশাসনের অস্ত্রকে কাজে লাগিয়ে তাদের উপরেই পাল্টা চাপ তৈরি করা। নয়াদিল্লির কাছ এখন অগ্রাধিকার, যতটা সম্ভব নিজেদের জন্য সুবিধাজনক শর্তে আমেরিকার সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি সম্পন্ন করা। যে ২৫ শতাংশ জরিমানা শুল্ক রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কেনার জন্য ট্রাম্প বসিয়েছেন, সেটা রদ করানো। রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কেনা আপাতত স্থগিত রেখে আমেরিকার সঙ্গে দর কষাকষি যদি ঠিক মতো করতে পারে ভারত, তা হলে যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে বর্তমানে ভারতীয় পণ্যের উপর মোট ৫০ শতাংশ শুল্ককে কমিয়ে ১৫ শতাংশ বা তারও কমে নিয়ে যাওয়া। ঘরোয়া রাজনৈতিক মহলে সেটা মোদী সরকার নিজেদের জয় হিসাবেও দেখাতে পারবে।
অন্য দিকে সরকারি সূত্রের দাবি, ২০২৪ সালের প্রথম ছ’মাসে (জানুয়ারি থেকে জুন) আমেরিকা থেকে ভারত দিন প্রতি ১.৮ লক্ষ ব্যারেল হিসাবে খনিজ তেল আমদানি করেছিল। কিন্তু ২০২৫ সালের ওই একই সময়ে আমদানি পৌঁছে গিয়েছে দিনে ২.৭১ লক্ষ ব্যারেল। অর্থাৎ আমেরিকা থেকে ভারতে খনিজ তেল আমদানি লাফিয়ে বাড়ছে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)