বিধানসভা ভোটের আগে নতুন জল্পনা দানা বাঁধল বিহারের রাজনীতিতে। সৌজন্যে, পূর্ণিয়ার নির্দল সাংসদ পাপ্পু যাদব। বুধবার ৭৫ বছরে পা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাঁকে শুভেচ্ছা জানাতে গিয়ে একটি ছবি সমাজমাধ্যমে পোস্ট করেছেন পাপ্পু। আর তা নিয়েই শুরু হয়েছে আলোচনা।
গত সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) প্রধানমন্ত্রী মোদী কলকাতা থেকে পূর্ণিয়ায় গিয়ে উদ্বোধন ও শিলান্যাস করেছিলেন প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকার প্রকল্পের। সরকারি সেই কর্মসূচিতে ছিলেন পাপ্পুও। প্রধানমন্ত্রীকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাতে গিয়ে সেই ছবিই পোস্ট করেছেন পাপ্পু। চলতি বছরের নভেম্বরে বিহারে বিধানসভা ভোট হওয়ার কথা। তার আগে পাপ্পুর সমাজমাধ্যমে মোদীর উপস্থিতি তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হয়েছে।
ঘটনাচক্রে, ২০২৪-এর লোকসভা ভোটে পূর্ণিয়ায় নির্দল প্রার্থী হিসেবে জেতা পাপ্পু যাদব গত মাসে আগাগোড়া হাজির ছিলেন রাহুল গান্ধীর ১৬ দিনের ‘ভোটার অধিকার যাত্রা’য়। সেখানে আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদবকে ‘বিহারবাসীর আশার আলো’ বলেছিলেন তিনি। এর পর দিল্লিতে রাহুল এবং কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গের সঙ্গেও বৈঠকে দেখা গিয়েছে তাঁকে। পাপ্পুর স্ত্রী রঞ্জিতা প্রাক্তন কংগ্রেস সাংসদ এবং বিহার প্রদেশ কংগ্রেসের গুরুত্বপূর্ণ নেত্রী। এই পরিস্থিতিতে স্বামী-স্ত্রী মিলে বিজেপিতে যোগ দিতে পারেন বলে জল্পনা শুরু হয়েছে।
আরও পড়ুন:
যদিও অনেকে মনে করছেন, বিহারের আসন্ন বিধানসভা ভোটে অনুগামীদের টিকিট পাইয়ে দেওয়ার জন্য বিজেপি বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র উপর চাপ বাড়াতেই এমন কৌশল নিয়েছেন তিনি। প্রসঙ্গত, পূর্ব-মধ্য বিহারের পূর্ণিয়া এবং আশপাশের অঞ্চলের (‘সীমাঞ্চল’ যা নামে পরিচিত) ‘বাহুবলী’ নেতা হিসাবে পরিচিত পাপ্পু একদা লালুর আস্থাভাজন ছিলেন। সিপিএম নেতা অজিত সরকারের খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত হয়েছিলেন তিনি, পরে লালুর সঙ্গে মতবিরোধের কারণে কংগ্রেসে যোগ দিয়েছিলেন পাপ্পু। পরে আবার আরজেডিতে ফিরে যান।
আরও পড়ুন:
২০১৪-র লোকসভা ভোটে মধেপুরা আসনে আরজেডি প্রার্থী হিসাবে জেডি(ইউ)-এর শরদ যাদবকে হারিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু ২০১৫-য় লালুর সঙ্গে মতবিরোধের কারণে আরজেডি থেকে বহিষ্কৃত হয়েছিলেন। এর পরে ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটের আগে কংগ্রেসে ফিরে এলেও বিহারের পূর্ণিয়া আসনটি পাপ্পুকে ছাড়েননি তেজস্বী। বরং সেখানে আরজেডি প্রার্থীর প্রচারে গিয়ে পাপ্পুর নাম না করে তেজস্বী বলেছিলেন, ‘‘হয় আমাদের ভোট দিন, নয়তো এনডিএ প্রার্থীকে। নির্দলকে কখনও ভোট দেবেন না।’’ যদিও শেষ পর্যন্ত জিতেছিলেন নির্দল পাপ্পুই। অন্য দিকে, আরজেডির জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছিল। বিহারের আসন্ন বিধানসভা ভোটে আসন বন্টন নিয়ে ইতিমধ্যেই কংগ্রেস-আরজেডির টানাপড়েন শুরু হয়েছে। এই আবহে পাপ্পুর ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।