বিলাসবহুল গাড়ি নিয়ে ইরান থেকে ভারতে পাড়ি দিয়েছিলেন তিনি। যাত্রাপথে পেরোতে হয় পাকিস্তান। তবে তখনও পহেলগাঁও কাণ্ড ঘটেনি। খোলা ছিল পঞ্জাবের অটারী-ওয়াঘা সীমান্ত। তবে পহেলগাঁওয়ের জঙ্গি হামলার ঘটনার পর সেই চেনা ছবি পাল্টেছে। বন্ধ করা হয়েছে ওয়াঘা সীমান্ত। ফলে ভারত-পাকিস্তান সেই সীমান্তেই আটকে রয়েছেন ইরানের এক মহিলা। নিজের দেশের ফিরতে চেয়ে এ বার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সাহায্য চাইলেন তিনি।
এলহাম, ইরানের বাসিন্দা। কিন্তু দেশ-বিদেশে ভ্রমণের শখ। সেই শখের তাড়নায় দিন কয়েক আগে সড়কপথে ভারতে আসেন ওই ইরানি পর্যটক। ভারত ভ্রমণ শেষে বাড়ি ফেরার পথেই ঘটে বিপত্তি। ‘ইন্ডিয়া টুডে’-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এলহাম বলেন, ‘‘আমি ফেব্রুয়ারিতে আমার ভ্যানে (বিলাসবহুল গাড়ি) করে পাকিস্তান হয়ে পর্যটক হিসাবে ভারতে এসেছিলাম। এখন আমি ইরানে ফিরে যেতে চাই। কিন্তু সীমান্ত বন্ধ হওয়ার কারণে আটকে পড়েছি।’’ মোদী এবং শাহের কাছে সাহায্যের চাইলেন তিনি।
এলহাম জানান, দিন কয়েকের মধ্যেই তাঁর ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে। কিন্তু সীমান্ত বন্ধের কারণে আটকে পড়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘আমি ভারতকে ভালবাসি। এখানেই পড়াশোনা করেছি। পহেলগাঁওয়ের হত্যাকাণ্ডে আমি কেঁদেছি। ভারতকে ভালবাসার টানেই ফিরে এসেছিলাম। কিন্তু এখন ইরানে ফিরতে পারছি না। একমাত্র সড়কপথেই ফিরতে পারব। কিন্তু আমাকে সীমান্ত পার হতে দেওয়া হচ্ছে না।’’
আরও পড়ুন:
গত মঙ্গলবার জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে জঙ্গিদের হত্যালীলায় ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের মধ্যে ২৫ জনই পর্যটক এবং এক জন স্থানীয় বাসিন্দা। ওই হামলার দায়স্বীকার করে পাকিস্তানি জঙ্গিগোষ্ঠী লস্কর-এ-ত্যায়বার ছায়া সংগঠন ‘দ্য রেজ়িস্ট্যান্স ফোর্স’ (টিআরএফ)। যদিও পরে অবস্থান বদল করে তারা। সংবাদমাধ্যমের একাংশে প্রকাশ, ওই হামলায় পাকিস্তান থেকে আসা জঙ্গিরা জড়িত থাকতে পারে বলে সন্দেহ করছেন গোয়েন্দারা। মঙ্গলবারের ওই হত্যাকাণ্ডের পর পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একগুচ্ছ পদক্ষেপ করেছে ভারত। স্থগিত করে দেওয়া হয়েছে সিন্ধু জলচুক্তি। অটারী সীমান্তে ভারতের ‘ইন্টিগ্রেটেড চেক পোস্ট’ বন্ধও করে দেওয়া হয়েছে। যাঁরা বৈধ নথিতে এ দেশে এসেছেন, তাঁদের ১ মে’র মধ্যে একই পথে ভারত ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাকিস্তানিদের জন্য বাতিল করে দেওয়া হয়েছে ‘সার্ক’ ভিসাও। সেই আবহেই ভারত থেকে ইরানে ফিরতে গিয়ে সমস্যায় পড়লেন এলহাম।