কাশ্মীরের পর্যটন-শিল্পকে আরও চাঙ্গা করে তুলতে এই প্রথম সেখানে চালু হল চন্দ্রমল্লিকা ফুলের বাগান। আজ শ্রীনগরে ‘বাগ-এ-গুল-দাউদ’ নামে ওই বাগানটির উদ্বোধন করেন জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা। বিশেষজ্ঞেরা আশাবাদী, টিউলিপ ফুলের বাগান যে ভাবে পর্যটকদের মধ্যে অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে, আগামী দিনে বাগ-এ-গুল-দাউদও পর্যটকদের মধ্যে তেমনই জনপ্রিয় হয়ে উঠবে।
বর্তমানে উপত্যকায় রমরমিয়ে চলে টিউলিপ ফুলের প্রদর্শনী। তবে হেমন্তের পর থেকে আর বিশেষ কোনও ফুল এই হারে হয় না উপত্যকায়। এ ছাড়াও, পহেলগামে চলা জঙ্গি হামলার ঘটনার পর থেকে এখনও সে ভাবে লাভের মুখ দেখেনি উপত্যকার পর্যটন শিল্প। তা চাঙ্গা করে তুলতে অবশ্য ইতিমধ্যেই নানা প্রচেষ্টা চালাচ্ছে ওমর আবদুল্লা সরকার।
এরই মধ্যে শ্রীনগরের নেহরু মেমোরিয়াল বোটানিকাল গার্ডেনের এই বাগানটির উদ্বোধন হল। পাঁচ হেক্টর এলাকা জুড়ে তৈরি এই বিশেষ বাগানটিতে ৫০টিরও বেশি ধরনের চন্দ্রমল্লিকা চাষ করা হচ্ছে। ফুলগুলির গুণমান এবং চাষের পরিমাণ বাড়াতে সেখানকার বহু ফ্লোরিকাল্চারালিস্টই উদ্যোগী হয়েছেন। হেমন্তের শেষ এবং শীতের শুরুর দিকে ফুলগুলির দেখা মিলতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞেরা।
এ দিন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বহু সরকারি আধিকারিক এবং বিশিষ্ঠজনেরা। ফুলের প্রদর্শনী ছাড়াও এ দিন বেশ কিছু বাহারি গাছও ছিল প্রদর্শনীতে। সেখানে জানানো হয়েছে, কয়েকটি বিশেষ গাছের গায়ে কিউআর কোডও লাগানো থাকবে। তা স্ক্যান করলেই মিলবে ওই গাছের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য।
নেহরু মেমোরিয়াল বোটানিকাল গার্ডেনের কর্তৃপক্ষ মনে করছেন, যে ভাবে ২০০৭ সালে তৈরি টিউলিপ ফুলের বাগান রেকর্ড সংখ্যক পর্যটক টেনেছে এই বছর, চন্দ্রমল্লিকা ফুলের বাগানও আগামী দিনে তেমনই জনপ্রিয় হয়ে উঠবে। এই মরসুমেই ২০-৩০ লক্ষ পর্যটক হতে পারে সেখানে বলে আশাবাদী তাঁরা। সে ক্ষেত্রে ৫০০-৭০০ কোটি টাকার ব্যবসা হতে পারে। প্রসঙ্গত, চলতি বচরের মার্চ-এপ্রিল মাসে ৮.৫৫ লক্ষ পর্যটক টিউলিপের বাগান দেখতে এসেছিলেন। এখনও পর্যন্ত এটিই সেখানকার রেকর্ড সংখ্যক পর্যটক বলে ধরে নেওয়া হয়।
কাশ্মীরের লোককথায় চন্দ্রমল্লিকা ফুল প্রত্যাবর্তন এবং পুনর্নবীকরণের প্রতীক। মনে করা হয়, বহু শতাব্দী আগে সিল্ক রুট দিয়ে উপত্যকায় আনা হয়েছিল এই ফুলগুলি। উপত্যকার ব্যবসায়ী এবং স্থানীয়েরা আশাবাদী, পহেলগামের হামলার পর থেকে সে ভাবে লাভের মুখে না দেখলেও এই উদ্যোগের ফলে ঠিক ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন তাঁরাও।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)