গুহাবাসী সেই রাশিয়ান মহিলাকে সন্তানদের নিয়ে দেশে ফেরার অনুমতি দিল আদালত। কেন্দ্রীয় সরকারকে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার নির্দেশ দিয়েছে কর্নাটক হাই কোর্ট। গত ১১ জুলাই কর্নাটকের গোকর্ণে এক গুহা থেকে উদ্ধার করা হয় নিনা কুটিনা নামে এক রাশিয়ান মহিলা এবং তাঁর দুই কন্যা সন্তানকে। কুটিনার দুই সন্তানই নাবালক। এর আগে ওই রুশ পরিবারের ‘ডিপোর্টেশন’ (দেশ থেকে বিতাড়ন) প্রক্রিয়ার উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিয়েছে হাই কোর্ট। তবে শুক্রবার ওই পরিবারকে নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর অনুমতি দিয়েছে আদালত।
কুটিনা এবং তাঁর সন্তানদের ভারত থেকে বিতাড়ন ঠেকাতে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন দ্রর শ্লমো গোল্ডস্টাইন নামে এক ইজ়রায়েলি নাগরিক। তাঁর দাবি, তিনিই কুটিনার দুই সন্তানের পিতা। দুই নাবালিকাকে যাতে এখনই ভারত থেকে বিতাড়িত করা না-হয়, সেই আর্জি জানিয়েছিলেন তিনি হাই কোর্টে। বিচারপতি বিএম শ্যামপ্রসাদের বেঞ্চে ওই মামলার শুনানি চলছিল। আদালতে গোল্ডস্টাইন জানান, সন্তানদের খুঁজে না-পেয়ে গত বছরের ডিসেম্বরে গোয়ার পানাজির এক থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেছিলেন তিনি। এ দিকে কুটিনাকে উদ্ধারের পরে তদন্তে উঠে আসে, প্রায় দু’মাস ধরে গোকর্ণের ওই গুহায় দুই কন্যাকে নিয়ে বাস করছিলেন মহিলা। তাঁর কাছে ভারতে থাকার কোনও বৈধ নথিও ছিল না।
শুক্রবারের শুনানিতে আদালতে জানানো হয়, রাশিয়ার কনস্যুলেট থেকে ইতিমধ্যে কুটিনা এবং তাঁর কন্যাদের জন্য জরুরি ভ্রমণ নথি (ইমার্জেন্সি ট্রাভেল পেপার্স) জারি করা হয়েছে। আগামী ৯ অক্টোবর পর্যন্ত ওই নথি বৈধ রয়েছে। তা ছাড়া কুটিনা নিজেও কনস্যুলেটে জানিয়েছেন, তিনি যত দ্রুত সম্ভব রাশিয়ায় ফিরে যেতে চান। এ অবস্থায় ওই মহিলা এবং তাঁর দুই কন্যাকে রাশিয়ায় ফেরার অনুমতি দিয়েছে আদালত। একই সঙ্গে হাই কোর্ট এ-ও জানিয়েছে, উদ্ধার হওয়ার আগে পর্যন্ত কুটিনা কেন সন্তানদের নিয়ে গুহায় বাস করছিলেন, তা নিয়ে সন্তোষজনক কোনও ব্যাখ্যা দিতে পারেননি গোল্ডস্টাইন।
আরও পড়ুন:
বস্তুত এই মামলায় কুটিনার দ্বিতীয় কন্যার পরিচয় নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছিল। তাঁর বড় মেয়ের থেকে নথিপত্র পাওয়া গেলেও ছোট মেয়ের জন্ম শংসাপত্র বা পাসপোর্ট বা অন্য কোনও সরকারি নথি পাননি তদন্তকারীরা। এ অবস্থায় ওই নাবালিকা কুটিনারই সন্তান কি না, তা নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছিল। শুক্রবার কেন্দ্রের তরফে আদালতে জানানো হয়, কুটিনার দ্বিতীয় কন্যার ডিএনএ পরীক্ষার রিপোর্ট ইতিমধ্যে প্রশাসনের হাতে এসেছে। তা রাশিয়ান কর্তৃপক্ষকে জানানোও হয়েছে। ওই নথির ভিত্তিতেই রাশিয়ার তরফে কুটিনার ছোট মেয়েকে নাগরিকত্বের নথি দেওয়া হয়। সব দিক বিবেচনা কুটিনাকে দুই কন্যাকে নিয়ে নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছে আদালত।