এখন থেকে মাদক পাচার মামলায় জামিন পেলেও পায়ে পরানো থাকবে জিপিএসের ‘বেড়ি’! কড়া নজর রাখা হবে গতিবিধিতে। এমনটাই সিদ্ধান্ত নিয়েছে পঞ্জাব পুলিশ। রাজ্য সরকারের ‘মাদকবিরোধী যুদ্ধ’-এর অংশ হিসাবেই এমন অভিনব পদক্ষেপ।
পঞ্জাব পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মাদক পাচার কাণ্ডে ‘মূল মাথা’ কিংবা বার বার একই অপরাধে জেলে যাওয়া ব্যক্তিদের গতিবিধির উপর নজর রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এখন থেকে জামিনে মুক্তি পেলেও নজরদারির জন্য তাঁদের পায়ে জিপিএস-নির্ভর ‘বেড়ি’ বা ‘অ্যাঙ্কলেট’ পরানো হবে। কেউ যাতে মুক্তি পেয়েই ফের একই কাজ না করেন বা গা-ঢাকা না দিতে পারেন, সে জন্যই এমন প্রযুক্তির সাহায্য নিচ্ছে সে রাজ্যের পুলিশ।
পঞ্জাব পুলিশের ডিজি গৌরব যাদব বলেন, ‘‘বড় মাদক পাচারকারীরা জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর তাঁদের পায়ে জিপিএস অ্যাঙ্কলেট পরানো হবে। এ বিষয়ে আরও পরীক্ষানিরীক্ষা চলছে। পাশাপাশি, মানবাধিকারের কথা মাথায় রেখে আমরা এর সম্ভাব্যতাও বিচার করে দেখব। বার বার একই অপরাধে অভিযুক্ত হলে সে ক্ষেত্রে যাতে সহজে জামিন না পাওয়া যায়, সেটাও নজরে রাখা হবে। এ ধরনের মামলায় জেল কর্তাদের কোনও ধরনের যোগসাজশ বরদাস্ত করা হবে না। কড়া পদক্ষেপ করা হবে।’’
আরও পড়ুন:
ডিজিপি গৌরবের কথায়, জম্মু ও কাশ্মীরে ইতিমধ্যেই এই ধরনের ‘অ্যাঙ্কলেট’ ব্যবহার করা হচ্ছে। ২০২৩ সালের নভেম্বরে, ভারতের প্রথম এমন অঞ্চল হিসাবে নজির গড়ে জম্মু ও কাশ্মীর, যেখানে বেআইনি কার্যকলাপ প্রতিরোধ আইন (উএপিএ)-র অধীনে অভিযুক্তদের শরীরে ‘জিপিএস ট্র্যাকিং ডিভাইস’ লাগানো হয়েছিল। এখনও ওই কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের প্রায় ৪০ জন ব্যক্তির উপর নজর রাখা হচ্ছে। তবে জম্মু ও কাশ্মীর সন্ত্রাস-সম্পর্কিত মামলায় এই প্রযুক্তি ব্যবহার করলেও পঞ্জাব তা মাদকপাচার বিরোধে কাজে লাগাতে চায়। ইতিমধ্যে পঞ্জাবের সমস্ত স্টেশন হাউস অফিসারকে (এসএইচও) এই যন্ত্রগুলি ব্যবহারের জন্য আদালতের অনুমোদন নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
রাজ্যে মাদক সমস্যার কথা বলতে গিয়ে ডিজিপি জানিয়েছেন, পঞ্জাবের বিভিন্ন মাদকাসক্তিমুক্তি কেন্দ্রে বর্তমানে মোট ৫,৭৮৬ জন চিকিৎসাধীন। সীমান্তে মাদক পাচার রোধে ন’টি নতুন ‘অ্যান্টি-ড্রোন সিস্টেম’ও বসানো হচ্ছে। মাদক সমস্যা রোধের উদ্দেশ্যে প্রত্যেক পুলিশকর্মী একজন মাদকাসক্তের দায়িত্ব নেবেন বলেও জানিয়েছেন ডিজিপি, যাতে তিনি সুস্থতার পথে থাকেন। তবে ডিজিপি জানিয়েছেন, এ বিষয়ে কোনও বাধ্যবাধকতা নেই।