ফাইল চিত্র।
জল ইতিমধ্যেই মাথার উপরে চলে গিয়েছে। এ বার কেন্দ্রকে দায়িত্ব নিতে হবে। যা যা কথা দেওয়া হয়েছে, সব পালন করতে হবে। রাজধানীতে অক্সিজেনের ক্রমবর্ধমান সঙ্কট নিয়ে এই মর্মে দিল্লি হাই কোর্টের তীব্র ভর্ৎসনার মুখে পড়ল কেন্দ্র। সেই সঙ্গে কেন্দ্রকে শনিবারের মধ্যে দিল্লির জন্য বরাদ্দ ৪৯০ টন অক্সিজেন দেওয়ার নির্দেশ দিল আদালত। তা না দিতে পারলে আদালত অবমাননার মুখে পড়তে হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেওয়া হল।
রাজধানীর নারকীয় পরিস্থিতি অব্যাহত। আজ আরও একটি মর্মান্তিক ঘটনার সাক্ষী হল দিল্লি তথা গোটা দেশ। অক্সিজেনের অভাবে দিল্লির বাটরা হাসপাতালে মৃত্যু হল আট জনের। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন এক জন চিকিৎসকও। এ নিয়ে চলতি সপ্তাহে দ্বিতীয় বার এমন বিপর্যয় ঘটল।
ওই আট জনের মধ্যে ছ’জন আইসিইউ-তে ভর্তি ছিলেন। বাকি দু'জন ওয়ার্ডে ছিলেন। যে চিকিৎসকের মৃত্যু হয়েছে, তাঁর নাম আর কে হিমথানি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে বলা হয়েছে, ‘‘সকাল ১১টা ৪৫ মিনিট নাগাদ অক্সিজেন শেষ হয়ে যায়। ১ ঘণ্টা ২০ মিনিট অক্সিজেন ছিল না। দুপুর দেড়টায় আবার অক্সিজেন সরবরাহ করা হয়।’’
শনিবার কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৪ লাখ ১ হাজার ৯৯৩ জন, মৃত্যু হয়েছে ৩৫২৩ জনের। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের অনেক বাইরে বুঝে মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিবাল দিল্লিতে লকডাউনের মেয়াদ আরও এক সপ্তাহ বাড়ানোর কথা ঘোষণা করেছেন। দিল্লির বাটরা হাসপাতালে অক্সিজেনের অভাবে মৃত্যুর ঘটনায় চরম উষ্মা প্রকাশ করেছে দিল্লি হাই কোর্ট। বিচারপতি বিপিন সাঙ্ঘি এবং বিচারপতি রেখা পাল্লির ডিভিশন বেঞ্চ কেন্দ্রকে বলেছে, ‘‘যথেষ্ট হয়েছে। আপনারা কি বলতে চাইছেন, দিল্লিতে মানুষ মারা যাচ্ছে আর আমরা চোখ বন্ধ করে থাকব?’’ সেখানেই থামেনি দিল্লি হাই কোর্ট। ডিভিশন বেঞ্চ বলেছে, ‘‘আমরা বলছি, কাজ দরকারে। মাথার উপরে জল চলে গিয়েছে। কেন্দ্রকে নির্দেশ দিচ্ছি, আজই ৪৯০ টন মেডিক্যাল অক্সিজেন যে ভাবে হোক দিল্লিকে দিতে। কেন্দ্রকে অক্সিজেন ট্যাঙ্কারও জোগাড় করতে হবে। ২০ এপ্রিল এই পরিমাণ নির্দিষ্ট করা হয়েছিল এবং এক দিনও দিল্লি তা পায়নি। এই নির্দেশ রূপায়িত না-হলে আমরা আদালত অবমাননা সংক্রান্ত প্রক্রিয়া শুরু করব।’’
হাই কোর্টে শুনানির কয়েক ঘণ্টা আগেই বাটলা হাসপাতালে অক্সিজেনের অভাবে মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। হাসপাতালের বক্তব্য, যে সংস্থার থেকে অক্সিজেন পাওয়ার কথা ছিল, তাদের থেকে অক্সিজেন মেলেনি। সকাল সাতটা নাগাদ তা সরকার-নিযুক্ত আধিকারিকদের জানানো হয়। কিন্তু তাতেও কোনও কাজ হয়নি। প্রয়োজনের তুলনায় কম অক্সিজেন দেওয়া হয়েছিল বলেও অভিযোগ। হাসপাতালের এগ্জিকিউটিভ ডিরেক্টর সুধাংশু বাঙ্কাটা আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, ‘‘সংখ্যাটা আটে থামবে না।’’ দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় এই প্রথম করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৪ লক্ষের বেশি মানুষ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy