আবার এক মঞ্চে দেখা গেল উদ্ধব ঠাকরে এবং রাজ ঠাকরকে। গত সাড়ে চার মাসের মধ্যে এই নিয়ে তৃতীয় বার। বালাসাহেব ঠাকরের ত্রয়োদশ মৃত্যুবার্ষিকীতে সোমবার মুম্বইয়ের শিবাজি পার্কের সভায় ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের বার্তা দিলেন দুই তুতো ভাই। মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা শিবসেনা (ইউবিটি)-র প্রধান উদ্ধবের স্ত্রী রশ্মি এবং পুত্র আদিত্য হাজির ছিলেন মঞ্চে। ছিলেন মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনা (এমএনএস)-র প্রতিষ্ঠাতা-প্রধান রাজের পুত্র অনিলও।
মহারাষ্ট্রের রাজনীতিতে বালাসাহেবের ‘রাজনৈতিক উত্তরাধিকার’ আর কোনও ঠাকরের হাতে নেই। প্রয়াত ‘মরাঠা হৃদয়সম্রাট’ যে শিবসেনা গড়েছিলেন, সেই দলের নাম এবং নির্বাচনী প্রতীক (তির-ধনুক) এখন একনাথ শিন্দের দখলে। ক্ষমতার লড়াইয়ে হেরে গিয়েছেন পুত্র উদ্ধব ঠাকরে। বালাসাহেবের জীবদ্দশাতেই শিবসেনা ভেঙে নতুন দল গড়া ভ্রাতুষ্পুত্র রাজও মরাঠা রাজনীতিতে কোণঠাসা। গত বছরের বিধানসভা ভোটে বিজেপি-শিন্ডেসেনা-এনসিপি (অজিত) জোটের কাছে পর্যুদস্ত হয়েছেন দুই ঠাকরেই।
এই পরিস্থিতিতে গত ৫ জুলাই কাছাকাছি আসার বার্তা দিয়েছিলেন দুই তুতো ভাই। ১৮ বছর পরে আবার এক মঞ্চে দাঁড়িয়ে, ‘হিন্দি আগ্রাসনের’ বিরুদ্ধে মরাঠি অস্মিতাকে রক্ষার জন্য ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের বার্তা দিয়েছিলেন রাজ-উদ্ধব। এর পরে গত ৩০ অক্টোবর রাজধানী মুম্বইয়ে ভোটার তালিকায় কারচুপির বিরুদ্ধে যৌথ সম্মেলন করেন তাঁরা। এনসিপি (এসপি) প্রধান শরদ পওয়ার এবং আর এক বিরোধী দল কংগ্রেসের নেতারাও ওই আলোচনাসভায় হাজির ছিলেন।
ইতিহাস বলছে, ২০০৬ সালে রাজ শিবসেনার সঙ্গ ছেড়ে নিজের দল মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনা (এমএনএস) গড়েছিলেন। বালাসাহেব তখনও বেঁচে এবং রাজনীতিতে সক্রিয়। পিতৃব্যের নামে একটি অভিযোগ না করলেও প্রকাশ্যে উদ্ধবের ‘নেতৃত্বগুণ’ নিয়ে কটাক্ষ করেছিলেন তিনি। সুবক্তা রাজ রাজনীতিতে এসেছিলেন উদ্ধবের অনেক আগে। তাঁর সাংগঠনিক দক্ষতাও ছিল সুবিদিত। বস্তুত, দীর্ঘ দিন বালাসাহেবের ‘রাজনৈতিক সহযোগী’ ছিলেন রাজই। সে সময় উদ্ধব ব্যস্ত থাকতেন বন্যপ্রাণীদের ক্যামেরাবন্দি করার শখ নিয়ে। কিন্তু প্রাথমিক ভাবে মরাঠি জনসমাজে ঢেউ তুললেও দীর্ঘমেয়াদি রাজনীতিতে সফল হতে পারেননি রাজ। এর আগে ২০১৪ সালের ১৭ নভেম্বর শিবসেনার প্রতিষ্ঠাতা বালাসাহেব ঠাকরের দ্বিতীয় প্রয়াণদিবসে এক মঞ্চে দেখা গিয়েছিল উদ্ধব এবং রাজকে।