Advertisement
E-Paper

ডেরেক-নির্মলার বাদানুবাদ রাজ্যসভায়, বাংলার বঞ্চনা নিয়ে চিৎকারে ক্ষুব্ধ নড্ডা

বৃহস্পতিবার রাজ্যসভায় বাজেট সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছিলেন নির্মলা। সেই সময়ে তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েনের সঙ্গে বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়েন। পাল্টা জবাব দেন জেপি নড্ডা।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ২২:৩২
(বাঁ দিক থেকে) কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন, তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন এবং বিজেপি সাংসদ জেপি নড্ডা। বৃহস্পতিবার রাজ্যসভায়।

(বাঁ দিক থেকে) কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন, তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন এবং বিজেপি সাংসদ জেপি নড্ডা। বৃহস্পতিবার রাজ্যসভায়। ছবি: পিটিআই।

রাজ্যসভায় বাজেটের জবাবি ভাষণ দেওয়ার সময়ে তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েনের সঙ্গে উত্তপ্ত বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়লেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। বাজেটে পশ্চিমবঙ্গকে বঞ্চনা করা হয়েছে— এই সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছিলেন তিনি। সেই সময়ে প্রতিবাদ করে ওঠেন ডেরেক। জানান, কোনও রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে অসম্মানজনক মন্তব্য কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী করতে পারেন না। এর পরেই দু’জনের মধ্যে বাদানুবাদে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। কেন্দ্রের তরফে পাল্টা জবাব দেন জেপি নড্ডা। তৃণমূল সাংসদদের চিৎকারের পাল্টা তিনি বলে ওঠেন, ‘‘এটা কি মাছের বাজার নাকি?’’

বৃহস্পতিবার রাজ্যসভায় বাজেট সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছিলেন নির্মলা। তৃণমূল সাংসদ সাকেত গোখলের প্রশ্ন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘‘আমাকে বলা হয়েছে, কেন বাজেটে পশ্চিমবঙ্গের জন্য একটি টাকাও বরাদ্দ করা হয়নি। বাজেটের তালিকায় রাখা হয়নি ওই রাজ্যের কোনও পর্যটনকেন্দ্রকেও। আমি এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গজেন্দ্র সিংহ শেখাওয়াতের উত্তর উল্লেখ করতে চাই। আমাদের কিছু সদস্য ভাবছেন, বাংলাকে কিছুই দেওয়া হচ্ছে না। এই উত্তরে সেটা নিয়েই বলা হয়েছে।’’

নির্মলা এর পর বলেন, ‘‘গজেন্দ্র বলেছেন, আমরা চার বার পশ্চিমবঙ্গের সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তাদের প্রতিনিধির সঙ্গে ব্যক্তিগত ভাবে কথা বলেছি। লিখিতও দিয়েছি। কিন্তু আমাদের বারংবার চেষ্টা সত্ত্বেও রাজ্য সরকার কোনও প্রস্তাব পাঠায়নি।’’ অর্থমন্ত্রীর এই বক্তব্যের মাঝেই তৃণমূলের সাংসদেরা বিক্ষোভ শুরু করেন। সভা পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন ডেপুটি চেয়ারম্যান হরিবংশ নারায়ণ সিংহ। ডেরেক কিছু বলতে চাইলে তিনি নির্মলাকে থামিয়ে তাঁকে বলার সুযোগ দেন। এতে অসন্তুষ্ট হন নির্মলা।

কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর কথার মাঝেই চিৎকার করে ডেরেক বলে ওঠেন, ‘‘আমি তিন মিনিট ধরে বলার চেষ্টা করছি। নিয়ম অনুযায়ী, যে কোনো বিষয়ে রাজ্যসভার কোনও সদস্য যদি অপর সদস্যকে প্রশ্ন করতে চান, তাঁকে চেয়ারম্যানের মাধ্যমে প্রশ্নটি করতে হয়। এটা নিয়ম। আগে থেকে নোটিস না দিয়ে সভায় কোনও রাজ্য সরকার সম্বন্ধে অসম্মানজনক কিছু বলা যায় না।’’ ডেরেক এর পর কেন্দ্রীয় বঞ্চনার প্রসঙ্গ তুলে বলেন, ‘‘অর্থমন্ত্রীর কাছে আমার প্রশ্ন, বাংলার ১০০ দিনের কাজের সাড়ে সাত হাজার কোটি টাকা কোথায়?’’ ডেরেককে এর পর বসিয়ে দেন ডেপুটি চেয়ারম্যান।

ডেরেকের কথার জবাব দিতে উঠে দাঁড়ান নড্ডা। তিনি বলেন, ‘‘কোনও রাজ্য সরকারকে নিয়ে অসম্মানজনক কিছু বলা হয়নি। বিষয়টি নিয়ে অযথা রাজনীতি করা হচ্ছে। আপনারা একটা করে বিষয় তোলেন এবং এমন হাবভাব করেন, যেন মনে হয় রাজ্যের সঙ্গে অবিচার করা হয়েছে।’’

নড্ডার বক্তৃতার সময়েও তৃণমূল সাংসদেরা চিৎকার করছিলেন। তাতে ক্ষুব্ধ হন নড্ডা। তিনি বলে ওঠেন, ‘‘এটা কি মাছের বাজার নাকি? কথা শোনার মতো ভদ্রতাটুকু নেই আপনাদের! এখানে বাজেট নিয়ে সকলে নিজেদের অভিযোগ জানিয়েছেন। অর্থমন্ত্রী একে একে তার উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করছেন। মোদী সরকার কী করেছে, সেটা বলার চেষ্টা করছেন। পশ্চিমবঙ্গের দুর্নীতিগ্রস্ত সরকার আসলে কোনও সাড়া দিচ্ছে না। আমার অনুরোধ, আপনারা অর্থমন্ত্রীকে বলতে দিন।’’

কিছু ক্ষণ পরে আরও এক বার উঠে দাঁড়ান নড্ডা। তৃণমূল সাংসদদের কটাক্ষ করে বলেন, ‘‘ওঁদের তো বাংলার মানুষকে জবাব দিতে হবে না, জবাব দিতে হবে নিজেদের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তাই ওঁরা এই আচরণ করছেন।’’

লোকসভায় বাজেটের জবাবি ভাষণেও তৃণমূলকে তুলোধনা করেছিলেন নির্মলা। মঙ্গলবার লোকসভায় তৃণমূলের ‘দুর্নীতি’কে নিশানা করে তিনি বলেন, ‘‘তৃণমূলের জমানায় পশ্চিমবঙ্গে দুর্নীতি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ নিয়েছে।’’ ২৫ লক্ষ ভুয়ো জব কার্ডের মাধ্যমে বাংলায় ১০০ দিনের কাজের টাকা নয়ছয়ের অভিযোগ তোলেন তিনি। এ ছাড়া, মিড-ডে মিলে ১০০ কোটি টাকা চুরি এবং ‘রেশন মাফিয়াদের দাপটের’ অভিযোগও তোলা হয়। কেন্দ্রের ‘আয়ুষ্মান ভারত’ কর্মসূচি কেন পশ্চিমবঙ্গ সরকার কার্যকর করেনি, লোকসভার বক্তৃতায় সে প্রশ্ন তুলে নির্মলা বলেছিলেন, ‘‘গরিবদের সরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবা থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে।’’ লোকসভার পর এ বার রাজ্যসভাতেও নির্মলার নিশানায় তৃণমূল।

Nirmala Sitharaman TMC Derek O’Brien JP Nadda Rajya Sabha
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy