সন্তানদের কোলে নিয়ে চলন্ত ট্রেনের সামনে ঝাঁপ দিলেন বাবা! শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত বাঁচার জন্য প্রাণপণ চিৎকার করেও পালাতে পারল না চার শিশু। মঙ্গলবার এমনই মর্মান্তিক দৃশ্যের সাক্ষী হয়ে রইল হরিয়ানার ফরিদাবাদ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার ফরিদাবাদে ট্রেনের ধাক্কায় ৪৫ বছর বয়সি এক ব্যক্তি ও তাঁর চার শিশুপুত্রের মৃত্যু হয়েছে। নিহত ব্যক্তি পেশায় শ্রমিক। শিশুদের সকলেরই বয়স তিন থেকে নয় বছরের মধ্যে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন, মঙ্গলবার বেলা ১২টা ৫৫ মিনিট নাগাদ আচমকা চার পুত্রকে নিয়ে চলন্ত ট্রেনের সামনে দাঁড়িয়ে পড়েন বাবা। প্রাণভয়ে চিৎকার করলেও শেষ মূহূর্ত পর্যন্ত বাবা সন্তানদের শক্ত করে রেললাইনে চেপে রেখেছিলেন, যাতে তারা পালাতে না পারে। কয়েক মুহূর্তের মধ্যেই ট্রেনের ধাক্কায় ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় সকলের দেহ।
আরও পড়ুন:
পুলিশ সূত্রে খবর, নিহতদের নাম মনোজ মাহাতো (৪৫), পবন (১০), কারু (৯), মুরলি (৫) এবং ছোটু (৩)। অভিযোগ, স্ত্রী প্রিয়ার সঙ্গে প্রায়ই ঝগড়া হত বিহারের বাসিন্দা মনোজের। মঙ্গলবার সকালেও স্ত্রীর সঙ্গে মনোমালিন্য হওয়ায় চার ছেলেকে নিয়ে বাড়ি ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন মনোজ। তিনি সন্তানদের বলেন, তাদের পার্কে ঘুরতে নিয়ে যাচ্ছেন। পথে চিপ্স এবং ঠান্ডা পানীয়ও কিনে দেন। কিন্তু পার্কে যাওয়ার বদলে তাদের নিয়ে সোজা রেললাইনে চলে যান মনোজ। এর পর প্রায় এক ঘণ্টা ধরে রেললাইনের কাছে একটি উড়ালপুলের নিচে ট্রেনের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় পাঁচ জনকে। ওই সময় স্বর্ণমন্দির এক্সপ্রেস স্টেশন পেরোচ্ছিল। দূর থেকে ট্রেন আসতে দেখেই সন্তানদের নিয়ে রেললাইনের উপর দাঁড়িয়ে পড়েন ওই যুবক।
প্রত্যক্ষদর্শীদের কথায়, ওই যুবক চার ছেলেকেই শক্ত করে ধরে রেখেছিলেন। আতঙ্কিত শিশুদের চিৎকার সত্ত্বেও বাবা তাদের ছাড়েননি। এর পরেই ট্রেন এসে পাঁচ জনকে ধাক্কা মেরে চলে যায়। মনোজের পকেট থেকে তাঁর স্ত্রীর ফোন নম্বর এবং একটি চিরকুট খুঁজে পেয়েছে পুলিশ। রেলওয়ে পুলিশের আধিকারিক রাজপাল বলেন, ‘‘প্রাথমিক তদন্তে মনে হচ্ছে, মনোজের সন্দেহ ছিল তাঁর স্ত্রী পরকীয়ায় লিপ্ত। সম্ভবত সেই রাগ থেকেই এমন চরম পদক্ষেপ করেছেন তিনি।’’