Advertisement
E-Paper

রোহিঙ্গায় গোল চিনের, সুযোগ হারিয়ে পিছনের সারিতে দিল্লি

সম্প্রতি রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে চিন ত্রিস্তরীয় সমাধান সূত্র ঘোষণা করার পরে এমনটাই আফশোস কূটনৈতিক শিবিরের। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চিনের লক্ষ্য ভারতকে পিছনে ফেলে বাংলাদেশ এবং মায়ানমারে প্রভাব বাড়ানো।

অগ্নি রায়

শেষ আপডেট: ২৪ নভেম্বর ২০১৭ ০৩:৩৬
ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

রোহিঙ্গা-কূটনীতির প্রশ্নে বাংলাদেশ, মায়ানমার তথা দক্ষিণ এশিয়ায় প্রভাব বাড়ানোর সুবর্ণসুযোগ এসেছিল নয়াদিল্লির সামনে। প্রতিবেশী-রাজনীতিতে কোণঠাসা অবস্থা থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর পরিস্থিতিও তৈরি হয়েছিল। কিন্তু ট্রেন ফেল করল সাউথ ব্লক। আর সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে চালকের আসনে বসে পড়ল বেজিং।

সম্প্রতি রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে চিন ত্রিস্তরীয় সমাধান সূত্র ঘোষণা করার পরে এমনটাই আফশোস কূটনৈতিক শিবিরের। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চিনের লক্ষ্য ভারতকে পিছনে ফেলে বাংলাদেশ এবং মায়ানমারে প্রভাব বাড়ানো। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক মহলে মানবাধিকারের প্রশ্নে নিজেদের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করারও চেষ্টা করছে চিন।

তবে এখন চিন যে পথে সমস্যা নিরসনের কথা বলছে, ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র আগেই সেই কথা বলেছিলেন। তবে তাকে বাস্তবায়িত করতে উদ্যোগী হয়নি সাউথ ব্লক। সেপ্টেম্বরে মায়ানমার সফরে গিয়ে ‘রোহিঙ্গা’ শব্দটি উচ্চারণই করেননি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বরং সে দেশের নিরাপত্তা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করে মায়নমারকে খুশি করার চেষ্টা করেছিলেন। কারণ, ভারতের বরাবরের আশঙ্কা— মায়নমারকে তুষ্ট না-রাখতে পারলে দেশটি পুরোপুরি চিনের প্রভাবে চলে যাবে।

মায়ানমারের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক নিয়ে চিন এবং ভারতের টানাপড়েন ক্রমবর্ধমান। আসিয়ান গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলির সিংহদ্বার হিসাবে সে দেশের খুবই গুরুত্ব ভারতের কাছে। কিন্তু সড়ক, পরিকাঠামো নির্মাণ থেকে শুরু করে নতুন শিল্পোদ্যোগের ক্ষেত্রে চিনও দু’হাত উপুড় করে বিনিয়োগ করছে মায়নমারে। এবং বাংলাদেশেও।

কার্যক্ষেত্রে চিনের রোহিঙ্গা-কিস্তিতে আপাতত মাৎ বাংলাদেশ এবং মায়ানমার উভয়েই। চিনের ত্রিস্তরীয় প্রস্তাব— ১) রাখাইন প্রদেশে অবিলম্বে সংঘর্ষ বিরতি ঘোষণা, রোহিঙ্গাদের দেশ ছেড়ে যাওয়া বন্ধ করা এবং শরণার্থীদের ফিরিয়ে আনা। ২) বাংলাদেশ এবং মায়ানমারের মধ্যে কূটনৈতিক যোগাযোগ বাড়ানো। ৩) রাখাইনের দারিদ্র দূরীকরণে আন্তর্জাতিক সহায়তা জোগাড়। এ ব্যাপারে সিংহ ভাগ দায়িত্ব নিতে রাজি চিন।

আরও পড়ুন: মানিককে অফিসেই ঢুকতে দিল না বিজেপি

যদিও চিনের এই প্রস্তাব নিয়ে সন্দিহান মার্কিন প্রশাসন। মার্কিন বিদেশ দফতর বিবৃতিতে বলেছে— চিনের বিদেশমন্ত্রীর প্রস্তাব রাখাইনের জটিল পরিস্থিতির তুলনায় খুবই সহজ-সরল। সামরিক অভিযানের নামে রাখাইনে ‘জাতি নিধন’ চলছে বলে বিদেশসচিব রেক্স টিলারসন যে আগেই মন্তব্য করেছেন, বিদেশ মন্ত্রকের বিবৃতিতে তা-ও বলা হয়েছে।

তবে চিনের এই প্রস্তাবে খুশি ঢাকা। প্রায় রোহিঙ্গা শরণার্থী নিয়ে জর্জরিত বাংলাদেশ, ভারতের কাছেও এমন দরাজ অবস্থান আশা করেছিল। বাংলাদেশের এক কূটনীতিকের কথায়, ‘‘মায়ানমারের রাজনৈতিক নেতৃত্ব এবং সেনা প্রশাসন—দু’তরফেই চিনের গ্রহণযোগ্যতা বেশি। তারা এগিয়ে আসায় আমরা আশাবাদী যে রোহিঙ্গা সমস্যা মিটবে।’’ অন্য দিকে চিনা প্রস্তাবে মায়ানমার কোনও প্রতিক্রিয়া জানায়নি। কিন্তু চিনের প্রস্তাব মেনে নিলে বেজিং যে রাখাইন প্রদেশকে নতুন করে গড়ে দেবে তাই-ই নয়, তাদের কাছ থেকে অন্যান্য ক্ষেত্রেও যে বাড়তি উপঢৌকন আদায় করা সম্ভব হবে, মায়ানমার তা বিলক্ষণ জানে।

Rohingya রোহিঙ্গা Delhi China
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy