এ বার রাজ্যের ক্ষমতার পরিসর বৃদ্ধি করতে চাইছে তামিলনাড়ু সরকার! কী ভাবে তা সম্ভব, তার জন্য কী পদক্ষেপ করা যায়, তা স্থির করতেই একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করার কথা জানালেন তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্ট্যালিন। এই কমিটির নেতৃত্বে থাকবেন সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচরপতি কুরিয়ান জোসেফ। এ ছাড়াও কমিটিতে থাকছেন প্রাক্তন আইএএস অফিসার অশোকবর্ধন শেট্টি এবং মু নাগরাজন।
কেন স্ট্যালিন এই কমিটি গঠন করার কথা জানালেন? তাঁর লক্ষ্যই হল, রাজ্যের ক্ষমতা বৃদ্ধি এবং কেন্দ্রের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করা। সেই লক্ষ্যে কমিটি নিজেদের মতামত জানাবে। ২০২৬ সালের জানুয়ারির মধ্যে ওই কমিটিকে একটি অন্তর্বর্তিকালীন প্রতিবেদন জমা দিতে হবে। ২০২৮ সালের মধ্যে সম্পূর্ণ রিপোর্ট জমা করবে তারা।
মঙ্গলবার রাজ্য বিধানসভায় ভাষণ দেওয়ার সময় তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় সরকারের মধ্যে সম্পর্ক জোরদার করার জন্য এই কমিটি বিভিন্ন দিক খতিয়ে দেখবে। তার পর তারা সুপারিশ দেবে। শুধু তা-ই নয়, রাজ্যের ক্ষমতা কী ভাবে বৃদ্ধি করা যায়, তা-ও বিবেচনা করে দেখবে এই কমিটি, জানান স্ট্যালিন।
আরও পড়ুন:
নতুন কমিটি গঠনের কথা বলার সময় আবার এক বার কেন্দ্রের বিরুদ্ধে হিন্দি চাপিয়ে দেওয়ার অভিযোগ তুলে সরব হয়েছেন স্ট্যালিন। কেন্দ্রের নতুন শিক্ষানীতির (এনইপি) মাধ্যমে কেন্দ্রীয় সরকার তামিলভূমে হিন্দি চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ তুলে স্ট্যালিন দাবি করেন, ‘‘এনইপি প্রত্যাখ্যান করায় কেন্দ্র শিক্ষাখাতে রাজ্যের প্রাপ্য আড়াই হাজার কোটি টাকার তহবিল আটকে রেখেছে।’’
সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টে তামিলনাড়ুর রাজ্যপাল রাজ্যপাল আরএন রবির বিরুদ্ধে বড় জয় পেয়েছে স্ট্যালিনের সরকার। দিন কয়েক আগেই সুপ্রিম কোর্টে ধাক্কা খান রবি। তাঁর ভূমিকা এবং কার্যকলাপের বিরুদ্ধে তামিলনাড়ু সরকারের করা মামলার শুনানিতে গত ৮ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্ট জানায়, রাজ্য বিধানসভায় পাশ হওয়া বিল ঝুলিয়ে রাখা বৈধ কাজ নয়। তামিলনাড়ু সরকারের পাশ করানো ১০টি বিলে রাজ্যপাল সম্মতি না-দেওয়ায় সেগুলি দিনের আলো দেখেনি। তার পর স্ট্যালিনের সরকার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়। বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা এবং বিচারপতি আর মহাদেবনের বেঞ্চ জানায়, বিলের কোনও আইনি বিষয়ে আপত্তি থাকলে তা পুনর্বিবেচনার জন্য ফেরত পাঠাতে পারেন রাজ্যপাল। তবে বিলটি পুরনো আকারেই আবার বিধানসভায় পাশ করানো হলে তাতে রাজ্যপাল সম্মতি দিতে বাধ্য। পরে রাজ্যপাল বা রাষ্ট্রপতির সই ছাড়াই তামিলনাড়ুতে পাশ হয় ১০টি বিল। সেই আবহেই এ বার রাজ্যের ক্ষমতাবৃদ্ধির কথা শোনা গেল স্ট্যালিনের মুখে।