ভারতের আলোচনা সভার প্রচার ভিডিয়োয় ইরানের সরকার বিরোধী প্রতিবাদের ছবি, প্রতিবাদে ভারত সফর বাতিল সে দেশের মন্ত্রীর। — ফাইল ছবি।
ভারতের একটি আলোচনাসভার প্রচার ভিডিয়োতে কেন ইরানে সরকার বিরোধী আন্দোলনে মহিলাদের নিজের চুল কেটে ফেলার ছবি? এই কারণে ভারত সফরই বাতিল করে দিলেন ইরানের বিদেশমন্ত্রী হোসেন আমির-আবদোল্লাহিঁয়া। দৈনিক সংবাদপত্র ‘দ্য ইন্ডিয়া এক্সপ্রেস’-য়ে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে এ ভাবে প্রচারমূলক ভিডিয়ো তৈরি করায় উদ্যোক্তাদের প্রতি চরম অসন্তুষ্ট তেহরান।
আগামী মাসে ইরানের বিদেশমন্ত্রী আবদোল্লাহিঁয়ার ভারতে আসার কথা ছিল। যোগ দেওয়ার কথা ছিল ‘রাইসিনা ডায়লগ’-এ। বিদেশ মন্ত্রকের সঙ্গে এই অনুষ্ঠানটির যৌথ উদ্যোক্তা ‘অবজার্ভার রিসার্চ ফাউন্ডেশন’। সংবাদপত্রটিতে লেখা হয়েছে, ইরান অনুষ্ঠানের উদ্যোক্তাদের জানিয়ে দিয়েছে, আবদোল্লাহিঁয়া ওই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করবেন না। কারণ হিসাবে ওই প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, ওই অনুষ্ঠানের জন্য একটি প্রচার ভিডিয়ো তৈরি করা হয়েছে। সেই ভিডিয়োয় একটি ছবি ব্যবহার করা হয়েছে। যা নিয়ে ঘোর আপত্তি তেহরানের। ওই ভিডিয়োয় একটি ছবি ব্যবহার করা হয়েছে, যেখানে একজন মহিলা ইরানের সরকার বিরোধী আন্দোলনে প্রতিবাদস্বরূপ নিজের চুল কাটছেন। ওই ছবিতেই একটি অংশে ইরানের প্রেসি়ডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির ছবিও রয়েছে।
রাইসিনা ডায়লগের প্রচারের জন্য তৈরি করা ওই ভিডিয়োটি এক মাস আগেই প্রকাশ করা হয়েছে। প্রতিবেদনে আরও দাবি করা হয়েছে যে, ইরানের দূতাবাস থেকে অনুষ্ঠানের উদ্যোক্তা বিদেশ মন্ত্রক এবং অবজার্ভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের সঙ্গেও যোগাযোগ করা হয়েছিল। সেখানে ইরানের প্রেসিডেন্টের ছবি ব্যবহারের বিষয়টি তুলে ধরে আপত্তিও জানানো হয়। সূত্রের খবর, ইরান দূতাবাসের তরফ থেকে ভিডিয়োর ওই অংশ মুছে ফেলার আবেদন করা হয় উদ্যোক্তাদের কাছে। কিন্তু উদ্যোক্তারা সেই দাবি মানেননি। তার পরেই জানা গেল তেহরান তার প্রতিনিধিকে ভারতে পাঠাচ্ছে না।
গত বছর সেপ্টেম্বরে আপত্তিকর পোশাক পরার ‘অপরাধে’ ধৃত মাহসা আমিনি নামে এক তরুণীর হেফাজতে মৃত্যু হয়। অভিযোগ ওঠে, হেফাজতে মাহসার উপর অত্যাচার করে তাঁকে মেরে ফেলা হয়েছে। যদিও ইরানের সরকার তা মানতে চায়নি। তার পরেই দেশ জুড়ে শুরু হয় প্রতিবাদ। সেই আঁচ পৌঁছয় সারা বিশ্বেই। মহিলারা নিজের চুল কেটে ইরানের সরকারি মতিগতির প্রতিবাদ জানাতে থাকেন। তাৎপর্যপূর্ণ ব্যাপার হল, ভারত কিন্তু ইরানের প্রতিবাদ নিয়ে সেই সময় একটি বাক্যও উচ্চারণ করেনি। এহ বাহ্য, ইরানে সরকারি মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ নিয়েও রাষ্ট্রপুঞ্জে ভোটাভুটিতে বিরত থাকে ভারত। এই অবস্থায় সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় অনুষ্ঠিতব্য আলোচনাসভার প্রচার ভিডিয়োতে ইরানে সরকার বিরোধী প্রতিবাদের ছবি এবং সেই ছবিতে তরুণীর চুল কেটে প্রতিবাদের ছবির পাশে সে দেশের প্রেসিডেন্টের ছবি ব্যবহার তাৎপর্যপূর্ণই বটে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy