এ বার কেরলে আত্মঘাতী এক বুথ লেভেল অফিসার (বিএলও)। পরিবার এবং পরিচিতিদের অভিযোগ, ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধনের (এসআইআর) কাজের চাপে মানসিক ভাবে বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছিলেন ওই বিএলও। সেই চাপ সহ্য করতে না-পেরেই চরম পদক্ষেপ করেছেন বলে দাবি তাঁর পরিবার এবং ঘনিষ্ঠদের। সেই মর্মে থানায় এফআইআরও দায়ের হয়েছে।
মৃত বিএলও-র নাম অনীশ জর্জ। পয়ান্নুরের এক সরকারি স্কুলে পিওনের কাজ করতেন তিনি। পুলিশ সূত্রে খবর, রবিবার তাঁর নিজের বাড়ি থেকে অনীশের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। তদন্তকারীদের প্রাথমিক অনুমান, আত্মহত্যা করেছেন তিনি। অনীশের আত্মহত্যার নেপথ্যে ‘এসআইআরের কাজের চাপ’কে দায়ী করছে তাঁর পরিবার।
এফআইআর অনুসারে, বিএলও হিসাবে এসআইআরের কাজ নিয়ে চাপে ছিলেন অনীশ। তাঁর ঘনিষ্ঠ শ্যাম নামে এক জনৈক জানান, এসআইআরে কাজ নিয়ে সব সময় চিন্তিত ছিলেন অনীশ। প্রায়ই কাজের চাপের কথা বলতেন। পরিবারের দাবি, শনিবার রাত ২টো পর্যন্ত এসআইআর সংক্রান্ত কাজ করেছিলেন তিনি। এনুমারেশন ফর্ম বাড়ি বাড়ি বিলি এবং তা পূরণ সংক্রান্ত কাজের জন্য তাঁর উপর চাপ ছিল।
আরও পড়ুন:
বাড়ি বাড়ি গিয়ে এনুমারেশ ফর্ম বিলির কাজ করছেন বুথ লেভেল অফিসারেরা (বিএলও)। কেরলের পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গেও এসআইআরের কাজ চলছে। সপ্তাহখানেক আগে পূর্ব বর্ধমানের মেমারিতে নমিতা হাঁসদা নামে এক বিএলও-র ব্রেনস্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়। মৃতার স্বামী মাধব হাঁসদার দাবি, এনুমারেশন ফর্ম বিলির জন্য লাগাতার চাপ দেওয়া হচ্ছিল। কাজের চাপে মানসিক ভাবে বিধ্বস্ত ছিলেন নমিতা। সেই চাপেই মৃত্যু হয় তাঁর।
আগামী ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত এসআইআর সংক্রান্ত ‘এনুমারেশন ফর্ম’ বিলি করবে নির্বাচন কমিশন। এই পর্বের মধ্যেই বিএলও-রা যাবেন ভোটারদের বাড়িতে বাড়িতে। ২০০২ সালের ভোটার তালিকাকে ‘সূচক’ ধরে এই কাজ শুরু করেছে কমিশন। ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিভিন্ন তথ্য সংবলিত ফর্ম জমাও নেওয়া হবে। তার পর ৯ ডিসেম্বর প্রাথমিক খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশিত হবে।
এসআইআর নিয়ে প্রথম থেকেই নির্বাচন কমিশনের বিরোধিতা করছে বিরোধী দলগুলি। বাংলায় যেমন তৃণমূল সরব হয়েছে, তেমন কেরলের শাসকদল সিপিআই(এম)। শুধু তা-ই নয়, কেরলের বিরোধী দল কংগ্রেসও এসআইআরের বিরোধিতা করছে। স্থানীয় কংগ্রেস নেতা রিজিল মাক্কুট্টি জানান, বিজেপির এজেন্ডা পূরণ করার জন্য নির্বাচন কমিশন বিএলও-দের উপর যে চাপ সৃষ্টি করছে, তারই পরিণতির শিকার অনীশ।