মধ্যপ্রদেশের সভায় নরেন্দ্র মোদী। ছবি: পিটিআই।
বিধানসভা ভোটের আগে আবার মধ্যপ্রদেশে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সন্ত রবিদাসের মন্দিরের শিলান্যাসের পরে এ বার শিল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনে। বৃহস্পতিবার বীনা জেলার পেট্রোকেমিক্যাল প্রকল্প-সহ মোট ১০টি শিল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী। আর সেই সঙ্গেই কার্যত আসন্ন বিধানসভা ভোটের প্রচারের সূচনা করেন। বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র বিরুদ্ধে সনাতন ধর্মকে ধ্বংস করার অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, ‘‘ওরা দেশকে হাজার বছরের দাসত্বের দিকে ঠেলে দিতে চাইছে।’’
চলতি বছরের নভেম্বর-ডিসেম্বরে মধ্যপ্রদেশে বিধানসভা ভোট হওয়ার কথা। তার আগে প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকার পেট্রোকেমিক্যাল প্রকল্পের উদ্বোধনে যোগ দিতে গিয়ে মোদী বিরোধী জোটকে ‘ঘমন্ডিয়া’ (অহঙ্কারী) বলে খোঁচা দেন। তিনি বলেন, ‘‘ঘমন্ডিয়া জোট সম্প্রতি মুম্বইয়ে বৈঠক করেছে। তাদের না আছে কোনও নীতি, না কোনও কর্মসূচি, না কোনও নেতা। তাদের সনাতন ধর্মকে আঘাত করার গোপন ছক রয়েছে। সনাতন ধর্মকে তারা ধ্বংস করতে চায়।’’
সনাতন ধর্মকে অপমান করার অভিযোগে তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী তথা ডিএমকে প্রধান এমকে স্ট্যালিনের পুত্র উদয়নিধির বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই সরব হয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ-সহ বিজেপি নেতা-নেত্রীরা। এই আবহে মোদী যে ভাবে, পুরো বিষয়টিকে সুকৌশলে ‘ইন্ডিয়া’র সঙ্গে জুড়ে দিয়েছেন তা তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ। কারণ, তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, শিবসেনার সঞ্জয় রাউত, কংগ্রেসের কমল নাথ, কেসি বেনুগোপালের মতো ‘ইন্ডিয়া’র নেতারা ইতিমধ্যেই প্রকাশ্যে বলেছেন, কোনও ধর্মের প্রতি অবমাননা তাঁরা সমর্থন করেন না।
গত ১৮ জুলাই বেঙ্গালুরুতে আনুষ্ঠানিক ভাবে বিজেপি বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’ (ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্টাল ইনক্লুসিভ অ্যালায়ান্স’)-র আত্মপ্রকাশের পরেই অবশ্য ধারাবাহিক ভাবে খোঁচা দিয়ে চলেছেন মোদী। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের মতে, নামমাহাত্ম্যের জেরে বিরোধী শিবির জাতীয়তাবাদে ভাগ বসাতে পারে বুঝেই মোদী বলেছিলেন, জঙ্গি সংগঠন ‘ইন্ডিয়ান মুজাহিদিন’ এবং নিষিদ্ধ সংগঠন ‘পপুলার ফ্রন্ট অব ইন্ডিয়া’-র নামেও ‘ইন্ডিয়া’ রয়েছে। ভারত দখলকারী ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির নামেও ‘ইন্ডিয়া’ রয়েছে। ‘ইন্ডিয়া’ জোটের সঙ্গে নিষিদ্ধ সংগঠন ‘সিমি’-র (স্টুডেন্টস ইসলামিক মুভমেন্ট অব ইন্ডিয়া) তুলনা টেনেছিলেন তিনি। বলেছিলেন, ‘‘বিরোধী জোটের নামের আড়ালে লুকিয়ে রয়েছে পাপ।’’ ইন্দিরা গান্ধীর আমলে কংগ্রেসের স্লোগান ‘ইন্দিরা ইজ় ইন্ডিয়া’-কেও কটাক্ষ করেছিলেন তিনি। মধ্যপ্রদেশের সভাতেও দেখা গেল সেই ধারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy