পাঁচ বছর আগে বিহার বিধানসভা ভোটে মহাগঠবন্ধনের শরিক হয়ে উল্লেখযোগ্য ফলাফল করেছিল বাম দলগুলি। তার মধ্যে নজরকাড়া উত্থান হয়েছিল সিপিআই (এমএল) লিবারেশনের। এ বারের বিহার ভোটে সেই বামেরা কার্যত মুখ থুবড়ে পড়ল। ১৬ আসন থেকে বাম দলগুলির আসন নেমে গেল তিনটিতে। যাকে ‘অস্বাভাবিক ফলাফল’ বলে অভিহিত করেছেন লিবারেশনের সাধারণ সম্পাদক দীপঙ্কর ভট্টাচার্য।
গত নির্বাচনে বিহারে ১৯টি আসনে লড়েছিল লিবারেশন। জিতেছিল ১২টিতে। সিপিআই এবং সিপিএম দু’টি করে আসন জিতেছিল। এ বার সেই লিবারেশন ২১টিতে লড়ে জিততে পেরেছে মাত্র দু’টিতে। বিভূতিপুর আসন থেকে জিতেছেন সিপিএম প্রার্থী অজয় কুমার। সিপিআই কোনও আসন জিততে পারেনি। মহাগঠবন্ধনও যে ভাবে ধাক্কা খেয়েছে, তার শরিক হিসাবে বামেরাও ভিন্ন কিছু করতে পারেনি।
দীপঙ্করের বক্তব্য, ‘‘২০২০ সালের বিধানসভা ভোট এবং ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে যা ফলাফল হয়েছিল, তার সঙ্গে এই ভোটের ফলাফলের কোনও সামঞ্জস্য নেই।’’ তাঁর কথায়, ‘‘আমি মনে করি না এটা বিরোধী জোটের সঙ্কট। তার চেয়েও বেশি এটা গণতন্ত্রের সঙ্কট।’’ বস্তুত, দ্রুত কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছোতে চান না অতিবাম দলের বাঙালি সাধারণ সম্পাদক। তাঁর বক্তব্য, ভারতের সংসদীয় রাজনীতির ইতিহাসে এই রকম নির্বাচনী ফলাফল কখনও দেখা যায়নি। ২০ বছরের শাসনের বিরুদ্ধে মানুষের মেজাজ, রাস্তার লড়াইয়ের কোনও প্রতিফলন ভোটে দেখা যায়নি। তাই এই ফলকে ‘অস্বাভাবিক’ বলছেন দীপঙ্কর। কেন এমন হল? আনুষ্ঠানিক ভাবে না বললেও দীপঙ্কর ঠারেঠোরে বুঝিয়েছেন, শেষ দু’মাসে যে ভাবে সরকারের পক্ষ থেকে ৩০ হাজার কোটি টাকা তিন কোটি মানুষকে নগদ দেওয়া হয়েছে, তা আসলে ঘুরিয়ে ভোট কেনার নামান্তর।
জোটের বিপর্যয় না-বললেও দীপঙ্কর মেনে নিয়েছেন, এসআইআরের বিরুদ্ধে ভোটার অধিকার যাত্রায় মানুষের যে সাড়া মহাগঠবন্ধন পেয়েছিল, তা ধরে রাখা যায়নি। আসন সমঝোতা নিয়ে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত টানাপড়েনও যে ফলাফলে প্রভাব ফেলেছে, তা-ও মানছেন দীপঙ্কর। তবে এগুলিকে তিনি ‘গৌণ’ কারণ হিসাবে উল্লেখ করেছেন।