Advertisement
E-Paper

পাকিস্তানের হুমকিকে গুরুত্বই দিচ্ছে না ভারত! সিন্ধুর উপনদী চন্দ্রভাগায় বাঁধের কাজে বাড়ছে তৎপরতা, শীঘ্রই বসছে বৈঠক

সাওয়ালকোটে এই জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের পরিকল্পনা করা হয়েছিল ১৯৬০ সালে। পরে ১৯৮৪ সালে প্রকল্প কার্যকরের জন্য কেন্দ্রীয় সরকার এক বার উদ্যোগী হলেও কেন্দ্র-রাজ্য দ্বন্দ্বের কারণে তা বাস্তবায়িত হয়নি।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০৯:০৭
কাশ্মীরের সাওয়ালকোটে জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য চন্দ্রভাগা নদীর উপর বাঁধের কাজে ফের তৎপর নয়াদিল্লি।

কাশ্মীরের সাওয়ালকোটে জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য চন্দ্রভাগা নদীর উপর বাঁধের কাজে ফের তৎপর নয়াদিল্লি। —ফাইল চিত্র।

সিন্ধুর উপনদী চন্দ্রভাগার উপর বাঁধ তৈরির বিষয়ে উদ্যোগী ভারত। সিন্ধুজলবণ্টন চুক্তি অনুসারে, চন্দ্রভাগার জল ব্যবহার করতে পারে পাকিস্তান। কিন্তু বর্তমানে পহেলগাঁও হত্যাকাণ্ড পরবর্তী সময়ে সিন্ধু জলচুক্তি স্থগিত রেখেছে ভারত। এ অবস্থায় জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য কাশ্মীরের সাওয়ালকোট থমকে থাকা বাঁধের কাজ নিয়ে ফের তৎপর হয়েছে নয়াদিল্লি। চলতি সপ্তাহেই এ বিষয়ে বৈঠকে বসছে কেন্দ্রীয় পরিবেশ মন্ত্রকের বিশেষজ্ঞ কমিটি। সংবাদমাধ্যম ‘দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’ অনুসারে, ১৮৬৫ মেগাওয়াটের ওই জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য পরিবেশ বিষয়ক ছাড়পত্রের বিষয়ে আলোচনা হবে বৈঠকে।

সাওয়ালকোটে এই জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের পরিকল্পনা করা হয়েছিল ১৯৬০ সালেই। পরে ১৯৮৪ সালে প্রকল্প কার্যকরের জন্য কেন্দ্রীয় সরকার এক বার উদ্যোগী হলেও কেন্দ্র-রাজ্য দ্বন্দ্বের কারণে তা বাস্তবায়িত হয়নি। বস্তুত, চন্দ্রভাগা হল সিন্ধুর পশ্চিম তীরের উপনদী। সিন্ধুচুক্তি অনুসারে, সিন্ধু নদ এবং তার পশ্চিম তীরের উপনদীগুলির জল পায় পাকিস্তান। অতীতে স্থায়ী সিন্ধু কমিশনের তৎকালীন আধিকারিকেরা জানিয়েছিলেন, এই প্রকল্পের বিষয়ে পাকিস্তান তথ্য চেয়েছিল নয়াদিল্লির কাছে। কিন্তু ভারত সেই তথ্য জানায়নি। কারণ, চুক্তি অনুসারে, নির্মাণকাজ শুরুর ছ’মাস আগে অন্য পক্ষকে জানানো প্রয়োজন।

পহেলগাঁও কাণ্ডের পরবর্তী সময়ে কৌশলগত কারণেই এই জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের উপর আরও জোর দিচ্ছে দিল্লি। এই প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য পরিবেশ মন্ত্রকের বন উপদেষ্টা কমিটিরও ছাড়পত্রের প্রয়োজন রয়েছে। ‘দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’ অনুসারে, বিদ্যুৎ ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অনুরোধে ইতিমধ্যে তা বিবেচনা করে দেখছে বন উপদেষ্টা কমিটি। গত ১১ জুন বিদেশ মন্ত্রকের সচিব এবং গত ১৩ জুন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সচিবের তরফে চিঠি পাঠানো হয়েছিল পরিবেশ মন্ত্রকের অধীনস্থ এই দফতরে।

বস্তুত, সিন্ধু জলচুক্তি স্থগিত হওয়ার পর থেকে এই বাঁধনির্মাণ ঘিরে বিস্তর কূটনৈতিক চাপানউতর চলেছে। পাকিস্তান হুঁশিয়ারি দিয়েছে, তাদের ভাগের জল আটকানোর চেষ্টা হলে বাঁধ ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হবে। পাক প্রতিরক্ষামন্ত্রী খোয়াজা আসিফ ওই সময় বলেছিলেন, ‘‘সিন্ধু সিস্টেমের নদীগুলির উপর কোনও বাঁধ তৈরি করে জল আটকানো হলে তা চুক্তির শর্ত লঙ্ঘন হিসাবে দেখা হবে। সে ক্ষেত্রে তা হবে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের সরাসরি আগ্রাসন। ভারত এমন কিছু করলে আমরা যে কোনও নির্মাণ গুঁড়িয়ে দেব।’’

এমনকি পাক সেনাপ্রধান আসিম মুনিরও এই বিষয়ে ভারতকে হুঙ্কার দিয়েছেন। আমেরিকার ফ্লরিডায় এক অনুষ্ঠান থেকে তিনি হুঁশিয়ারি দেন, সিন্ধু বা তার কোনও উপনদীতে বাঁধ তৈরি হলে ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে তা গুঁড়িয়ে দেওয়া হবে। তিনি বলেছিলেন, “ভারত বাঁধ তৈরি করুক, আমরা অপেক্ষা করব। যখন বাঁধের কাজ শেষ হয়ে যাবে, আমরা ১০টি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে তা ধ্বংস করে দেব। আমাদের কাছে ক্ষেপণাস্ত্রের অভাব নেই।” বাঁধ তৈরি নিয়ে পাকিস্তান একের পর এক হুমকি দিয়ে গেলেও জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরির উদ্দেশ্যে কাজ এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে ভারত।

Indus Water Treaty India Pakistan Conflict
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy