Advertisement
E-Paper

‘লিখে রাখুন, পাকিস্তান যুদ্ধবিরতির জন্য অনুরোধ করেনি’, ভারতের বক্তব্য অস্বীকার করে দাবি পাকিস্তানের

রবিবার ভারতীয় সেনাবাহিনী জানায়, ‘অপারেশন সিঁদুর’-এ শুধু পাকিস্তানের জঙ্গিঘাঁটি ধ্বংস করা হয়েছে। কী ভাবে পাকিস্তানের হামলার চেষ্টা ব্যর্থ করা হয়েছে, তা-ও জানিয়েছে ভারতীয় সেনা।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১২ মে ২০২৫ ১০:৩৫
(ইনসেটে) পাকিস্তান সেনার মুখপাত্র লেফটেনান্ট জেনারেল আহমেদ শরিফ চৌধরি।

(ইনসেটে) পাকিস্তান সেনার মুখপাত্র লেফটেনান্ট জেনারেল আহমেদ শরিফ চৌধরি। ছবি: সংগৃহীত।

পাকিস্তান কখনওই যুদ্ধবিরতির জন্য অনুরোধ করেনি। ভারতীয় সেনার বক্তব্য উড়িয়ে পাল্টা দাবি করল পাক সেনা। পাক সংবাদমাধ্যম ‘ডন’-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, রবিবার রাতে পাকিস্তান সেনার মুখপাত্র লেফটেনান্ট জেনারেল আহমেদ শরিফ চৌধরি এই দাবি করেছেন। রবিবার ভারতীয় সেনাবাহিনী জানায়, ‘অপারেশন সিঁদুর’-এ শুধুই পাকিস্তানের জঙ্গিঘাঁটি ধ্বংস করা হয়েছে। কী ভাবে পাকিস্তানের হামলার চেষ্টা ব্যর্থ করা হয়েছে, তা-ও জানিয়েছে ভারতীয় সেনা। যদিও পাকিস্তান সেনা সাংবাদিক বৈঠক করে উল্টো তথ্যই প্রকাশ করেছে। ভারতের অভিযোগ উড়িয়ে বার বার দাবি করেছে, ভারতের হামলায় পাকিস্তানের সাধারণ মানুষের প্রাণ গিয়েছে। তাদের আরও দাবি, পাকিস্তানি সেনার আঘাতে ভারতের কয়েকটি বায়ুসেনাঘাঁটি ক্ষতিগ্রস্তও হয়েছে। যদিও ভারতীয় সেনাবাহিনীর তরফে এমন কিছু জানানো হয়নি।

পাকিস্তানের সঙ্গে শনিবার যুদ্ধবিরতির কথা ঘোষণা করেছে ভারতীয় সেনা। তার আগে সমাজমাধ্যমে পোস্ট দিয়ে দুই দেশকে অভিনন্দন জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আমেরিকার সংবাদমাধ্যমগুলি জানিয়েছে, কী ভাবে দুই দেশের মধ্যে মধ্যস্থতা করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। এই আবহে জল্পনা তৈরি হয়েছে যে, যুদ্ধবিরতির জন্য কোন পক্ষ প্রথম দাবি তুলেছে। ডিরেক্টর জেনারেল অফ মিলিটারি অপারেশন (ডিজিএমও) লেফটেনান্ট জেনারেল রাজীব ঘাই রবিবার জানান, পাকিস্তানের ডিজিএমও যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিয়েছিলেন। সেই বক্তব্য অস্বীকার করেছে পাক সেনা। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট জেনারেল চৌধরি বলেন, ‘‘লিখে রাখুন যে, পাকিস্তান যুদ্ধবিরতির জন্য অনুরোধ করেনি।’’ তবে তিনি এ-ও জানিয়েছেন যে, পরমাণু শক্তিধর দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধের জায়গা থাকতে পারে না। তিনি দাবি করেছেন যে, এই সাংঘাতের আবহ পাকিস্তান ‘পরিণত ভাবে’ সামলেছে। ‘তীব্রতা নিয়ন্ত্রণ করে জবাব’ দেওয়া হয়েছে বলেও দাবি জেনারেল চৌধরির।

রবিবারে পাকিস্তানের ওই সাংবাদিক বৈঠকে ছিলেন পাক বায়ুসেনার ডিরেক্টর জেনারেল পাবলিক রিলেশন এয়ার ভাইস মার্শাল অওরঙ্গজেব আহমেদ, নৌবাহিনী (অপারেশনস) ডেপুটি চিফ ভাইস অ্যাডমিরাল রাজা রব নওয়াজ়। সেখানেই পাকিস্তান সেনাবাহিনীর মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট জেনারেল চৌধরি দাবি করেছেন যে, ভারতের বায়ুসেনাঘাঁটিতে আঘাত হেনেছে পাকিস্তান। তাঁর দাবি, ৬-৭ মে রাতে শুরু হয় ‘হানা’। তাতে প্রাণ গিয়েছে পাকিস্তানের সাধারণ নাগরিকের। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন মহিলা, শিশু, বৃদ্ধ। যদিও ভারত প্রথমেই জানিয়ে দিয়েছিল, পাকিস্তানের জঙ্গিঘাঁটি নিশানা করেছিল ভারতীয় বাহিনী। ওই অভিযানে পাকিস্তান এবং পাক অধিকৃত কাশ্মীর মিলিয়ে মোট ৯টি জঙ্গিঘাঁটি ধ্বংস করেছে ভারত। সূত্রের খবর, নিহত হয়েছে শতাধিক জঙ্গি। এর মধ্যে ইউসুফ আজ়হার, আব্দুল মালিক রাউফ এবং মুদস্‌সর আহমেদের মতো বেশ কিছু জঙ্গি রয়েছে, যাদের নাম বিভিন্ন সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপে উঠে এসেছিল। নিহত জঙ্গিদের মধ্যে আইসি ৮১৪ বিমান অপহরণ (কান্দাহার অপহরণ) এবং পুলওয়ামা হামলায় জড়িত জঙ্গিও রয়েছে বলে জানিয়েছে সেনা।

পাক সেনার মুখপাত্র দাবি করেন, ‘‘ভারতের সুরতগড়, সিরসা, আদমপুর, ভুজ, নালিয়া, ভাটিন্ডা, বরনালা, হলওয়ারা, অবন্তীপোরা, শ্রীনগর, জম্মু, মামুন, অম্বালা, উধমপুর, পঠানকোটে বায়ুসেনাঘাঁটিতে নিশানা করা হয়েছে। সেগুলির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।’’ পাশাপাশি পাকিস্তান এ-ও দাবি করেছে যে, ভারতের ছোড়া ব্রহ্মস তারা ধ্বংস করেছে।

ভারতের সামরিক বাহিনীর তরফে সাংবাদিক বৈঠকে জানানো হয়, পাকিস্তানি সেনা বা সীমান্তের ও পারের বাসিন্দাদের সঙ্গে ভারতের কোনও লড়াই নেই। ভারতের লড়াই সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে। ভারত এ-ও জানিয়েছে যে, এই সূত্রপাত করেছিল পাকিস্তানই। ৭-১০ মে-র মধ্যে ভারতীয় সেনার জবাবি হামলায় পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর প্রায় ৩৫-৪০ জওয়ানের মৃত্যু হয়েছে।

পাকিস্তান এই দাবিও করেছে যে, ভারতের হানায় তাদের দেশের ৩১ জন সাধারণ মানুষ নিহত হয়েছেন। প্রত্যাঘাতে তারা ভারতের বেশ কয়েকটি বায়ুসেনাঘাঁটিতে আঘাত হেনেছে। ১৯৭১ সালের পরে একটি অভিযানে এত আঘাত তারা হানতে পারেনি। পাকিস্তানি নৌসেনা দাবি করেছে, ভারতীয় যুদ্ধজাহাজ আইএনএস বিক্রান্তও করাচি বন্দরের কাছে হানা দেয়নি। ৯ মে পাকিস্তানি উপকূল থেকে এটি ৪০০ নটিক্যাল মাইল দূরে ছিল। পরে পিছু হটে যায়। যদিও ভারতীয় বাহিনী কখনওই বলেনি যে, আইএনএস বিক্রান্ত করাচির দিকে অগ্রসর হয়েছিল।

Pahalgam Terror Attack
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy