Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
jet airways

আজ রাত থেকেই বন্ধ হয়ে গেল জেট এয়ারওয়েজের সব উড়ান

টাকার অভাবেই উড়ান বন্ধের সিদ্ধান্ত বলে জানানো হয়েছে সংস্থার তরফে। গত জানুয়ারি পর্যন্ত ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তম বিমান সংস্থা ছিল জেট।

বুধবার রাত থেকেই সব উড়ান বন্ধ হয়ে গেল জেট এয়ারওয়েজের। ফাইল চিত্র।

বুধবার রাত থেকেই সব উড়ান বন্ধ হয়ে গেল জেট এয়ারওয়েজের। ফাইল চিত্র।

সংবাদ সংস্থা
মুম্বই শেষ আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০১৯ ২১:১৩
Share: Save:

আপাতত সব উড়ান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিল জেট এয়ারওয়েজ। টাকার অভাবেই এই সিদ্ধান্ত বলে জানানো হয়েছে সংস্থার তরফে। গত জানুয়ারি পর্যন্ত ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তম বিমান সংস্থা ছিল জেট।

যেখানে দিনে একশোর ওপর উড়ান চালানো হত, সেখানে গত কয়েক দিন ধরে দিনে মাত্র ৩৫-৪০টি বিমান চালাচ্ছিল জেট এয়ারওয়েজ। ফলে সম্ভাব্য বিনিয়োগকারীদের কাছে জেট এয়ারওয়েজের সার্বিক ভাবমূর্তিটাই খারাপ হচ্ছিল। মঙ্গলবার এমন খবরও ছড়িয়ে পড়ে যে, খুব শীঘ্রই বন্ধ হয়ে যাচ্ছে জেট এয়ারওয়েজ। ফলে শেয়ার বাজারে এক সময় জেটের দর ২০ শতাংশ পড়ে যায়। দিনের শেষে কিছুটা উন্নতি হলেও মোটের ওপর ৮ শতাংশ পড়ে শেয়ার। শেয়ার প্রতি দর ২৪২ টাকায় দাঁড়ায়।

জেট এয়ারওয়েজ যদি দ্রুত দৈনিক উড়ান সংখ্যা না বাড়ায় তবে লাইসেন্স পর্যন্ত বাতিল হয়ে যেতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে এ বিষয়ে অ্যাভিয়েশন রেগুলেটরি কিছু বলেনি।

সংস্থার দৈনন্দিন খরচ চালাতে ঋণদাতাদের কাছে ফের একবার ঋণ চায় জেট এয়ারওয়েজ। কিন্তু মঙ্গলবার সেই আবেদন খারিজ হয়ে যায়। জেট এয়ারওয়েজের সিইও বিনয় দুবে সংস্থার তরফে ৪০০ কোটি টাকা ঋণ চান। কিন্তু ব্যাঙ্কগুলি তা দিতে অস্বীকার করে। ফলে আপাতত আর কোনও রাস্তা খোলা থাকল না।

সংস্থার এক আধিকারিক জানিয়েছেন, তাঁরা আপাতত সংস্থার কর্মী ও কিছু অতিথিদের দেখভালের দিকেই নজর দিচ্ছেন। জানুয়ারি মাস থেকেই জেট এয়ারওয়েজ কর্মীদের বেতন দিতে পারছিল না। ব্যাঙ্কের ঋণের কিস্তিও বাকি পড়ছিল জানুয়ারি থেকে। ফলে দৈনন্দিন উড়ান পরিষেবা চালু রাখার জন্য যে অর্থের প্রয়োজন তাতে টান পড়ছিল। তাই শেষ পর্যন্ত উড়ান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তই নিতে হল জেট এয়ারওয়েজকে।

ইতিমধ্যেই নিলামের জন্য কয়েকটি বিমান সংস্থা ও বিনিয়োগকারী সংস্থাকে বেছে নিয়েছে জেট এয়ারওয়েজের ঋণদাতা সংস্থাগুলি। আগামী ১০ মে-র মধ্যে তাদের দরপত্র জমা দিতে হবে। গোটা নিলাম প্রক্রিয়া যথেষ্ট লম্বা হতে পারে। ফলে সংস্যা আরও বাড়তে পারে জেট এয়ারওয়েজের।

ভারতের এখন যে কটি বেসরকারি বিমান সংস্থা রয়েছে, জেট তাদের মধ্যে সব থেকে পুরনো। ১৯৯৩ সাল থেকে যাত্রা শুরু করে জেট। কিন্তু এয়ার সাহার, কিংফিশার এয়ারলাইন্স ও ইন্ডিগো, স্পাইস জেটের মতো কয়েকটি সস্তার উড়ান সংস্থা এসে পড়ায় ২০০০ সাল থেকে তীব্র প্রতিযোগিতার মধ্যে পড়ে যখন জেট এয়ারওয়েজ।

আরও পড়ুন : জল্পনার জট সঙ্কট বাড়াচ্ছে জেটের

আরও পড়ুন : জেট এয়ারওয়েজের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করলেন নরেশ গয়াল

২০০৭ সালে ২০৫০ কোটি টাকায় এয়ার সাহার কেনে নেয় জেট এয়ারওয়েজ। তার পরেই সমস্যা আরও বড় আকার নেয়। খরচ, করের বোঝা বাড়তে থাকে। আইনি জটিলতা, কর্মী সংখ্যা নিয়েও দিন দিন সমস্যা বাড়ে। ফলে কিছুটা অক্সিজেন পেতে ২০১৩ সালে এতিহাদকে ৩৭৯ মিলিয়ন ডলারে ২৪ শতাংশ মালিকানা বিক্রি করে জেট এয়ারওয়েজ।

গত বছর মার্চ থেকে কর্মীরা নিয়মিত বেতন পাচ্ছিলেন না। সংস্থার উচ্চ আধিকারিকদের বেতনে ২৫ শতাংশ কমিয়ে দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে কমতে থাকে উড়ান সংখ্যা। শেষ পর্যন্ত বুধবার সংস্থার তরফে জানিয়ে দেওয়া হল আপাতত স্থগিত রাখা হচ্ছে সব উড়ান পরিষেবা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

jet airways etihad flight
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE