Advertisement
০২ মে ২০২৪
Special Session of Parliament

নির্বাচন কমিশনার বিল কি উঠবে আদৌ, ধোঁয়াশা

গত কাল বৈঠকে সরকার পক্ষ ওই বিলটি নিয়ে উচ্চবাচ্য না করায় ধোঁয়াশা তৈরি হয় সর্বস্তরেই। ফলে আটটি বিলের সঙ্গে ওই বিলটি এ যাত্রা আসবে কি না, তা নিয়ে এখনও কার্যত দিশাহীন বিরোধী পক্ষ।

representational image

—প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৮:৩৭
Share: Save:

সংসদের বিশেষ অধিবেশন শুরুর দিনে আলোচনার কেন্দ্রে রইল যে নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ বিল, সেটা আদৌ আসবে কি না তা নিয়ে ধন্দে বিরোধীরা। গত বুধবার বিশেষ অধিবেশনের যে কার্যসূচি প্রকাশ করা হয়, তাতে উল্লেখ ছিল ওই বিলের। লোকসভা নির্বাচনের আগে নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের সম্পূর্ণ ক্ষমতা নিজেদের হাতে নিতেই বিলটি সরকার আনতে চলেছে বলে বিরোধীরা তখন সরব
হয়েছিলেন। কিন্তু গত কাল সর্বদলীয় বৈঠকে সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশী যে আটটি বিল এই অধিবেশনে আসতে চলেছে বলে জানান, তার মধ্যে এই নিয়োগ বিলের উল্লেখ
ছিল না।

গত কাল বৈঠকে সরকার পক্ষ ওই বিলটি নিয়ে উচ্চবাচ্য না করায় ধোঁয়াশা তৈরি হয় সর্বস্তরেই। ফলে আটটি বিলের সঙ্গে ওই বিলটি এ যাত্রা আসবে কি না, তা নিয়ে এখনও কার্যত দিশাহীন বিরোধী পক্ষ। আজ রাজ্যসভায় তৃণমূলের দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন বলেন, ‘‘বিশেষ অধিবেশনে কী আসতে চলেছে, তা আমরা কেন, সরকারেরও কেউ জানেন না। ব্যতিক্রম এক জন। তিনি নরেন্দ্র মোদী। যিনি সব জানেন।’’ অনেকের আশঙ্কা, বিশেষ অধিবেশনের শেষ পর্বে ওই বিলটি নিয়ে আসতে পারে সরকার। আবার কারও কারও মতে, পূর্ণ মাত্রায় বিরোধিতা হতে পারে মনে করেই বিশেষ অধিবেশনে বিলটি আনার ক্ষেত্রে মোদী সরকার
পিছিয়ে গিয়েছে।

গত অধিবেশনে রাজ্যসভায় পেশ হওয়া ওই বিলে প্রস্তাব করা হয়েছে, এ বার থেকে নির্বাচন কমিশনার বাছাইয়ের তিন সদস্যের কমিটির সদস্য হবেন, প্রধানমন্ত্রী, লোকসভার বিরোধী দলনেতা ও প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচিত কোনও একজন মন্ত্রী। বাদ পড়বেন দেশের প্রধান বিচারপতি। সে ক্ষেত্রে বিরোধী দলনেতার আপত্তি থাকলেও প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর মন্ত্রিসভার সতীর্থের সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে নিয়োগ সংক্রান্ত যে কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারবে সরকার পক্ষ। বিষয়টি নিয়ে গোড়া থেকেই আপত্তি জানিয়ে আসছিলেন বিরোধীরা। বিলটি এ বারে আলোচনার জন্য উভয় কক্ষে উঠলে তীব্র বিরোধিতার হুমকি দিয়ে রেখেছিলেন তাঁরা। সেটা বুঝেই কেন্দ্র আপাতত ওই বিলটি এড়িয়ে যাওয়ার কৌশল নিয়ে থাকতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে। সব পক্ষই এখন অধীর আগ্রহে দেখতে চাইছে, নির্ধারিত আটটি বিল পাশ হয়ে যাওয়ার পরে বিতর্কিত বিলটি আনার ঝুঁকি সরকার নেয় কি না।

এ দিকে যে আটটি বিলের উল্লেখ গত কালের সর্বদলীয় বৈঠকে করা হয়েছে, তার মধ্যে তিনটির উল্লেখ ছিল বুধবার প্রকাশিত কার্যসূচিতে। সেগুলি হল, আইনজীবী সংশোধনী, প্রেস ও রেজিস্ট্রেশন অব পিরিয়ডিক্যালস বিল এবং পোস্ট অফিস বিল। এ ছাড়া বয়স্ক নাগরিক কল্যাণ বিল, পুরনো অপ্রয়োজনীয় আইন বাতিল সংক্রান্ত বিল, জম্মু-কাশ্মীর সংরক্ষণ সংশোধনী বিল এবং সংবিধান সংশোধনী (জম্মু-কাশ্মীর) নির্দেশনামা সংক্রান্ত দু’টি বিল রাখা হয়েছে, যাতে জম্মু-কাশ্মীরের বেশ কিছু শ্রেণিকে তফসিলি জাতি ও জনজাতি তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার কথা বলা হয়েছে। বিরোধীদের মতে, এই আটটি বিল অতীব সাধারণ বিল। এগুলি পাশ করানোর জন্য বিশেষ অধিবেশন ডাকার প্রয়োজন ছিল না। যেহেতু বিশেষ অধিবেশন, তাই শেষ মুহূর্তে মহিলা সংরক্ষণ কিংবা দেশের নাম ভারত রাখার প্রস্তাব সম্বলিত কোনও চমকদার বিল সরকার তার আস্তিন থেকে বার করে কি না, সেটাই এখন দেখার। আজ কেন্দ্রীয়
মন্ত্রিসভায় মহিলা বিলটি পাশ হয়ে যাওয়ার পরে এই জল্পনা আরও জোরদার হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Election Commission of India
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE