Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
nagaland

Nagaland Shooting: বিয়ের মণ্ডপের কাঠামোর ঢিল ছোড়া দূরত্বে গণকবর! চোখের জলে বাতাস ভারী ওটিংয়ের

স্বামীর কফিনকে শক্ত করে জড়িয়ে জ্ঞান হারান মনলোং। গণকবরের জায়গা থেকে তখনও স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে বিয়ে উপলক্ষে তৈরি বাঁশের কাঠামো, একা দাঁড়িয়ে।

ওটিং গ্রামে গণকবর।

ওটিং গ্রামে গণকবর। ছবি— পিটিআই।

সংবাদ সংস্থা
কোহিমা শেষ আপডেট: ০৮ ডিসেম্বর ২০২১ ১০:৫৮
Share: Save:

শোকে পাথর ওটিং। শনিবার সেনার অতর্কিত গুলিতে গ্রামবাসীদের মৃত্যুর শোক এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেনি মৃত ১২ তরুণের এই গ্রাম। গ্রামে যেখানে পর পর ১২টি কবরের জন্য মাটি খোঁড়া হয়েছিল, তার ঢিল ছোড়া দূরত্বে এখনও দাঁড়িয়ে বাঁশের কাঠামো। ঠিক দু’সপ্তাহ আগে ওই বাঁশের কাঠামোর নীচে বিবাহ বন্ধনে ধরা দিয়েছিলেন মনলোং আর হোকুপ। আনন্দ উৎসব আর খানা পিনায় মেতে উঠেছিল গোটা গ্রাম। মাঝে মাত্র ১৪ দিনের ব্যবধান। হোকুপের কফিনবন্দি নিথর দেহের উপর ঝুঁকে পড়ে মনলোং-এর বিলাপই চুম্বকে ওটিং-এর আবহ।

২৫ নভেম্বর দিনটা ওটিং-এর বাসিন্দাদের কাছে ছিল উৎসবে গা ভাসানোর। উপলক্ষ, গ্রামের তরুণ হোকুপের সঙ্গে মনলোং-এর বিয়ে। রাতভর খানা পিনা আর নাচে গানে ওটিং তখন মশগুল। কে জানত, ঠিক ১৪ দিনের মাথায় সেই মনলোং-কে হোকুপের নিথর দেহের সামনে অসহায় অশ্রু বিসর্জন করতে হবে!

শোকে মুহ্যমান মনলোং কথা বলার অবস্থায় নেই। তবুও অস্ফুটে জানালেন, ‘‘স্বামী আমাকে প্রচণ্ড ভালবাসতেন। আমিও তাই। সবে ২৫ নভেম্বর আমাদের বিয়ে হল। বিয়ের পর একদমই সময় পাইনি। আমি গির্জায় কাজ করি। সেখানে ছুটি কম। স্বামীর কাজেও ছুটির বালাই নেই। ঠিক করেছিলাম, বছর শেষে একসঙ্গে ছুটি কাটাব... আমার সত্যি আর কিছু বলার নেই। ওঁর সঙ্গে শেষ বার, এক বার কথা বলতে চাই।’’

স্বামীর কফিনকে শক্ত করে জড়িয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন সদ্য বিবাহিতা। পর ক্ষণেই জ্ঞান হারান। গণকবরের জায়গা থেকে তখনও স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে বিয়ে উপলক্ষে তৈরি বাঁশের কাঠামো, একা দাঁড়িয়ে।

মৃতদের মধ্যে রয়েছেন গামলেমের স্বামী লাংটুন। তাঁদের বিয়ের বয়স এক বছরের সামান্য বেশি। সেনার গুলিতে প্রাণ হারানো লাংটুনের দু’মাসের কন্যা সন্তানকে কী ভাবে বড় করবেন, এখন সেই চিন্তায় মাথায় আকাশ ভেঙে পড়েছে গামলেমের। একই অবস্থা কয়েক ঘর দূরের বাসিন্দা চেমওয়াং-এর। সত্তরোর্ধ্ব ক্যানসারের রোগী চেমওয়াং-এর অন্ধের যষ্টি ছিলেন তাঁর একমাত্র ছেলে। নিজের পিকআপ ভ্যানে খনি শ্রমিকদের আনা নেওয়ার কাজ করে সংসার চালাতেন। কিন্তু সেনার এক গুলিতেই সব শেষ। চেমওয়াং এখনও বিশ্বাস করতে পারছেন না তাঁকে ফেলে রেখে একমাত্র ছেলে চলে গিয়েছে সব চাওয়া পাওয়ার ওপারে।

শনিবারের ঘটনার পর পেরিয়ে গিয়েছে তিন দিন। এখনও ওটিং বুঝে উঠতে পারছে না ঠিক কোন কারণে একসঙ্গে এতগুলো মানুষকে শেষ বিদায় জানাতে হচ্ছে। চোখের জলে ভারী নাগাল্যান্ডের আকাশ বাতাসে ভেসে বেড়াচ্ছে একটাই প্রশ্ন, কেন গুলি চালাতে হল সেনাকে? অমিত শাহ যাকে বলেছেন, ভুল বোঝাবুঝি!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

nagaland Assam Rifles Kohima
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE