Advertisement
E-Paper

লাইন ভেঙে দুর্ভোগ, আটকে ত্রিপাঠী

পাইলট ট্রেন ছিল বলে রক্ষা! তাই এড়ানো গেল বড়সড় মাওবাদী নাশকতার ছক। দেড় মাস আগে বিহারের ছপরা জেলায় নয়াদিল্লি-ডিব্রুগড় রাজধানী এক্সপ্রেসে নাশকতার ঘটনার পরে প্রশ্ন উঠেছিল, কেন পাইলট ট্রেন চালায়নি রেল। মঙ্গলবার সেই উপযোগিতার প্রমাণ হাতেনাতে মিলল। রাত ১১টা ৪০-এ বিহারের গয়া জেলার ইসমাইলপুর স্টেশনের কাছে লাইনে বোমা বিস্ফোরণে ছিটকে গেল পাইলট ইঞ্জিন। উড়ে গেল বেশ খানিকটা রেললাইন। উপড়ে গেল বিদ্যুতের খুঁটি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০১৪ ০৩:২৭

পাইলট ট্রেন ছিল বলে রক্ষা! তাই এড়ানো গেল বড়সড় মাওবাদী নাশকতার ছক।

দেড় মাস আগে বিহারের ছপরা জেলায় নয়াদিল্লি-ডিব্রুগড় রাজধানী এক্সপ্রেসে নাশকতার ঘটনার পরে প্রশ্ন উঠেছিল, কেন পাইলট ট্রেন চালায়নি রেল। মঙ্গলবার সেই উপযোগিতার প্রমাণ হাতেনাতে মিলল। রাত ১১টা ৪০-এ বিহারের গয়া জেলার ইসমাইলপুর স্টেশনের কাছে লাইনে বোমা বিস্ফোরণে ছিটকে গেল পাইলট ইঞ্জিন। উড়ে গেল বেশ খানিকটা রেললাইন। উপড়ে গেল বিদ্যুতের খুঁটি। কিন্তু বেঁচে গেল অনেকগুলো প্রাণ। ওই লাইন দিয়েই খানিক পরে যাওয়ার কথা ছিল ভুবনেশ্বর থেকে দিল্লিগামী রাজধানী এক্সপ্রেসের!

আপ ও ডাউন লাইন দুই-ই ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় এই ঘটনার জেরে আটকে পড়ে অনেকগুলি ট্রেন। যার মধ্যে ছিল হাওড়া ও শিয়ালদহগামী রাজধানী এক্সপ্রেস। আটকে পড়ে হাওড়া ও শিয়ালদহ থেকে ছাড়া দিল্লিগামী রাজধানী দু’টিও। হাওড়ামুখী রাজধানীতে ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের ভাবী রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী। তিনিও সপার্ষদ আটকে পড়েন। নির্ধারিত সময়ের প্রায় ৬ ঘণ্টা দেরিতে বিকেল সওয়া ৪টে নাগাদ হাওড়ায় পৌঁছয় তাঁর ট্রেন।

পুলিশ সূত্রের খবর, মঙ্গলবার মাঝরাত থেকে বিহারে ২৪ ঘণ্টার বন্ধ ডেকেছিল মাওবাদী সংগঠনগুলি। এই বন্ধের জন্য বিশেষ নজরদারিও ছিল। তবু বিপর্যয় এড়ানো গেল না। রেল সূত্রের খবর, ইসমাইলপুর পার করে পাইলট ইঞ্জিনটি যখন রফিগঞ্জের দিকে যাচ্ছিল, সেই সময়েই লাইনের নীচে বিস্ফোরণ ঘটে। ইঞ্জিনটি লাইনচ্যুত হয়ে যায়। এই ঘটনায় কোনও প্রাণহানি হয়নি। তবে ইঞ্জিনটির তলায় বিভিন্ন যন্ত্রাংশের ক্ষতি হয়েছে।

খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছন পুলিশকর্তারা। আসে আরপিএফও। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, রেল লাইনের প্রায় দু’মিটার অংশ ভেঙে বহু দূরে ছিটকে গিয়েছে। যেখানে বোমাটি রাখা ছিল, বিস্ফোরণের পরে সেই জায়গা থেকে মাটি সরে তৈরি হয়েছে বিরাট গর্ত। বিহারের এডিজি (রেল) কে এস ত্রিবেদী জানান, বোমাটি ছিল সিলিন্ডার বোমা।

পুলিশ সূত্রের খবর, গত ১৯ জুলাই ঔরঙ্গাবাদের মদনপুর এলাকায় মাওবাদীদের খোঁজে তল্লাশি চালাতে গিয়েছিল পুলিশের একটি দল। সেই সময় পুলিশ অত্যাচার চালায় বলে গ্রামবাসীদের অভিযোগ। গ্রামবাসীরা পুলিশকে লক্ষ করে ইট-পাটকেল ছোড়েন, একটি জিপে আগুনও ধরিয়ে দেন। পুলিশ গুলি চালালে এক মহিলা-সহ দু’জনের মৃত্যু হয়। এরই প্রতিবাদে মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার রাত পর্যন্ত মাওবাদীরা বিহার জুড়ে বন্ধের ডাক দিয়েছিল। তদন্তকারীদের বক্তব্য, বন্ধের আগে বা পরে মাওবাদীরা সাধারণত বিস্ফোরণ ঘটায়। সেটা আবার প্রমাণ হল।

বুধবার সকাল সাড়ে ৬টা নাগাদ ডাউন লাইনটি মেরামতির পরে ট্রেনগুলিকে পটনা দিয়ে ঘুরিয়ে কলকাতায় পাঠানোর ব্যবস্থা করেন রেল কর্তৃপক্ষ। আপ লাইনটি চালু হয় বেলা ১১টা নাগাদ। আপ ও ডাউন লাইনের প্রতিটি ট্রেনই এ দিন গড়ে ৬-৭ ঘণ্টা করে দেরিতে গন্তব্যে পৌঁছেছে। ফলে দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রীরা। রাত থেকে বিভিন্ন ছোট স্টেশনে আটকে থাকার পর এ দিন সকালে ট্রেনে খাবার এবং পানীয় জল পেতে হিমসিম খেতে হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তাঁরা।

গত কয়েক বছরে বারবারই মাওবাদীদের নিশানা হচ্ছে রেলপথ। তার মধ্যে বেশ কয়েকটি বিহারে। বিজেপির অভিযোগ, বিহার সরকার মাওবাদীদের প্রতি কিছুটা নরম মনোভাব দেখানোর জন্যই বারবার এমনটি ঘটছে। রেল মন্ত্রকের কর্তারাও বলেছেন, রাজ্য সরকার মাওবাদীদের প্রতি কড়া না হলে যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারবে না রেল। ইতিমধ্যেই বিহার সরকারের কাছে এই ঘটনার রিপোর্ট চেয়েছে রেল মন্ত্রক।

maoist blew off rail track gaya bhubaneswar-bound rajdhani express
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy