Advertisement
০৯ অক্টোবর ২০২৪
AAP

Bhagwant Mann: পঞ্জাবে কেজরীবালের ‘মানরক্ষা’, হাসি ফোটালেন ‘কৌতুকশিল্পী’ ভগবন্ত মান

ফলাফলেও দেখা গেল ঝাড়ুর ঝড়ে ধরাশায়ী বিরোধীরা। আপ প্রধান অরবিন্দের মুখে হাসি ফোটালেন একদা কৌতুকশিল্পী। তিনি— পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী ভগবন্ত মান।

আপ প্রধান অরবিন্দের মুখে হাসি ফোটালেন একদা কৌতুকশিল্পী।

আপ প্রধান অরবিন্দের মুখে হাসি ফোটালেন একদা কৌতুকশিল্পী।

সৈকত দাস
কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ মার্চ ২০২২ ১১:৫৯
Share: Save:

পাঁচ রাজ্যে বুথফেরত সব সমীক্ষাতেই ইঙ্গিত ছিল পঞ্জাবে বড় ব্যবধানে জয়ী হচ্ছে অরবিন্দ কেজরীবালের আম আদমি পার্টি (আপ)। ফলাফলেও দেখা গেল ঝাড়ুর ঝড়ে ধরাশায়ী বিরোধীরা। আপ প্রধান অরবিন্দের মুখে হাসি ফোটালেন একদা কৌতুকশিল্পী। তিনি— পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী ভগবন্ত মান। অরবিন্দের ‘মান’ তো ভগবন্ত রাখলেনই। বাকি কেন্দ্রগুলিতেও আশাতীত ফল করল আপ।

বৃহস্পতিবার গণনার শুরু থেকেই এগিয়েছিলেন ভগবন্ত। সাত রাউন্ডের গণনার শেষে ভগবন্ত এগিয়ে রয়েছেন ৪৩,৮৯৮ ভোটে। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কংগ্রেসের ভোট ১৪,১৯১। অর্থাৎ, পঞ্জাবে আপ-এর ‘মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী’ তখনই এগিয়ে প্রায় ৩০ হাজার ভোটে। যে ব্যবধান বাড়বে বৈ কমবে না।

পঞ্জাবে কেজরীবালের দলের লড়াইয়ের শুরু হয়েছিল ২০১৪ সালের লোকসভা ভোটে। দিল্লি ছাড়িয়ে সর্বভারতীয় রাজনীতিতে আপ-কে মেলে ধরতে তিনি প্রথম যে রাজ্যে লড়াই শুরু করেন, সেটি ছিল পঞ্জাব। সেবার পঞ্জাবের ১৩টি লোকসভা কেন্দ্রেই প্রার্থী দিয়েছিল আপ। তার মধ্যে জয় এসেছিল চারটিতে। সেই চার সাংসদের একজন ছিলেন ভগবন্ত।

তার পর ২০১৭ সালের বিধানসভা ভোট। ১১৭ আসনের পঞ্জাব বিধানসভায় লড়লেও কোনও মুখ্যমন্ত্রীর মুখ ঘোষণা করেননি কেজরীবাল। তাতেই মিলেছিল আশাতীত সাফল্য। তবে মানের মান বাঁচেনি। জালালাবাদ কেন্দ্রে ১৮ হাজারের বেশি ভোটে হেরেছিলেন তিনি।

আট বছর পর কৃষক আন্দোলনে উত্তপ্ত পঞ্জাবের বিধানসভা ভোটের লড়াইয়ের শুরুতেই কেজরীবাল জানিয়ে দেন পঞ্জাবে তাঁদের ‘মুখ্যমন্ত্রীর মুখ’ ভগবন্ত। ২০১৯ সাল থেকে সঙ্গরুর লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ ভগবন্ত বিধানসভায় ভোট লড়েছিলেন সেই কেন্দ্রের ধুরি বিধানসভা কেন্দ্র থেকে।

তবে রাজনীতিক নয়, পঞ্জাবে ভগবন্তের প্রথম পরিচিতি কৌতুক শিল্পী ও অভিনেতা। টেপরেকর্ডার-ক্যাসেটের জমানায় ভগবন্তের নাম শুনলেই হাসি খেলে যেত আট থেকে আশির মুখে। তাঁর কৌতুক নকশার ‘জঁর’ ছিল রাজনীতি। দেশের রাজনৈতিক নেতাদের নিয়ে ভগবন্তের কৌতুক, টিপ্পনির ক্যাসেট বিক্রি হত হুড়মুড়িয়ে। ভগবন্ত মুখ দেখিয়েছেন বড় পর্দাতেও। তাঁর অভিনীত একটি ছবি জাতীয় পুরস্কারও পেয়েছে। ভগবন্তের ‘জুগনু কেন্দা হ্যায়’ টিভি কমেডি শো ছিল প্রবল জনপ্রিয়। কানাডা ও ব্রিটেনেও কমেডি শো করেছেন ভগবন্ত। শখ বলতে ভলিবল খেলা।

সেই কৌতুকশিল্পী-অভিনেতার ‘নেতা’ হওয়ার শুরুয়াত ২০১১ সালে। রাজনীতির কেরিয়ার শুরু ‘পিপল্‌স পার্টি অব পঞ্জাব’-এর হয়ে। যদিও প্রথম বিধানসভা ভোটে হেরেছিলেন। এর বেশ কিছু দিন পর আপের হাত ধরেন। ২০১৪ সালে পঞ্জাবের সঙ্গরুর লোকসভা কেন্দ্র থেকে দু’লক্ষেরও বেশি ভোটে জেতেন তিনি। ২০১৯ সালে একই লোকসভা কেন্দ্র থেকে দ্বিতীয়বার জয়। তার মধ্যে কৌতুকশিল্পীর সত্তা ছেড়ে পুরোদস্তুর রাজনীতিক হয়ে উঠেছেন ভগবন্ত।

বিতর্কেও জড়িয়েছেন। ২০১৬ সালে মদ্যপ অবস্থায় সংসদে প্রবেশের অভিযোগ উঠেছিল তাঁর বিরুদ্ধে। শেষমেশ মা’কে পাশে নিয়ে ভগবন্ত জানান, তাঁর জন্য দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। প্রতিজ্ঞা করেন, আর কোনও দিন মদ ছোঁবেন না। তবে এতকিছুর পরেও এই কমেডিয়ান-রাজনীতিকের ভাবমূর্তিতে সে ভাবে টোল পড়়েনি।

আপের মুখ্যমন্ত্রীর ‘মুখ’ ভগবন্ত ঘোষণা করেছিলেন, মাদক কারবারে কলঙ্কিত পঞ্জাবকে মাদকমুক্ত করবেন। প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, পঞ্জাবে আপ ক্ষমতায় এলে ‘ড্রাগ টাস্ক ফোর্স’ তৈরি হবে। কোনও রকম রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ ছাড়া স্বাধীন ভাবে কাজ করবে সেই ফোর্স। তিনি এ-ও বলেছিলেন, ‘‘সিএম (মুখ্যমন্ত্রী) মানে কমন ম্যান (সাধারণ মানুষ)। মুখ্যমন্ত্রী হলে সাধারণ মানুষ হিসেবেই সাধারণের সেবা করব। তবে কারও কাছে মাথা হেঁট করব না।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE