বিহার ভোটেও ভারতীয় সেনার বীরত্ব এবং ‘অপারেশন সিঁদুর’ই যে তাঁর প্রচারের মূল অস্ত্র হবে, তা আজ ফের স্পষ্ট করে দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বিহারে এক জনসভায় তাঁর হুঙ্কার, পাকিস্তানের হাতে পরমাণু বোমা থাকলেও তার ফাঁপা হুমকিতে ভারতকে রোখা যাবে না। মোদী বলেন, ‘‘সন্ত্রাসবাদী ও সন্ত্রাসে মদতদাতাদের আলাদা করে দেখা হবে না। যে কোনও জঙ্গি হামলা হলেই প্রত্যাঘাত করবে ভারতীয় সেনা।’’
পহেলগাম জঙ্গি হামলার পরে বিহারের মধুবনীতে জনসভায় গিয়ে প্রত্যাঘাতের বার্তা দিয়েছিলেন মোদী। আজ ফের বিহারে এক জনসভায় মোদী মনে করিয়ে দিলেন যে, তিনি কথা রেখেছেন। আজ কারাকাটের জনসভা থেকে মোদী বলেন, ‘‘আমি বলেছিলাম দোষীরা এমন শাস্তি পাবে, যা তাদের কল্পনার অতীত। সেই প্রতিশ্রুতিরক্ষা করেই আজ আমি বিহারে এসেছি।’’ তবে ‘অপারেশন সিঁদুর’ যে এখনও শেষ হয়নি, তা আজ ফের মনে করিয়ে দিয়েছেন মোদী। কার্যত পাকিস্তানকে হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘যদি সন্ত্রাসবাদ ফণা তোলার চেষ্টা করে, তা হলে সেই সন্ত্রাসবাদের ফণাকে পিষে দেওয়া হবে।’’ তাৎপর্যপূর্ণ হল আজ প্রধানমন্ত্রী কারাকাটে সভা শেষ করার কিছুক্ষণের মধ্যেই মাঝ সমুদ্রে থাকা ‘আইএনএস বিক্রান্ত’ রণতরী পরিদর্শনে যান প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাখ সিংহ। তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, ‘‘আগে হাফিজ সইদ, মাসুদ আজহারদের ভারতের হাতে তুলে দিক পাকিস্তান। তার পরে পাকিস্তানের সঙ্গে আলোচনায় বসবে ভারত।’’ রাজনাথের রণতরী পরিদর্শন শেষ হতেই পুঞ্চে নিজের বক্তব্যে পাকিস্তানকে হুঁশিয়ারি দিয়ে ভবিষ্যতে আরও বড় মাপের প্রত্যাঘাতের হুমকি দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। বার্তা স্পষ্ট সরকারের মন্ত্রিসভার প্রথম তিন মন্ত্রীই আজ সমন্বয় বেঁধেই প্রতিবেশী দেশকে আক্রমণ শানানোর কৌশল নেন।
আজ বিহারের পরে কানপুরে যান মোদী। সেখানে পহেলগামে নিহত শুভম দ্বিবেদীর পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন তিনি। শুভমদের পরিবারের সঙ্গে আগেই দেখা করেছিলেন লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী। মোদী এই প্রথম পহেলগামে কোনও নিহতের পরিবারের সঙ্গে দেখা করলেন। এ দিন কানপুরে সভাও করেন তিনি। সেখানেও ‘অপারেশন সিঁদুর’ নিয়ে বলতে গিয়ে মোদী বলেন, ‘‘ব্রহ্মসের মতো ক্ষেপণাস্ত্রের পাকিস্তানের ভিতরে ঢুকে আঘাত হানার ক্ষমতা দেখে পাকিস্তান ভয়ে কেঁপে গিয়েছিল।’’ তাৎপর্যপূর্ণ হল পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট শাহবাজ় শরিফ গত কালই স্বীকার করে নিয়েছিলেন, ভারতে পাল্টা হানা করার আগেই ব্রহ্মস ক্ষেপণাস্ত্র পাকিস্তানের একাধিক বিমানঘাঁটি ধ্বংস করে দেয়। তাই ভারতে হামলা চালানোর পরিকল্পনা বাতিল করতে হয় ইসলামাবাদকে। পাশাপাশি মোদী আজ ফের জানিয়ে দিয়েছেন, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে তিনটি নীতি নিয়ে এগোনোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত। প্রথমত, প্রতিটি জঙ্গি হামলার জবাব দেবে ভারত। দ্বিতীয়ত,পরমাণু হুমকিতে ভয় পাবে না ভারত। তৃতীয়ত, জঙ্গি ও তাদের মদতদাতাদের একই নজরে দেখবে ভারত।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)