Advertisement
E-Paper

পহেলগাঁও: লশকরের ছায়া সংগঠনকে অর্থসাহায্য করে কারা? ফোনকল ঘেঁটে চিহ্নিত করে ফেলল এনআইএ

পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছিল লশকর-এ-ত্যায়বার ছায়া সংগঠন ‘দ্য রেজ়িস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ (টিআরএফ)। এই সংগঠনের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই একাধিক তথ্যপ্রমাণ এনআইএ-র হাতে এসেছে বলে দাবি।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৩:১৪
পহেলগাঁও হামলায় জড়িত জঙ্গিগোষ্ঠী সম্পর্কে নয়া তথ্য এনআইএ-র হাতে।

পহেলগাঁও হামলায় জড়িত জঙ্গিগোষ্ঠী সম্পর্কে নয়া তথ্য এনআইএ-র হাতে। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছিল লশকর-এ-ত্যায়বার ছায়া সংগঠন ‘দ্য রেজ়িস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ (টিআরএফ)। এই সংগঠনের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই একাধিক তথ্যপ্রমাণ ভারতের তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ-র হাতে এসেছে। এ বার কেন্দ্রীয় তদন্তকারীরা জানতে পারলেন, কারা এই ছায়া সংগঠনকে অর্থসাহায্য করে। সূত্রের, এই ‘তথ্যপ্রমাণ’ আন্তর্জাতিক স্তরে পেশও করবে ভারত।

রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের একটি কমিটি সম্প্রতি একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছিল। সেই রিপোর্টে ‘টিআরএফ’-এর উল্লেখ রয়েছে। বলা হয়েছে, পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার দায় দু’বার স্বীকার করেছে টিআরএফ। শুধু তা-ই নয়, জঙ্গি হামলার পর ছবিও প্রকাশ করেছে তারা। রাষ্ট্রপুঞ্জের কমিটির দাবি, লশকরের সমর্থন ছাড়া পহেলগাঁওয়ে হামলা চালানো সম্ভব হত না।

ভারতের তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে খবর, তারাও ৪৬৩টি ফোনকল ঘেঁটে জানতে পেরেছে, একাধিক দেশ এই গোষ্ঠীকে টাকা দিয়ে সাহায্য করে। সেই তালিকায় পাকিস্তান এবং মালয়েশিয়া রয়েছে। এ ছাড়াও রয়েছে উপসাগরীয় এলাকায় একাধিক দেশ। তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, মালয়েশিয়ার ইয়াসির হায়াত নামে এক ব্যক্তি ৯ লাখ টাকা দিয়েছে টিআরএফ-কে। তাঁর সঙ্গে যে লশকর জঙ্গি সাজিদ মীরেরও যোগাযোগ রয়েছে, তারও প্রমাণ মিলেছে। তদন্তকারীদের সূত্রে দাবি, ব্যাঙ্কিং লেনদেনের কিছু তথ্যও তাঁদের হাতে এসেছে।

পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসে মদত দেওয়ার অভিযোগ দীর্ঘ দিন ধরে তুলে আসছে ভারত। পহেলগাঁও কাণ্ডের পর তা আরও জোরালো হয়েছে। এ বার তদন্তে জঙ্গি সংগঠনকে সাহায্য করার যে ‘প্রমাণ’ ভারত পেয়েছে, তা ভবিষ্যতে কাজে লাগানো হবে বলেই সাউথ ব্লক সূত্রে দাবি।

পহেলগাঁও কাণ্ডের পর একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছিল সন্ত্রাসবাদে আর্থিক মদত আটকানোর নজরদারি সংস্থা ‘ফিনান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক’ (এফএটিএফ)। তাতে তারা কার্যত ভারতের পাশেই দাঁড়িয়েছে। কেন্দ্রের একটি সূত্রের দাবি, এফএটিএফ যাতে আবার পাকিস্তানকে ধূসর তালিকাভুক্ত করে, ভারত সেই চেষ্টাই করবে। আর সেটা ঘটলে আন্তর্জাতিক স্তর থেকে আর্থিক সহায়তা পেতে গিয়ে বিপাকে পড়বে পাকিস্তান। ২০১৮ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত পাকিস্তান এফএটিএফ-এর ধূসর তালিকাতেই ছিল।

গত ২২ এপ্রিল জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে জঙ্গিদের গুলিতে নিহত হন ২৬ জন। টিআরএফ প্রথমে পহেলগাঁওয়ের জঙ্গিহানার দায় স্বীকার করেছিল। পরে আবার নিজেদের বক্তব্য পরিবর্তন করে একটি নতুন বিবৃতি প্রকাশ করে তারা। নতুন বিবৃতিতে টিআরএফ জানায়, পহেলগাঁও কাণ্ডে তাদের কোনও যোগ নেই। প্রথমে স্বীকার করেও পরে সেই দায় অস্বীকার করাকে কেন্দ্র করে নানা প্রশ্নও উঠতে শুরু করে। ভারতের দাবি ছিল, পাকিস্তানের চাপেই হামলার কথা অস্বীকার করেছে টিআরএফ।

পহেলগাঁও কাণ্ডের পর ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনার পরিস্থিতিতে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে বসে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদ। সেই বৈঠকে পাকিস্তানের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, পহেলগাঁওয়ের ওই ঘটনায় লশকর-এ-ত্যায়বার কোনও যোগ রয়েছে কি না। তবে পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী ইশাক দার পরে দাবি করেছিলেন, হাফিজ় সইদের লশকরের সঙ্গে টিআরএফের কোনও যোগ নেই। কারণ বহু বছর আগে সেই লশকর সংগঠন নির্মূল করেছে পাকিস্তান। উল্লেখ্য, টিআরএফ-কে ইতিমধ্যেই বিদেশি সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীর তকমা দেওয়া হয়েছে। পহেলগাঁও কাণ্ডের পর রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের জঙ্গি নিষেধাজ্ঞা কমিটির কাছে পাকিস্তানের জঙ্গি সংগঠন টিআরএফ-এর কার্যকলাপ নিয়ে বিস্তারিত নথি দিয়েছিল ভারতও।

২০১৯-এ টিআরএফের উত্থান। সংবিধান থেকে ৩৭০ অনুচ্ছেদ বিলোপ হওয়ার পর লশকরের ‘ছায়া সংগঠন’ হিসাবে উঠে আসে টিআরএফ। নয়াদিল্লির বক্তব্য, এদের মূল লক্ষ্য, কাশ্মীরে স্থিতাবস্থায় বিঘ্ন ঘটানো। তার জন্য নাশকতামূলক কাজকর্মের পুনর্বিন্যাস করার চেষ্টা শুরু করেছে এই জঙ্গিগোষ্ঠী।

TRF Lashkar-e-Taiba
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy