Advertisement
E-Paper

পহেলগাঁও-সিঁদুর-ট্রাম্প ‘রহস্য’ থেকে বিহারের ভোটার সমীক্ষা! বাদল অধিবেশনে ঝড় তোলার ইঙ্গিত দিয়ে দিল ‘ইন্ডিয়া’ বৈঠক

শনিবার ভার্চুয়াল মাধ্যমে বৈঠক করেন ইন্ডিয়ার নেতারা। বৈঠকের পৌরোহিত্য করেন কংগ্রেস নেত্রী সনিয়া গান্ধী। দিল্লির ১০, জনপথ থেকে সনিয়ার সঙ্গে বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীও। কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ জানিয়েছেন, মোট ২৪টি বিরোধী দলের নেতারা শনিবারের বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৯ জুলাই ২০২৫ ২৩:৩৪
শনিবার ভার্চুয়াল মাধ্যমে বৈঠক করেন ইন্ডিয়ার নেতারা।

শনিবার ভার্চুয়াল মাধ্যমে বৈঠক করেন ইন্ডিয়ার নেতারা। ছবি: সংগৃহীত।

সোমবার থেকে শুরু হচ্ছে সংসদের বাদল অধিবেশন। তার আগেই সর্বভারতীয় স্তরের বিজেপি বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র বৈঠকে কার্যত ঝড় তোলার প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেল। সূত্রের খবর, আসন্ন অধিবেশনে মূলত চারটি বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকার তথা বিজেপিকে চেপে ধরতে চাইছে বিরোধী দলগুলি। এক,পহেলগাঁও কাণ্ড। দুই, তার পরবর্তীতে অপারেশন সিঁদুর। তিন, যুদ্ধবিরতি ঘোষণা নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভূমিকা, এবং চার, বিহারে ভোটার সমীক্ষা।

শনিবার ভার্চুয়াল মাধ্যমে বৈঠক করেন ইন্ডিয়ার নেতারা। বৈঠকের পৌরোহিত্য করেন কংগ্রেস নেত্রী সনিয়া গান্ধী। দিল্লির ১০, জনপথ থেকে সনিয়ার সঙ্গে বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীও। কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ জানিয়েছেন, মোট ২৪টি বিরোধী দলের নেতারা শনিবারের বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন। ছিলেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে, তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক, জম্মু কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ, ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সরেন, আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব, সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক এমএ বেবি-সহ বিরোধী দলগুলির নেতারা।

পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার পরবর্তীতে সমস্ত বিরোধী দলই কেন্দ্রীয় সরকারের পাশে থাকার কথা ঘোষণা করেছিল। কিন্তু তাদের বক্তব্য, পহেলগাঁও কাণ্ড এবং তার পরবর্তী অপারেশন সিঁদুর নিয়ে কেন্দ্র দেশের মানুষকে এখনও অন্ধকারে রেখেছে। আদৌ কী ঘটনা ঘটেছে, সে ব্যাপারে দেশের মানুষের মনে ধোঁয়াশা রয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার এ বিষয়ে কিছুই স্পষ্ট করে জানায়নি। সংসদে বিশেষ অধিবেশন ডাকার দাবি তুললেও তাতে কর্ণপাত করেনি বিজেপি। ফলে বাদল অধিবেশনে এ নিয়েই বিজেপি তথা নরেন্দ্র মোদী সরকারকে চেপে ধরতে চাইছে বিরোধীরা।

সূত্রের খবর, ভারত-পাক সংঘর্ষের আবহে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যে ভাবে যুদ্ধবিরতির কথা ঘোষণা করেছিলেন, তা নিয়েও বাদল অধিবেশনে সরব হতে চলেছে বিরোধীরা। কী ভাবে ট্রাম্প এই ভূমিকায় অবতীর্ণ হলেন এবং তা নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার কেন নীরব, সে প্রশ্ন তোলা হবে বিরোধীদের তরফে।

সূত্রের খবর, বৈঠকে তৃণমূলের অভিষেক বলেছেন, এখন ভারতের এমন অবস্থা হয়েছে যে দেশের মানুষ অন্ধকারে। কেন্দ্রীয় সরকার কিছুই জানাচ্ছে না। ট্রাম্পের সমাজমাধ্যম দেখে দেশের মানুষকে সব জানতে হচ্ছে! প্রসঙ্গত, পহেলগাঁও এবং অপারেশন সিঁদুর পরবর্তী সময়ে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বহুদলীয় প্রতিনিধি দল পাঠিয়েছিল কেন্দ্র। তেমনই একটি দলে ছিলেন অভিষেকও। জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, ইন্দোনেশিয়া-সহ এশিয়ার পাঁচটি দেশে গিয়েছিল অভিষেকের সেই দল। সূত্রের খবর, বিদেশে প্রতিনিধি দল পাঠিয়ে কী লাভ হয়েছে, ইন্ডিয়ার বৈঠকে সেই প্রশ্নও তুলেছেন অভিষেক। তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিষেক বলেছেন, বিদেশে প্রতিনিধি দল পাঠিয়ে কী আদৌ ভাল কিছু হল? ক’টা দেশ ভারতের পক্ষ নিল? এশিয়ার কোনও দেশ তো পাকিস্তানের নাম করে সমালোচনা পর্যন্ত করল না।

এই বিষয়গুলির পাশাপাশি বিহারের ভোটার সমীক্ষা নিয়েও বাদল অধিবেশনে প্রশ্নের ঝড় তুলতে চায় ইন্ডিয়া-ভুক্ত দলগুলি। নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা এবং নেপথ্যে বিজেপির পৃষ্ঠপোষকতার অভিযোগ তুলে সরব হতে চায় বিরোধী দলগুলি। ইতিমধ্যেই তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ বিভিন্ন বিরোধী দলের নেতারা এ নিয়ে পৃথক পৃথক ভাবে সরব হয়েছেন। তবে সংসদের বাদল অধিবেশনে সংগঠিত ভাবে ভোটার সমীক্ষার বিরোধিতা করতে চলেছে ইন্ডি জোট।

কংগ্রেসের তরফে বলা হয়েছে, যে কায়দায় নির্বাচন কমিশন সমীক্ষা করে নাম বাদ দেওয়ার প্রক্রিয়ার পরিকল্পনা করছে তা আসলে ভোটরদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা। একই সঙ্গে এই প্রক্রিয়াকে আদতে এনআরসি বা জাতীয় নাগরিক পঞ্জিকে রূপায়িত করার কৌশল হিসাবেও দেখছে ইন্ডিয়ার নেতৃত্ব।

প্রসঙ্গত, লোকসভা ভোট হওয়ার পরে এক বছর পেরিয়ে গিয়েছে। তৃতীয় বার সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে মোদীর নেতৃত্বে। অথচ মোদীর তৃতীয় মেয়াদে এখনও পর্যন্ত সংসদের যে ক’টি অধিবেশন হয়েছে, কোনওটিতেই ঐক্যবদ্ধ ভাবে বিরোধীদের সরব হতে দেখা যায়নি। কংগ্রেস এক রকম ভাবে চলেছে। আঞ্চলিক দলগুলি কখনও কংগ্রেসের সঙ্গে থেকেছে, কখনও আবার হেঁটেছে নিজের পথে। ফলে গত এক বছরে সংসদে বিরোধী ঐক্যের ছবি বিশেষ দেখা যায়নি। বাদল অধিবেশনে বিরোধী ঐক্য কতটা মজবুত হয়, সেটাই এখন দেখার।

INDIA Alliance
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy