Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
National News

মহাজোটে ধাক্কা! উত্তরপ্রদেশে একা লড়ে ৮০ আসনেই প্রার্থী দেবে কংগ্রেস, প্রচারে রাহুলের ১৩ সভা

দলীয় সূত্রে খবর, ফেব্রুয়ারি মাসে এই সভাগুলি শুরু হবে পশ্চিমাঞ্চল দিয়ে। দলীয় সূত্রে খবর, প্রথম ধাপে রাহুল সভা করবেন হাপুর, মোরাদাবাদ, সাহারানপুরে। 

উত্তরপ্রদেশে ৮০টি আসনেই প্রার্থী দেবে দল, প্রচারে ১৩টি সভা করবেন রাহুল গাঁধী। —ফাইল চিত্র

উত্তরপ্রদেশে ৮০টি আসনেই প্রার্থী দেবে দল, প্রচারে ১৩টি সভা করবেন রাহুল গাঁধী। —ফাইল চিত্র

সংবাদ সংস্থা
লখনউ শেষ আপডেট: ১৩ জানুয়ারি ২০১৯ ১৫:০৬
Share: Save:

বুয়া-বাবুয়ার জোট ঘোষণার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই প্রশ্নের মুখে মহাজোটের ভবিষ্যৎ। উত্তরপ্রদেশে ‘একলা চলো’ নীতিতে লোকসভা ভোটে যাওয়ার ঘোষণা করে দিল কংগ্রেস। দলীয় সূত্রে খবর, রাজ্যের ৮০টি আসনেই প্রার্থী দিতে চলেছে কংগ্রেস। খোদ দলীয় সভাপতিই এই ইঙ্গিত দিয়েছেন। পাশাপাশি উত্তরপ্রদেশে মোট ১৩টি নির্বাচনী সভা করবেন রাহুল গাঁধী। আজ রবিবারই দলের নেতা গুলাম নবি আজাদ এবং উত্তরপ্রদেশের কংগ্রেস সভাপতি রাজ বব্বর বৈঠক করে রাহুলের সভার স্থান ঠিক করবেন। ফলে উত্তরপ্রদেশে বিজেপি, অখিলেশ-মায়াবতী জোট এবং কংগ্রেস— এই ত্রিমুখী লড়াই কার্যত নিশ্চিত।

শনিবার অখিলেশ-মায়াবতী জোট ঘোষণার পরই অবশ্য ইঙ্গিত দিয়েছিলেন রাহুল গাঁধী। দুবাইয়ে বসে সপা-বসপা জোটকে স্বাগত জানিয়েও বলেছিলেন, ‘‘দু’দলের নেতা-নেত্রীর প্রতি আমার গভীর শ্রদ্ধা রয়েছে। ওঁদের অধিকার আছে নিজেদের মতো সিদ্ধান্ত নেওয়ার। কিন্তু উত্তরপ্রদেশের মানুষের জন্য কংগ্রেসেরও অনেক কাজ করার রয়েছে। আমরা নিজেদের মতো লড়াই করব।’’

খোদ দলীয় সভাপতির কাছে এই ইঙ্গিত পেয়েই কার্যত যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে প্রস্তুতি শুরু করে দেয় কংগ্রেস। তাতে ঠিক হয়, উত্তরপ্রদেশের সবকটি আসনেই আলাদা প্রার্থী দেবে কংগ্রেস। প্রচার রাহুল গাঁধী সভা করবেন অন্তত ১৩টি জায়গায়। প্রাথমিক আলোচনায় সেই সভার ব্লু প্রিন্টও কার্যত তৈরি। দলীয় সূত্রে খবর, ফেব্রুয়ারি মাসে এই সভাগুলি শুরু হবে পশ্চিমাঞ্চল দিয়ে। দলীয় সূত্রে খবর, প্রথম ধাপে রাহুল সভা করবেন হাপুর, মোরাদাবাদ, সাহারানপুরে। এই ব্লু প্রিন্ট বিশ্লেষণ করে আজ রবিবারই কংগ্রেস নেতা গুলাম নবি আজাদ এবং উত্তরপ্রদেশের কংগ্রেস সভাপতি রাজ বব্বর রাজ্যের অন্যান্য নেতা-নেত্রীদের নিয়ে বৈঠক করে সভার দিন এবং জায়গা চূড়ান্ত করবেন।

জল্পনা শুরু হয়েছিল ডিসেম্বরে রাজস্থান ও মধ্যপ্রদেশ বিধানসভায় কংগ্রেসের জয়ের পর। অখিলেশ যাদবের সমাজবাদী পার্টি (সপা)এবং মায়াবতীর বহুজন সমাজ পার্টি (বসপা) কংগ্রেসকে সমর্থন করে দুই রাজ্যেই। তার পর থেকেই রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করছিলেন, উত্তরপ্রদেশে কংগ্রেস এবং সপা-বসপা জোট করে বিজেপির বিরুদ্ধে দ্বিমুখী লড়াইয়ে নামতে পারে। পাশাপাশি উত্তরপ্রদেশের সমীকরণেই বিভিন্ন রাজ্যে কার্যত বিজেপি বিরোধী দলগুলি একজোট হয়ে লড়াই করতে পারে বলেও সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছিল।

আরও পড়ুন: বিজেপির বিরুদ্ধে জোর প্রচারে নামছে সপা-বসপা জোট, এক সঙ্গে ২০টি সমাবেশ ১৮ ডিভিশনে

কিন্তু সঙ্কট শুরু হয় সপা-বসপা আলাদা ভাবে জোট ঘোষণা করে দেওয়ায়। শনিবারই অখিলেশ-মায়াবতী যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে জোটের ঘোষণা করে আসন বণ্টনের ছকও প্রকাশ করেন। দু’দলই আটত্রিশটি করে আসনে লড়বে বলে জানানো হয়। কংগ্রেসের জন্য শুধুমাত্র অমেঠী এবং রায়বরেলি আসন ছাড়ে সপা-বসপার জোট। আর এতেই সমঝোতার প্রশ্নে চিড় ধরে। উত্তরপ্রদেশের কংগ্রেস নেতাদের তরফেও হাই কমান্ডে দাবি জানানো হয়, দলের জন্য মাত্র দু’টি আসন ছেড়ে দিয়ে কার্যত ‘অপমান’ করা হয়েছে। উত্তরপ্রদেশ কংগ্রেসের অন্দরেও শুরু হয় তোলপাড়।

অখিলেশ-মায়াবতীর শর্তে জোটে গেলে কংগ্রেসে রাজ্য থেকে আর কেউ টিকিট পেতেন না। কারণ লোকসভায় রায়বরেলিতে সনিয়া গাঁধী এবং অমেঠীতে রাহুল ভোটে লড়ে বহু বছর ধরে জিতে আসছেন। এবারও ওই দুই কেন্দ্র থেকেই মা-ছেলের প্রার্থী হওয়ার সম্ভাবনা। কারণ মায়া-অখিলেশের শর্তে রাজি হলে কার্যত ওই জোটের কাছে বশ্যতা স্বীকার করতে হত কংগ্রেসকে। তাতে রাজ্য নেতৃত্বের মধ্যে বিপুল ক্ষোভের সঞ্চার হত। এই পরিস্থিতিতে রাহুলের কাছে ‘একলা চলো’ ছাড়া আর কোনও বিকল্প ছিল না, মত রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের।

আরও পডৃ়ুন: আর যেন ‘বন্ধু দেশে’র মর্যাদা না পায় পাকিস্তান, বিল পেশ মার্কিন কংগ্রেসে

দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি লোকসভার আসন এই উত্তরপ্রদেশেই। কেন্দ্রে ক্ষমতায় আসার ক্ষেত্রে গো-বলয়ের এই রাজ্যে প্রাপ্ত আসন সংখ্যা বড় ‘ফ্যাক্টর’ হয়ে দাঁড়ায়। ফলে লোকসভা ভোটে এই রাজ্যের রাজনৈতিক সমীকরণের উপর বরাবরই আলাদা গুরুত্ব দেন নির্বাচনী পর্যবেক্ষকরা। রাজস্থান-মধ্যপ্রদেশের ভোটের পর বিজেপি বিরোধীদের ‘মহাজোট’ গড়ার যে ব্যাপক জল্পনা শুরু হয়েছিল, সপা-বসপা এবং কংগ্রেসের এই ঘোষণায় সেটা বড়সড় ধাক্কা খেল বলেই মত রাজনৈতিক শিবিরের। শুধু তাই নয়, এর প্রভাবে অন্য রাজ্যেও কংগ্রেসের সঙ্গে আঞ্চলিক দলগুলির জোটের সম্ভাবনায় অনেকটাই নেতিবাচক প্রভাব ফলবে বলেও মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একটা বড় অংশ।

(ভারতের রাজনীতি, ভারতের অর্থনীতি- সব গুরুত্বপূর্ণ খবর জানতে আমাদের দেশ বিভাগে ক্লিক করুন।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE