প্রতীকী ছবি।
জীবন-মৃত্যুর ব্যবধান ছিল মাত্র কয়েক সেকেন্ড। মুহূর্তের হেরফেরেই আকাশে ঘটে যেতে পারত ভয়ঙ্কর বিপর্যয়। ইথিওপিয়ার স্মৃতি ফিকে হওয়ার আগেই আকাশে আরও এক অশনি সঙ্কেত। তবে এ বার বিপর্যয় কেটেছে এক্কেবারে শেষ মুহূর্তে। মুম্বইয়ের আকাশে মুখোমুখি সংঘর্ষ এড়াল দু’টি আন্তর্জাতিক বিমান। সেই সময় দু’টি বিমানের দূরত্ব ছিল ৬ কিলোমিটারেরও কম (তিন নটিক্যাল মাইল)। তবে বরাতজোরে বিপন্মুক্ত হয় দু’টি বিমান।
শুক্রবার মুম্বইয়ের আকাশে এই ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল দুপুর ১.৪০ মিনিট নাগাদ। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে ডিজিসিএ। বসিয়ে দেওয়া হয়েছে ট্রাফিক কন্ট্রোলারকে। পাকিস্তানের আকাশপথ দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকায় মুম্বইয়ের আকাশে এক ধাক্কায় উড়ানের সংখ্যা বেড়ে গিয়েছে। অতিরিক্ত উড়ানের চাপেই এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল বলে প্রাথমিক তদন্তের পর মনে করছেন মুম্বই বিমানবন্দর এবং ডিজিসিএ কর্তৃপক্ষ।
ঠিক কি ঘটেছিল শুক্রবার ১.৪০ মিনিটে? মুম্বই এটিসি সূত্রে খবর, এয়ার ফ্রান্সের একটি উড়ান এএফ-২৫৩ ভিয়েতনামের হো চি মিন শহর থেকে প্যারিসে যাচ্ছিল। ওই বিমানটি উড়ছিল ৩২ হাজার ফুট উপর দিয়ে। একই সময়ে আবু ধাবি থেকে কাঠমাণ্ডু যাচ্ছিল এতিহাদ এয়ারওয়েজের উড়ান ইওয়াই-২৯০। মাটি থেকে এই বিমানটির উচ্চতা ছিল ৩১ হাজার ফুট। অর্থাৎ দু’টি বিমানের উচ্চতার ব্যবধান ছিল ১০০০ ফুট। এই পরিস্থিতিতে ৩১ হাজার ফুট উচ্চতায় ওড়া এতিহাদের বিমানটিকে উপরে উঠে ৩৩ হাজার ফুট উচ্চতায় ওড়ার নির্দেশ যায় মুম্বই এটিসি থেকে। নির্দেশমতো উঠেও যায় এতিহাদের বিমান।
লোকসভা নির্বাচনের যাবতীয় খবর জানতে ক্লিক করুন
আরও পড়ুন: গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী মনোহর পর্রীকর প্রয়াত
কিন্তু বিপদের আঁচ পাওয়া যায় কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই। এতিহাদের বিমানটি উপরে ওঠার পরই বুঝতে এটিসি-র কর্মীরা বুঝতে পারেন কি ভয়ঙ্কর বিপদ কাটিয়েছে দু’টি বিমানই। কারণ, যে মুহূর্তে এতিহাদের বিমানটি নীচে থেকে উপরে ওঠার জন্য এয়ার ফ্রান্সের বিমানটিকে ক্রস করেছে, সেই সময় দু’টি বিমানের ব্যবধান ছিল মাত্র তিন নটিক্যাল মাইল। বিমানের গতিবেগের হিসেব দেখলে যা ১০-১২ সেকেন্ডের মতো সময় লাগার কথা। অর্থাৎ এই সামান্য সময়ের হেরফেরেই সংঘর্ষে ধ্বংস হয়ে যেতে পারত দু’টি বিমানই।
এয়ারপোর্ট অথরিটি অব ইন্ডিয়ার এক মুখপাত্র বলেন, ‘‘পাকিস্তানের আকাশপথ বন্ধ হওয়ার পর থেকেই মুম্বইযের আকাশে তালিকাভুক্ত এবং তালিকাবিহীন বিমানের সংখ্যা প্রচুর বেড়ে গিয়েছে। আমাদের এটিসির কর্মীরা সেই অতিরিক্ত চাপ সামলাতে যথেষ্ট তৎপর এবং দক্ষ। কিন্তু তার মধ্যেই এই ধরনের ঘটনা দুর্ভাগ্যজনক। শুক্রবার প্রায় দুর্ঘটনার মুখ থেকে বেঁচেছে দু’টি বিমান।’’
আরও পড়ুন: অভিনন্দনের চোখ-হাত বাঁধা ভিডিয়ো দেখেই পাকিস্তানে মিসাইল তাক করেছিল ভারত!
গত ১৪ ফেব্রুয়ারি পুলওয়ামায় জঙ্গি হানার পরিপ্রেক্ষিতে ভারত-পাক সম্পর্কের অবনতি হয়। তার জেরে ২৬ ফেব্রুয়ারি ভোর রাতে পাকিস্তানের বালাকোটে ঢুকে জঙ্গি ঘাঁটিতে বোমা ফেলে আসে ভারতীয় বায়ুসেনা। পরের দিন ২৭ ফেব্রুয়ারি ভারতের আকাশসীমায় ঢুকে পড়ে একাধিক পাক যুদ্ধবিমান। তার পর ডগফাইট এবং অভিনন্দন পর্ব। এর প্রেক্ষিতেই গত ২৭ ফেব্রুয়ারি থেকে আকাশপথ বন্ধ করে দেয় পাকিস্তান। তার পর দু’দেশের সম্পর্কের উত্তেজনার পারদ কিছুটা গললেও আকাশপথ বন্ধের মেয়াদ বাড়িয়েই চলেছে পাকিস্তান। গত সপ্তাহেই ফের এক দফা মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে, যা এই নিয়ে সপ্তম বার মেয়াদ বাড়ানো হল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy