পহেলগাঁও হত্যাকাণ্ডের পরবর্তী পরিস্থিতিতে জম্মু ও কাশ্মীরে ভারত-পাকিস্তান নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর উত্তেজনা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। শনিবার রাতেও নিয়ন্ত্রণরেখা সংলগ্ন অঞ্চলে সংঘর্ষবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করলে গুলি চালানোর অভিযোগ উঠেছে পাকিস্তানি সেনার বিরুদ্ধে। এই নিয়ে টানা দশ রাত সংঘর্ষবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে গুলি চালানোর অভিযোগ উঠল পাক ফৌজ়ের বিরুদ্ধে। শনিবারই রাজস্থানে সীমান্তরক্ষী বাহিনীর হাতে আটক হয়েছেন পাক রেঞ্জার্সের এক জওয়ান। ওই ঘটনার কয়েক ঘণ্টা পরে গত রাতে জম্মু ও কাশ্মীরের পাঁচটি জেলার মোট আটটি অঞ্চলে নিয়ন্ত্রণরেখার অপর প্রান্তে গুলি চালিয়েছে পাক সেনা। দাবি করা হচ্ছে, গত ১০ দিনে এটিই সবচেয়ে বড় মাপের সংঘর্ষবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন।
শনিবার রাতে জম্মু ও কাশ্মীরের কুপওয়ারা, বারামুলা, পুঞ্চ, রাজৌরি, মেন্ধর, নওশেরা, সুন্দরবনি এবং আখনুর অঞ্চলে নিয়ন্ত্রণরেখার অপর প্রান্তে বিনা প্ররোচনায় গুলিবর্ষণ করেছে পাকিস্তানি সেনা। জবাব দিয়েছে ভারতীয় সেনাও। রবিবার সকালে ভারতীয় সেনার তরফে জানানো হয়েছে, পাক সেনার গুলি চালানোর পরে সমপর্যায়ে জবাব দিয়েছে ভারতীয় সেনা। বস্তুত, ২০২১ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে সংঘর্ষবিরতি চুক্তি পুনর্নবীকরণের পর থেকে নিয়ন্ত্রণরেখা এবং আন্তর্জাতিক সীমান্ত বরাবর এই ধরনের ঘটনা অনেকটাই কমে গিয়েছিল। তবে পহেলগাঁও কাণ্ডের পর ভারত-পাক উত্তেজনার আবহে নিয়ন্ত্রণরেখাতেও উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছে।
আরও পড়ুন:
গত ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে জঙ্গিদের হত্যালীলায় ২৬ জনের মৃত্যু হয়। নিহতদের মধ্যে ২৫ জনই ছিলেন পর্যটক। ওই ঘটনায় সীমান্তপারের যোগ রয়েছে বলে অভিযোগ তোলে ভারত এবং পরের দিনই সিন্ধু জলচুক্তি স্থগিত রাখার কথা ঘোষণা করে নয়াদিল্লি। সঙ্গে পাকিস্তানিদের ভিসা বাতিল-সহ আরও বেশ কিছু কূটনৈতিক পদক্ষেপ করা হয়। তার পরে গত ২৪ এপ্রিল থেকে প্রতি রাতেই বিনা প্ররোচনায় কাশ্মীরে নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর সংঘর্ষবিরতি চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠে আসছে পাক সেনার বিরুদ্ধে। প্রথম দিকে উত্তর কাশ্মীরের কুপওয়ারা এবং বারামুলা জেলায় নিয়ন্ত্রণরেখার অপর প্রান্ত কিছু অঞ্চল থেকে গুলি চালানোর অভিযোগ উঠেছিল। ধীরে ধীরে তা ছড়াতে থাকে পুঞ্চ সেক্টর এবং জম্মুর আখনুর সেক্টরের দিকেও। গত রাতে রাজৌরি জেলার নওশেরা এবং সুন্দরবনিতেও সংঘর্ষবিরতি চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে পাক ফৌজের বিরুদ্ধে।