Advertisement
E-Paper

বুথ ফেরত সমীক্ষা উড়িয়ে তৎপর নায়ডুরা

গত দু’দিন দফায় দফায় রাহুল গাঁধী, সনিয়া গাঁধী, শরদ পওয়ার, অরবিন্দ কেজরীবাল, মায়াবতী-অখিলেশের সঙ্গে দেখা করার পরে চন্দ্রবাবু নায়ডু আজ কলকাতায় গিয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ মে ২০১৯ ০৩:৫৪
অভ্যর্থনা: চন্দ্রবাবু নায়ডুকে নিজের বাড়িতে স্বাগত জানাচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার। পিটিআই

অভ্যর্থনা: চন্দ্রবাবু নায়ডুকে নিজের বাড়িতে স্বাগত জানাচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার। পিটিআই

কেটেকুটেও হিসেব মেলাতে পারছেন না বিরোধীরা। বুথ ফেরত সমীক্ষা বিজেপি ও শরিকদের যা আসন দিয়েছে, রাজ্য ধরে ধরে বিরোধীদের হিসেব তার থেকে ঢের কম। আর সে কারণেই বিরোধী দলের নেতারা মনে করছেন এনডিএ-র শরিকদের নিয়েও সংখ্যাগরিষ্ঠতা থেকে অনেক দূরে থাকবে বিজেপি। কেন্দ্রে নতুন সরকার গড়ার জন্য আঞ্চলিক দলগুলির হাতেই থাকবে আসল চাবিকাঠি।

গত দু’দিন দফায় দফায় রাহুল গাঁধী, সনিয়া গাঁধী, শরদ পওয়ার, অরবিন্দ কেজরীবাল, মায়াবতী-অখিলেশের সঙ্গে দেখা করার পরে চন্দ্রবাবু নায়ডু আজ কলকাতায় গিয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করেন। সামগ্রিক হিসেব কষে তাঁরা একমত যে, এনডিএ-র আসন সংখ্যা কোনও ভাবেই ২২০টির বেশি হচ্ছে না। অর্থাৎ, এনডিএ এই সংখ্যা পেলেও সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে গেলে বিজেপিকে আরও অন্তত ৫২ জন সাংসদের সমর্থন জোগাড় করতে হবে। সূত্রের খবর, মমতা চন্দ্রবাবুকে জানান সমীক্ষায় পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূলের যে ফল দেখানো হয়েছে তার সঙ্গে বাস্তবের মিল নেই। অন্ধ্রপ্রদেশে তেলুগু দেশমের যে ফল দেখানো হয়েছে তা নিয়ে একই মত নায়ডুর।

লখনউয়ে আজ মায়াবতীর সঙ্গে বৈঠক করেন অখিলেশ যাদব। বৈঠকে দু’জনের ছবি টুইট করে অখিলেশ লেখেন, ‘‘এর পর আগামী পদক্ষেপের প্রস্তুতি।’’ অখিলেশের সঙ্গেও কথা হয়েছে মমতার। সূত্রের খবর, অখিলেশ তাঁকে জানিয়েছেন যে উত্তরপ্রদেশে এসপি-বিএসপি জোট কোনও অবস্থাতেই ৫০টি আসনের কম পাচ্ছে না। মায়াবতীর সঙ্গে আসন ধরে ধরে পর্যালোচনা করেছেন। উভয়েরই মত তাই। যার ফলে গোবলয়ের সবচেয়ে বড় রাজ্যে বিজেপির আসন সংখ্যা নেমে যাবে ত্রিশের নীচে। যদি তাই হয় তা হলে কোনও অবস্থাতেই কেন্দ্রে সরকার গড়ার মতো অবস্থায় আসতে পারবে না বিজেপি। মমতাকে মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী কমল নাথও জানিয়েছেন, তাঁর রাজ্যে বুথ ফেরত সমীক্ষার ফলের সঙ্গে প্রকৃত ফল একেবারেই মিলবে না।

প্রকৃত ফলের সময়ে যাতে বিরোধী জোটে কোনও গরমিল না হয় সেই জন্য আগামিকালই ২১টি বিরোধী দল একযোগে নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হচ্ছে। দিল্লিতে কংগ্রেসের এক নেতা বলেন, ‘‘বিরোধীদের এই জোটটি অটুট রাখা জরুরি। আমরা তো খবর পাচ্ছি, অমিত শাহ নবীন পট্টনায়ককে ফোন করেছেন। কে চন্দ্রশেখর রাও, জগন্মোহনের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখছেন।’’ তাঁর বক্তব্য, ‘‘ভোটের ফল প্রকাশের আগেই আগামিকাল এনডিএ-র শরিকদের নৈশভোজে ডেকেছেন নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহ। বিজেপি যদি একার জোরে সরকার গড়া নিয়ে এতটাই আত্মবিশ্বাসী হত, তাহলে আগেভাগে এনডিএ-কে সঙ্গে রাখার কিসের এত তাগিদ?’’

কংগ্রেস মনে করছে, বৃহস্পতিবার প্রকৃত ফল প্রকাশের পরে বিজেপি যদি সরকার গড়ার কাছাকাছি অবস্থায় পৌঁছে যায় তা হলে নবীন, জগন, কেসিআর-এর মতো অনেকেই তাদের দিকে ভিড়তে পারেন। এমনকি মায়াবতী সম্পর্কেও সংশয় রয়েছে। কারণ, তিনি এখনও নিজের তাসটি পুরোপুরি খেলতে চাইছেন না। চন্দ্রবাবুর মধ্যস্থতায় মায়াবতীর দিল্লি আসার কথা ছিল। কিন্তু গত কালের বুথফেরত সমীক্ষার পরে মায়া এখন ভোটের ফল দেখেই আসতে চান।

কিন্তু বিরোধী শিবিরের বাকি দলকে কংগ্রেস এখন বোঝাচ্ছে, বিজেপির সঙ্গে গেলে প্রধানমন্ত্রী কিংবা উপপ্রধানমন্ত্রীর পদ আর কোনও দল পাবে না। বিরোধীদের জোটেই একমাত্র সেটি সম্ভব। যেমন মায়াবতী নিজেকে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে রাখতে চান। কেসিআরও উপপ্রধানমন্ত্রী পদ পেতে চাইছেন। আবার কংগ্রেস যদি দেড়শোর মতো আসন পেয়ে যায়, তা হলে প্রধানমন্ত্রী পদের দাবিদার হবে।

এক নেতা আজ বলেন, ‘‘রাহুল গাঁধী যদি নিজে প্রধানমন্ত্রী না হয়ে সুশীলকুমার শিন্ডে কিংবা মীরা কুমারের মতো কোনও দলিত মুখকে এগিয়ে দেন, তা হলে কি বিরোধী শিবিরের বাকিরা তাতে আপত্তি করতে পারবেন?’’

এমন সব সম্ভাবনা নিয়েই এখন তোলপাড় চলছে বিরোধী শিবিরে। একটাই লক্ষ্য, মোদী-শাহ জুটিকে ফের ক্ষমতায় আসতে না দেওয়া। কার ভাগ্যে শিকে ছিঁড়বে বৃহস্পতিবার?

Lok Sabha Election 2019 Exit Polls Chandrababu Naidu Mamata Banerjee Rahul Gandhi Congress TMC Mayawati Akhilesh Yadav
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy