Advertisement
E-Paper

উত্তর ভারতে ২৯০০ কেজি বিস্ফোরক উদ্ধার হওয়ার পরেই দিল্লিতে বিস্ফোরণ, তদন্তকারীরা খতিয়ে দেখছেন দু’টি বিষয়

সোমবার দিল্লির অদূরে হরিয়ানার ফরিদাবাদে ৩৬০ কেজি আরডিএক্স তৈরির মশলা (অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট) উদ্ধার করে পুলিশ। আর সোমবার সন্ধ্যাতেই দিল্লিতে লালকেল্লার সামনে দাঁড়ানো গাড়িতে বিস্ফোরণ ঘটে। এই দুই ঘটনার মধ্যে যোগসূত্র রয়েছে কি না, তা-ই এখন খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০২৫ ১০:৩১
বিস্ফোরণের পর ঘটনাস্থলে পুলিশ। সোমবার দিল্লিতে লালকেল্লার সামনে।

বিস্ফোরণের পর ঘটনাস্থলে পুলিশ। সোমবার দিল্লিতে লালকেল্লার সামনে। ছবি: পিটিআই।

নাশকতার ছক কষেই কি দিল্লিতে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে? এই প্রশ্নকে ঘিরে এখন তোলপাড় গোটা দেশ। সোমবার দিল্লির অদূরে হরিয়ানার ফরিদাবাদে ৩৬০ কেজি আরডিএক্স তৈরির মশলা (অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট) উদ্ধার করে পুলিশ। পরে জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ জানায়, উত্তর ভারতের বিভিন্ন অংশে অভিযান চালিয়ে মোট ২৯০০ কেজি বিস্ফোরক উদ্ধার হয়েছে।

আর সোমবার সন্ধ্যাতেই দিল্লিতে লালকেল্লার সামনে দাঁড়ানো গাড়িতে বিস্ফোরণ ঘটে। মৃত্যু হয় আট জনের। এই দুই ঘটনার মধ্যে যোগসূত্র রয়েছে কি না, তা-ই এখন খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। ইতিমধ্যেই এই ঘটনার তদন্তে নেমেছে এনআইএ-সহ একাধিক তদন্তকারী সংস্থা।

দু’টি বিষয় তদন্তকারীদের ভাবাচ্ছে। এক, বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক উদ্ধার হওয়ার পরেই কি সন্দেহভাজনেরা সতর্ক হয়ে যান? তাই কি নানা জায়গায় লুকোনো বিস্ফোরক গাড়িতে তুলে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছিল? দুই, ধরা পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থেকেই অবশিষ্ট বিস্ফোরক বিস্ফোরণ ঘটিয়ে নষ্ট করে ফেলেন তাঁরা। তদন্তকারীদের একটি সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছিল, জনবহুল এলাকায় পরিকল্পনামাফিক গাড়ি বিস্ফোরণের ছক ছিল। কিন্তু সেই তত্ত্বও এখন খুব বেশি জোরালো নয়।

দিল্লি বিস্ফোরণে সম্ভাব্য ফরিদাবাদ-যোগ নিয়ে আরও একটি ‘প্রমাণ’ মিলেছে বলে খবর। ‘দৈনিক ভাস্কর’-এর প্রতিবেদনে একটি বিস্ফোরণস্থলের একটি ভিডিয়োর প্রসঙ্গ উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, গাড়িতে বিস্ফোরণের পরেই কমলা রঙের আগুন দেখা গিয়েছে। তদন্তকারীদের একটি সূত্রের দাবি, সাধারণত অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট থেকে বিস্ফোরণ ঘটলে এই ধরনের আগুন দেখা যায়। কারণ অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট জ্বলে যাওয়ার পর নাইট্রোজেন অক্সাইড এবং অ্যামোনিয়া নির্গত হয়। ঘটনাচক্রে, ফরিদাবাদ থেকে এই অ্যামোনিয়াম নাইট্রেটই উদ্ধার করা হয়েছিল।

অন্য দিকে, যে গাড়িতে বিস্ফোরণ ঘটে, সেই গাড়িটিকে গত ২০ সেপ্টেম্বর ভুল জায়গায় পার্ক করানো হয়েছিল। সেই কারণে ১৫০০ টাকা জরিমানাও নেয় পুলিশ।

সোমবার সন্ধ্যার যে গাড়িটিতে বিস্ফোরণ হয়েছে, সেটির নম্বর প্লেট হরিয়ানার। সেই সূত্র ধরে জনৈক মহম্মদ সলমন নামে এক ব্যক্তিকে সোমবার রাতেই আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে পুলিশ। বিস্ফোরণে উড়ে যাওয়া গাড়িটি তাঁরই নামে রেজিস্ট্রেশন করা আছে বলে দাবি পুলিশ সূত্রের। যদিও জানা যাচ্ছে, পুলিশি জেরায় সলমন জানিয়েছেন, তিনি গাড়িটি পুলওয়ামার এক বাসিন্দাকে বিক্রি করে দিয়েছিলেন। তবে গাড়ির নথিপত্রে এখনও নামবদল হয়নি। এ বার সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে দাবি করা হচ্ছে, ওই গাড়িটির বর্তমান ‘মালিক’ ছিলেন পুলওয়ামার এক চিকিৎসক। নাম ওমর মহম্মদ।

কী ভাবে ফরিদাবাদ চক্রের খোঁজ পেল পুলিশ?

কাশ্মীরে নাশকতার উদ্দেশ্যে সম্প্রতি একটি বিশেষ গোষ্ঠী সক্রিয় হয়েছে। সামাজিক কর্মকাণ্ডের আড়ালে তৈরি হত নাশকতার ছক। এমন খবর পাওয়ার পরেই তদন্তে নামে জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ। সেই তদন্তে নেমে ১৯ অক্টোবর শ্রীনগরে পাকিস্তানি জঙ্গিগোষ্ঠী জইশ-ই-মহম্মদের সমর্থনে পোস্টার সাঁটার অভিযোগে চিকিৎসক আদিল আহমেদ র‌্যাদারকে গ্রেফতার করে কাশ্মীর পুলিশ। হেফাজতে নিয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন তদন্তকারীরা। একে একে বেরিয়ে আসে কয়েক জনের নাম।

আদিলকে জেরা করে আরও চিকিৎসকের হদিস পায় পুলিশ। তদন্তকারী সূত্রে খবর, কাশ্মীরে নাশকতার উদ্দেশ্যে যে বিশেষ গোষ্ঠী সক্রিয় হয়েছে, তারা সামাজিক কর্মকাণ্ডের আড়ালে তৈরি করত নাশকতার ছক। এ ছাড়া, ব্যক্তিবিশেষকে চিহ্নিত করে জঙ্গিগোষ্ঠীর সদস্যসংখ্যা বৃদ্ধি করা হচ্ছে। এই চক্রের তদন্তে বেশ কয়েক জনকে গ্রেফতার করে কাশ্মীর পুলিশ। ধৃতেরা হলেন, আরিফ নিসর দার, ইয়াসির-উল-আসরফ, মকসুদ আহমেদ দার, ইরফান আহমেদ, জ়ামির আহমেদ। আদিলের সূত্র ধরে খোঁজ মেলে চিকিৎসক মুজ়াম্মিল আহমেদের। জেরায় প্রকাশ্যে আসে ফরিদাবাদের বিস্ফোরকের খবর।

NIA Red Fort Delhi Police
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy