হাত বাঁধা। মুখে কাপড় গোঁজা। সারা শরীর তখন আগুনে জ্বলছে। চিৎকারও করতে পারছিল না মেয়েটি! ওই অবস্থায় রাস্তা দিয়ে ছুটে যাচ্ছিল মেয়েটি। স্থানীয়েরা যখন তাকে উদ্ধার করে আগুন নিবিয়েছিল, কোনও ক্রমে মেয়েটি জানিয়েছিল, তিন জন তার গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে।
পুরীর সেই অগ্নিদগ্ধ কিশোরী নাকি বয়ান বদল করেছে! পুলিশ সূত্রকে উদ্ধৃত করে তেমনটাই দাবি করল সংবাদপত্র ‘দ্য টাইমস অফ ইন্ডিয়া’। সংবাদপত্রের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বর্তমানে দিল্লি এমসে ভর্তি থাকা ওই নাবালিকা পুলিশকে দেওয়া তার আগের বয়ান তুলে নিয়েছে। পুলিশের একটি সূত্র সংবাদপত্রকে বলেছে, ‘‘গত ১৯ জুলাই ভুবনেশ্বরে নাবালিকা যে বয়ান দিয়েছিল, তা সে তুলে নিয়েছে। সে জানিয়েছে, সে মানসিক ভাবে বিধ্বস্ত ছিল। সেই কারণেই তিন হামলাকারীর গল্প ফেঁদেছিল সে।’’
অগ্নিদগ্ধ কিশোরীর বয়ান বদলের দাবির সূত্র ধরেই প্রশ্ন উঠছে, তা হলে কি সে নিজেই নিজের গায়ে আগুন দিয়েছিল? গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিল? পুলিশের তরফে অবশ্য এ বিষয়ে সরকারি ভাবে কিছু জানানো হয়নি। পুলিশ সূত্রের বক্তব্য, ‘‘কিছু ব্যক্তিগত বিষয়ে মানসিক ভাবে ভীষণ বিধ্বস্ত ওই কিশোরী। হতে পারে কেউ ওকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দিয়েছে।’’
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, হাসপাতালে কিশোরী যা বয়ান দিয়েছে পুলিশের কাছে, তার কোনও আইনি বৈধতা নেই। কিশোরী যাতে বিচারকের সামনে নিয়ম মেনে বয়ান দিতে পারে, তার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
যে থানা ঘটনার তদন্ত করছে, শনিবার সেই থানায় গিয়েছিলেন পুরীর পুলিশ সুপার পিনাক মিশ্র। তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে খোঁজ নিয়েছেন তিনি। পরে তিনি বলেন, ‘‘এখনও কোনও যুক্তিগ্রাহ্য সিদ্ধান্তে পৌঁছোতে পারেনি পুলিশ। সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’ পুলিশ সূ্ত্রে দাবি, প্রাথমিক বয়ানে যে তিন দুষ্কৃতীর কথা বলেছিল কিশোরী, এখনও পর্যন্ত তদন্তে তার কোনও প্রমাণ মেলেনি। এলাকাবাসীর বয়ান সংগ্রহ করে, এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখেও কিছু পাওয়া যায়নি।
ওড়িশার উপমুখ্যমন্ত্রী প্রভাতী পারিদা জানান, মেয়েটির শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে। দু’টি অস্ত্রোপচার হয়েছে দিল্লি এমসে। এখন সাধারণ খাবারই খাচ্ছে। অক্সিজেন সাপোর্টেরও প্রয়োজন পড়ছে। মেয়েটির পুরোপুরি সুস্থ হতে ৪০-৫০ দিন সময় লাগবে বলেই জানিয়েছেন উপমুখ্যমন্ত্রী।