Advertisement
E-Paper

রে‌জ়র, স্ট্র, মোবাইলের আলো! কেরলে রাস্তার উপরেই পথদুর্ঘটনায় আহতের অস্ত্রোপচার করলেন তিন চিকিৎসক

রবিবার রাতে এর্নাকুলামের উদয়মপেরুরে একটি পথদুর্ঘটনা ঘটে। মাঝরাস্তায় মুখোমুখি সংঘর্ষ হয় দুই বাইকের। গুরুতর জখম হন তিন জন।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫ ১৪:৫১
মোবাইলের আলোয় রাস্তায় অস্ত্রোপচার করলেন তিন চিকিৎসক।

মোবাইলের আলোয় রাস্তায় অস্ত্রোপচার করলেন তিন চিকিৎসক। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

ঠিক যেন বলিউড ছবি ‘থ্রি ইডিয়ট্‌স’-এর দৃশ্য! হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার উপায় না থাকায় রাস্তার উপরেই দুর্ঘটনায় আহত এক ব্যক্তির অস্ত্রোপচার করলেন তিন চিকিৎসক। সম্বল বলতে কেবল দাড়ি কামানোর ব্লেড, একটি প্লাস্টিকের স্ট্র আর মোবাইলের ফ্ল্যাশলাইট! মাত্র তিনটি জিনিস দিয়েই চলল অস্ত্রোপচার। সম্প্রতি কেরলের এর্নাকুলামে ঘটনাটি ঘটেছে। খবর প্রকাশ্যে আসতেই তিন চিকিৎসকের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়েছেন সকলে।

সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস-এর প্রতিবেদন সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার রাতে এর্নাকুলামের উদয়মপেরুরে একটি পথদুর্ঘটনা ঘটে। মাঝরাস্তায় মুখোমুখি সংঘর্ষ হয় দুই বাইকের। গুরুতর জখম হন তিন জন। সে সময় কোট্টয়ম সরকারি মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসক বি মনুপ, ইন্দিরা গান্ধী সমবায় হাসপাতালের চিকিৎসক টমাস পিটার ও তাঁর স্ত্রী দিদিয়া ওই এলাকা দিয়েই যাচ্ছিলেন। দুর্ঘটনা ঘটতে দেখে দাঁড়িয়ে পড়েন তাঁরা। দুর্ঘটনাগ্রস্তদের মধ্যে এক জনের অবস্থা ছিল বেশ আশঙ্কাজনক। ফিনকি দিয়ে বেরোতে থাকা রক্তে তাঁর শ্বাসনালী বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। তাঁকে বাঁচানোর জন্য রাস্তার মাঝেই অস্ত্রোপচারের তোড়জোড় শুরু করে দেন তিন চিকিৎসক।

অপারেশন থিয়েটার না থাকায় হাতের কাছে থাকা জিনিস দিয়েই শুরু হয় অস্ত্রোপচার। স্থানীয় একটি দোকান থেকে কিনে আনা হয় দাড়ি কামানোর ব্লেড এবং কাগজের স্ট্র। সেই ব্লেড দিয়ে সন্তর্পণে কাটা হয় শ্বাসনালী। তার পর বিকল্প শ্বাসনালী তৈরির জন্য ঢোকানো হয় স্ট্র। ডাক্তারি পরিভাষায় যাকে বলা হয় ক্রিকোথাইরোটমি। কাগজের স্ট্রয়ে কাজ না হওয়ায় কর্তব্যরত ট্র্যাফিক পুলিশ একটি প্লাস্টিকের স্ট্র খুঁজে এনে দেন। সেটি দিয়েই কোনও মতে রোগীকে কিছু ক্ষণ জিইয়ে রাখার ব্যবস্থা করেন তিন চিকিৎসক। মনুপের কথায়, ‘‘ওই ব্যক্তি ‘রেড ক্যাটাগরি’ রোগী ছিলেন। তাঁর শ্বাসনালী আটকে শ্বাসপ্রশ্বাস প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। হাসপাতালে নিয়ে যেতে গেলে অনেক দেরি হয়ে যেত। তাই কোনও বিকল্প না পেয়ে এই পদ্ধতি নিতে হয়েছিল আমাদের।’’

এর পর ওই রোগীর অবস্থা সামান্য স্থিতিশীল হলে তাঁকে অ্যাম্বুলেন্সে করে হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। গোটা প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হয় মোবাইলের ফ্ল্যাশলাইটের আলোয়! সহযোগিতা করেন স্থানীয়েরাও। যদিও এত করেও শেষরক্ষা হয়নি। চিকিৎসাধীন অবস্থায় দু’দিন পর মৃত্যু হয় ওই ব্যক্তির।

তবে চিকিৎসকদের প্রশংসায় পঞ্চমুখ কেরলের রাজ্যপাল রাজেন্দ্র বিশ্বনাথ আরলেকার। রাজভবনের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ঘটনার খবর পাওয়ামাত্রই আলাদা করে ওই তিন চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলেছেন রাজ্যপাল। তাঁদের প্রত্যুৎপন্নমতিত্বের প্রশংসাও করেছেন তিনি।

Kerala Doctors Accident Surgery
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy