ভারতের মতো দেশে দেশে প্রতিনিধিদল পাঠাতে চলেছে পাকিস্তানও। ‘অপারেশন সিঁদুর’ এবং ‘অপারেশন বুনিয়ান-আন-মারসুসের’ পর এখন ভারত-পাক সংঘর্ষবিরতি চলছে। এই পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক মহলের সামনে পাকিস্তানের অবস্থান স্পষ্ট করতে চায় ইসলামাবাদ। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ় শরিফ সে দেশের শাসক জোটের সহযোগী পাকিস্তান পিপল্স পার্টি (পিপিপি)-র নেতা তথা প্রাক্তন বিদেশমন্ত্রী বিলাবল ভুট্টো জ়ারদারিকে এই দায়িত্ব দিয়েছেন। পাকিস্তানের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বে থাকবেন বিলাবল।
পাকিস্তানের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বের বিষয়ে কথা বলতে বিলাবলকে ফোন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শরিফ। সে কথা সমাজমাধ্যমে জানান বিলাবল। তিনি লিখেছেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ় শরিফ আজ একটু আগে আমাকে ফোন করেছিলেন। তিনি পাকিস্তানের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য আমাকে অনুরোধ করেছেন। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পাকিস্তানের পরিস্থিতি এবং শান্তির বার্তা পৌঁছে দিতে যাবে এই প্রতিনিধিদল। এই দায়িত্ব পেয়ে আমি সম্মানিত। কঠিন পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের সেবা করতে আমি বদ্ধপরিকর।’’
আরও পড়ুন:
ভারত সরকার শনিবার জানিয়েছে, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের অবস্থান এবং ‘অপারেশন সিঁদুর’ নিয়ে বার্তা দিতে বিভিন্ন দেশে যাবে সাতটি সর্বদলীয় প্রতিনিধিদল। ওই সাত দলের নেতৃত্বে কারা থাকবেন, সেই নামের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। শুধু কেন্দ্রীয় শাসকদল বিজেপি নয়, অন্যান্য দলের সাংসদদেরও এই প্রতিনিধিদলগুলির নেতৃত্বে রাখা হয়েছে। চলতি মাসের শেষের দিকেই এই দলগুলি রওনা দেবে। রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য রাষ্ট্রগুলিতেও যাবে ভারতের প্রতিনিধিদল। ভারত-পাক সাম্প্রতিক সংঘাত, ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’ অভিযান, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের কঠোর অবস্থান সম্পর্কে আন্তর্জাতিক মহলকে অবগত করাই এই প্রতিনিধিদলগুলির লক্ষ্য হতে চলেছে। সাত নেতার অধীনে বিভিন্ন দলের রাজনীতিবিদ, কূটনীতিকেরাও থাকবেন। একই পথে হাঁটতে চলেছে পাকিস্তানও। তবে এখনও পর্যন্ত তারা একটি প্রতিনিধিদল গঠন করছে বলেই জানা গিয়েছে।
গত ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার ঘটনায় ২৬ জনের মৃত্যু হয়। সেই ঘটনায় পাকিস্তানকে দায়ী করে একাধিক পদক্ষেপ করেছিল ভারত। পাকিস্তান প্রথম থেকেই দাবি করে আসছে, এই ঘটনার সঙ্গে তাদের কোনও যোগ নেই। পহেলগাঁও কাণ্ডের নিরপেক্ষ আন্তর্জাতিক তদন্তের দাবিও জানিয়ে এসেছে ইসলামাবাদ। তার মাঝেই গত ৬ মে গভীর রাতে পাকিস্তানে হামলা চালায় ভারত। প্রত্যাঘাতের অভিযানের নাম দেওয়া হয় ‘অপারেশন সিঁদুর’। পাকিস্তানের একাধিক জঙ্গিঘাঁটি ধ্বংস হয় ভারতের গোলায়। এর পর পাকিস্তানও প্রত্যাঘাত করে। টানা চার দিন সীমান্তে সংঘর্ষ জারি ছিল। গত ১০ মে দুই দেশ সংঘর্ষবিরতিতে সম্মত হয়েছে।