দিল্লিতে বিস্ফোরণে জড়িত সন্দেহে একমাত্র ছেলে ও ভাইকে আটক করেছিল পুলিশ। সেই অপমানে এ বার গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করলেন জম্মু-কাশ্মীরের প্রৌঢ়। রবিবার দক্ষিণ কাশ্মীরের কাজিগুন্ডে ঘটনাটি ঘটেছে। আপাতত আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন তিনি।
জানা গিয়েছে, ওই ব্যক্তির নাম বিলাল আহমেদ ওয়ানি। ওয়ানপোরার বাসিন্দা বিলাল শুকনো ফল বিক্রি করে দিন গুজরান করেন। সব ঠিকই চলছিল। কিন্তু দিল্লিতে লালকেল্লার অদূরে বিস্ফোরণের পর পঞ্চাশোর্ধ্ব ওই প্রৌঢ়ের ভাই ও পুত্রকে আটক করে নিয়ে যায় পুলিশ। স্থানীয় সূত্রে খবর, সেই ঘটনার পর থেকে মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছিলেন বিলাল। রবিবার নিজের গায়ে পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন তিনি। গুরুতর দগ্ধ অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে শ্রীনগরের এসএমএইচএস হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, বিলালের অবস্থা বেশ আশঙ্কাজনক।
বিলালের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি তাঁর ২২ বছর বয়সি পুত্র জসিরকে ধরে নিয়ে যায় পুলিশ। তার দু’দিন পর বিলালের ভাই নাভিল ওয়ানিকেও আটক করা হয়। আত্মীয়স্বজনেরা জানিয়েছেন, এর পর থেকে গভীর উদ্বেগে ছিলেন ওই প্রৌঢ়। পুলিশের কাছে বার বার ছেলে ও ভাইয়ের সঙ্গে দেখা করার অনুমতিও চেয়েছিলেন। কিন্তু সেই সুযোগ মেলেনি। এর পরেই চরম পদক্ষেপ করে বসেন বিলাল।
আরও পড়ুন:
এই ঘটনাকে ঘিরে ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক চাপানউতর শুরু হয়ে গিয়েছে। সরব হয়েছেন জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি। ক্ষমতার অপব্যবহার এবং বাছবিচার না করেই যাকে-তাকে আটক করা নিয়ে প্রশাসনের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন তিনি। সমাজমাধ্যম এক্স-এ একটি পোস্টে মেহবুবা লিখেছেন, ‘‘কয়েক দিন আগে ছেলে এবং ভাইকে পুলিশ আটক করার পর ওয়ানপোরা কাজিগুন্ডের বাসিন্দা একজন পিতা বিলাল ওয়ানি নিজের গায়ে আগুন দিয়েছেন। পরিজনদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে তাঁদের সঙ্গে দেখা করার জন্য বার বার কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ জানিয়েছিলেন তিনি, কিন্তু সেই আবেদন শোনা হয়নি।’’ তবে এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত পুলিশের তরফে আনুষ্ঠানিক ভাবে কোনও বিবৃতি দেওয়া হয়নি।