বিহারের বিধানসভা ভোটে ২৪৩ আসনের সবক’টিতেই প্রার্থী দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন তিনি। প্রাক্তন ভোটকুশলী তথা জন সুরাজ পার্টির প্রতিষ্ঠাতা-প্রধান প্রশান্ত কিশোর (পিকে নামেই যিনি পরিচিত) বৃহস্পতিবার প্রথম দফায় ৫১টি আসনে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করলেন। তবে পিকে নিজে ভোটে লড়বেন কি না, তা স্পষ্ট করেনি তাঁর দল।
জন সুরাজ পার্টির বিশিষ্ট প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন জনপ্রিয় ভোজপুরি গায়ক রীতেশরঞ্জন পান্ডে। তিনি রোহতাস জেলার কারগাহর বিধানসভা আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। তালিকায় রয়েছেন, পরিচিত কয়েক জন চিকিৎসক, আইনজীবী এমনকি, প্রাক্তন আমলাও। তৃতীয় লিঙ্গের প্রতিনিধি প্রীতি কিন্নর ভোটে লড়বেন গোপালগঞ্জের ভোরে আসন থেকে। দলের সর্বভারতীয় সভাপতি উদয় সিংহ প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করে বলেন, ‘‘আমরা শীঘ্রই অন্যান্য আসনের প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করব। ১১ অক্টোবর আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদবের নির্বাচনী এলাকা রাঘোপুর থেকে প্রশান্ত কিশোর প্রচার শুরু করতে পারেন।’’
কিন্তু পিকে নিজে ভোটে লড়বেন কি? উদয়ের উত্তর, ‘‘যদি আপনারা তালিকায় কিশোরজির নাম পান, তা হলে তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।’’ সরাসরি রাজনীতির ময়দানে নামার আগে পিকে কাজ করেছেন ‘পর্দার পিছনে’। প্রথাগত রাজনীতিকদের থেকে তাঁর কাজের ধরন আলাদা। ফলে এ ক্ষেত্রে প্রাক্তন ভোটকুশলীর ‘আস্তিনে লুকনো তাস’ রয়েছে কি না, তা নিয়ে শুরু হয়েছে জল্পনা। প্রসঙ্গত, প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে পিকের পদ্ধতিও অন্যান্য দলের চেয়ে পৃথক বলে তাঁর দলের দাবি। একেবারে তৃণমূল স্তরে কর্মীদের মতামত নিয়ে প্রার্থী বাছা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জন সুরাজ পার্টির নেতারা। বিহারের ২৪৩টি বিধানসভা কেন্দ্রে দু’দফায় প্রতিনিধিদল পাঠিয়েছেন পিকে (বস্তুত, সেই প্রক্রিয়া সব আসনে এখনও শেষ হয়নি)। দলের দুই কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক, সংশ্লিষ্ট জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা ও জেলা সভাপতি থাকছেন সেই দলে। তাঁদের উপস্থিতিতে প্রতি বিধানসভা কেন্দ্রে সম্মেলনে ব্লক, পঞ্চায়েত ও বুথ স্তর থেকে কর্মীদের ডাকা হচ্ছে।
যুব, কৃষক, সংখ্যালঘু, তফসিলি, অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণি (ওবিসি) শাখাকেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে প্রার্থী মনোনয়নের এই প্রক্রিয়ায়। কর্মীরা মৌখিক ও লিখিত ভাবে সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম ও তাঁকে বেছে নেওয়ার কারণ জানিয়েছেন। আর যাঁরা আগেই প্রার্থী হতে চেয়েছেন, তাঁদের আবেদনও যাচাই করে নেওয়া হয়েছে কেন্দ্রভিত্তিক বৈঠকে। এক একটি কেন্দ্রে দু’বার করে সম্মেলনে কর্মীদের মুখোমুখি হয়ে প্রাথমিক প্রার্থী তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। পরের পর্যায়ে হয়েছে কেন্দ্রীয় স্তুরে চূড়ান্ত পর্বের ঝাড়াই-বাছাই। জন সুরাজ পার্টির রাজ্য সভাপতি মনোজ ভারতী এবং রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কিশোর কুমার এই প্রক্রিয়া দেখভাল করছেন বলে দলীয় সূত্রের খবর।
আরও পড়ুন:
নির্বাচন কমিশন গত ৬ অক্টোবর নির্ঘণ্ট ঘোষণা করে জানিয়েছে, এ বার বিহারে দু’দফায় ভোট হবে। প্রথম দফার নির্বাচন হবে ৬ নভেম্বর। ওই দফায় ১২১টি বিধানসভা কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ হবে। ১০ অক্টোবর সেই সংক্রান্ত গেজেট বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হবে। ১৭ অক্টোবর পর্যন্ত মনোনয়ন জমা করা যাবে। তা যাচাইয়ের জন্য ১৮ তারিখ অবধি সময় পাওয়া যাবে। প্রার্থীরা নাম প্রত্যাহার করতে পারবেন ২০ অক্টোবর পর্যন্ত। দ্বিতীয় দফার ভোটগ্রহণ হবে ১১ নভেম্বর। দ্বিতীয় দফায় মোট ১২২টি আসনে ভোটগ্রহণ হবে। ওই দফার গেজেট বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হবে ১৩ অক্টোবর। ২০ অক্টোবর পর্যন্ত মনোনয়ন জমা করা যাবে। ২৩ অক্টোবর পর্যন্ত প্রার্থীরা চাইলে নাম তুলে নিতে পারবেন। ভোটগণনা হবে ১৪ নভেম্বর।