Advertisement
E-Paper

দাবিয়ে রাখতে পারবে না, বলছেন মনদীপ

চৈতালি বিশ্বাস

শেষ আপডেট: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০৬:৪৭
সাংবাদিক মনদীপ পুনিয়া।

সাংবাদিক মনদীপ পুনিয়া। ফাইল চিত্র

জামিন পেয়ে জেলের বাইরে পা রেখেছেন ২৪ ঘণ্টাও কাটেনি। ফের নতুন উদ্যমে কাজে ঝাঁপিয়ে পড়ার কথা জানালেন ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক মনদীপ পুনিয়া। দিল্লির কৃষক আন্দোলন সম্পর্কে খবর করার সময়ে ‘গ্রাউন্ড রিপোর্টিং’ করার সময়ে যাঁকে পুলিশের কাজে বাধাদানের মতো অভিযোগে ৩০ জানুয়ারি সিংঘু সীমানা থেকে গ্রেফতার করেছিল দিল্লি পুলিশ।

দিল্লি আদালত তাঁকে মঙ্গলবার জামিন দিয়েছে। সদ্য জেল থেকে বেরনো সাংবাদিককে বুধবার রাতে যোগাযোগ করা হলে জানান, সামলে নিয়ে যোগাযোগ করবেন। বৃহস্পতিবার সকালে ফোন করলেন নিজেই। ‘‘এখন আমি একদম ঠিকঠাক। প্রচুর মানুষ ফোন করে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন। তবে দ্রুত মাঠে-ময়দানে কাজে নেমে পড়তে চাই।’’

মনদীপ জানাচ্ছেন, বর্তমানে দিল্লিতে এক আত্মীয়ের বাড়িতে রয়েছেন স্ত্রী লীলার সঙ্গে। পা জখম, ওষুধও চলছে। তাঁর দাবি, ৩০ তারিখ সিংঘু সীমানায় কৃষক আন্দোলনের খবর করার সময়ে বাকি সাংবাদিকদের সঙ্গে তাঁর উপরেও দিল্লি পুলিশ লাঠি চালায়। পুলিশের তাঁবুতে রাখার সময়েও লাঠি চালানো হয়। তাঁকে দেখিয়ে জনৈক পুলিশকর্মী বলেন, ‘‘এই যে মনদীপ পুনিয়াকে পাকড়াও করা গিয়েছে!’’ এর পরেই তাঁকে টানাহেঁচড়া করে নিজেদের হেফাজতে নেয় দিল্লি পুলিশ, যা পরে ভাইরাল হওয়া ভিডিয়োতেও দেখা গিয়েছে। সে সময়েই শরীরে চোট লাগে, কেটে যায় পা।

সাংবাদিকের অভিযোগ, ‘‘আমায় সিংঘু সীমানা থেকে পুলিশ তুলে নিয়ে যায় ৩০ জানুয়ারি সন্ধে ৭টায়। ফোন কেড়ে নেওয়া হয়, ক্যামেরা ভেঙে দেওয়া হয়। গাড়িতে করে এ দিক-সে দিক ঘোরানো হয়। আঘাত থাকা সত্ত্বেও আমার মেডিক্যাল টেস্ট করানো হয়নি। রাত তিনটে নাগাদ থানায় নিয়ে যায়। আমার পরিবারকে কিন্তু কিছুই জানানো হয়নি। আমার স্ত্রী সারা রাত থানায় থানায় ঘুরে আমার খোঁজ করেছেন। এমনকি, আদালতে পেশ করানোর সময়েও আমার উকিলকে ভিতরে ঢুকতে দেয়নি দিল্লি পুলিশ।’’

তবে দমানো যায়নি পেশাদার সত্তাকে। জেলে বসেই তিনি কৃষক আন্দোলনের খবর সংগ্রহ করেছেন। সে কাজে সাংবাদিকের ‘নোটবুক’ ছিল নিজের কেটে-ছড়ে যাওয়া পা দু’টো।

আত্মবিশ্বাসী গলায় নবীন সাংবাদিক বলেন, ‘‘জেলে দিব্যি ছিলাম। সবাই খোঁজখবর নিচ্ছিলেন, খাবার দিয়ে যাচ্ছিলেন। তিহাড়ের কর্মীরাও বলছিলেন, ভুল হয়েছে। ওখানে অনেকগুলো ওয়ার্ড রয়েছে, সেখানে কম করে ১৩০-১৪০ জন কৃষক বন্দি রয়েছেন বলেই আমার ধারণা। ৭০-৭৫ বছর বয়সি কৃষকদেরও বন্দি করা হয়েছে। কয়েক জন কৃষকের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী রিপোর্টের কাজ এগিয়ে নিলাম জেলের মধ্যেই।’’

বর্তমানে রাষ্ট্রশক্তির বিরুদ্ধে কলম ধরা কোনও সাংবাদিকের পরিণতি কী হতে পারে, তা দস্তুরমতো জানেন মনদীপ। তাঁর মতে, এক জন সাংবাদিকের দুই ধরনের রাজনীতি হতে পারে। প্রথমত, ‘ভিক্টিম কার্ড’ খেলা। দ্বিতীয়ত, চাপের মুখে, স্প্রিংয়ের মতো লাফিয়ে উঠে ফের কাজে ঝাঁপিয়ে পড়া।
মনদীপ বলেন, ‘‘উনহো নে যো হামকো দাবায়া, কুচলা, উসিকো হামনে অপরচুনিটি মে বদল ডালা...!’’(আমাকে দাবিয়ে দিতে চেয়েছিল, আর আমি উল্টে সেটাকেই কাজে লাগালাম।)
সাংবাদিকের কাজ তো সেটাই।

মনে করাচ্ছেন কৃষক আন্দোলনে সিংঘু সীমানার মাটি কামড়ে পড়ে থাকা সাংবাদিক মনদীপ পুনিয়া।

journalist delhi Farmers Protest Farmers Law Singhu Border
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy