Advertisement
E-Paper

শীর্ষবৈঠক না-ও হতে পারে! ট্রাম্প কি ভারতের সঙ্গে শুল্কযুদ্ধের জেরেই কোয়াড নিয়ে নিরুৎসাহী?

২০২৪ সালের নভেম্বরে আমেরিকায় ডেলাওয়ারে কোয়াডের বার্ষিক শীর্ষবৈঠক হয়েছিল। সেখানে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বার্তা দিয়েছিলেন, পরবর্তী বৈঠকের আয়োজক হতে পারে ভারত।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৪ অক্টোবর ২০২৫ ০৯:৪৯
(বাঁ দিকে) ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (ডান দিকে)।

(বাঁ দিকে) ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (ডান দিকে)। — ফাইল চিত্র।

রীতি ভাঙতে চলেছে কোয়াড। ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে সক্রিয় সামরিক চতুর্দেশীয় অক্ষ (ভারত, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া এবং জাপান যার সদস্য)-এর বার্ষিক শীর্ষবৈঠক এ বার না-ও হতে পারে বলে সরকারি সূত্রের খবর। ঘটনাচক্রে, আগামী নভেম্বরে দিল্লিতে এই বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। গত ফেব্রুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আমেরিকায় গিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করার পরে বিদেশ মন্ত্রকের তরফেও কোয়াড শীর্ষবৈঠক আয়োজনের বার্তা দেওয়া হয়েছিল।

২০২৪ সালের নভেম্বরে আমেরিকায় ডেলাওয়ারে কোয়াডের বার্ষিক শীর্ষবৈঠক হয়েছিল। তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আয়োজিত ওই বৈঠকে মোদীর পাশাপাশি জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিয়ো কিশিদা এবং অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্টনি আলবানিস যোগ দিয়েছিলেন। সেখানেও জানানো হয়েছিল, ভারত পরবর্তী কোয়াড শীর্ষবৈঠকের আয়োজক হতে চলেছে। কিন্তু ট্রাম্পের জমানায় কেন চিনকে চাপে রাখার জন্য গঠিত চতুর্দেশীয় অক্ষ (কোয়াড্রিল্যাটারাল সিকিউরিটি ডায়ালগ বা কোয়াড)-এর গুরুত্ব কমল? কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের দাবি, ভারতের সঙ্গে শুল্কসংঘাত এবং জাপানের সঙ্গে বাণিজ্যিক টানাপড়েন এর অন্যতম কারণ।

বিদেশ মন্ত্রকের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, কোয়াড শীর্ষবৈঠক আয়োজনের বিষয়ে কূটননৈতিক স্তরে এখনও কোনও বার্তা আসেনি সদস্যরাষ্ট্রগুলির তরফে। তিনি বলেন,
‘‘যা সময় রয়েছে, তাতে নভেম্বরে শীর্ষবৈঠকের আয়োজন করা খুবই কঠিন।’’

এর পাশাপাশি, কোয়াড নিয়ে ট্রাম্পের অনাগ্রহের আর একটি কারণ হতে পারে গত বছর গঠিত সামরিক জোট ‘স্কোয়াড’। জাপান, অস্ট্রেলিয়া ও ফিলিপিন্সকে নিয়ে আমেরিকার নেতৃত্বাধীন ওই সামরিক জোটে ভারত এবং দক্ষিণ কোরিয়াকে আমন্ত্রণ জানানো হতে পারে বলে প্রাথমিক ভাবে বার্তা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তা হয়নি। শুল্কযুদ্ধের কারণে নয়াদিল্লির প্রতি ট্রাম্পের ‘কৌশলগত আস্থা’ যে কমেছে, এই ঘটনা তার উদাহরণ বলে মনে করছেন কূটনীতিকদের একাংশ। দক্ষিণ চিন সাগরের দখলদারি নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরেই ফিলিপিন্স, ভিয়েতনাম, ইন্দোনেশিয়ার মতো দেশগুলির সঙ্গে চিনের বিরোধ রয়েছে। সেই সুযোগের সদ্ব্যবহার করতেই আমেরিকা ‘স্কোয়াড’ গড়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে বেজিঙের আধিপত্য রুখতে ২০০৭ সালে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ এবং জাপানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের উদ্যোগে ‘কোয়াড’ গঠিত হয়েছিল। কিন্তু ২০০৮ সালে বারাক ওবামা প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরে কোয়াডের তৎপরতা স্তিমিত হয়ে পড়েছিল। ঘটনাচক্রে, ২০১৬-২০ মার্কিন প্রেসিডেন্ট পদে প্রথম মেয়াদে কোয়াডের পুনরুজ্জীবনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন ট্রাম্প। বেজিংবিরোধী চতুঃশক্তি জোটটির ‘অকালমৃত্যু’ ঘটলে তার জন্য ট্রাম্পকেই দায়ী করা উচিত বলে কূটনৈতিক বিশ্লেষকেরা মনে করছেন। তাঁদের কথায়, গত চার বছরে কোয়াডভুক্ত দেশগুলি একাধিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকার নিরাপত্তার প্রশ্নে ক্ষুদ্র স্বার্থ সরিয়ে রেখে ঐক্যবদ্ধ হতে দেখা গিয়েছে তাদের। কিন্তু, দ্বিতীয় বারের জন্য প্রেসিডেন্ট হয়ে সে সবের ধার ধারছেন না ট্রাম্প। বাকি তিন সদস্যের স্বার্থবিরোধী একের পর এক পদক্ষেপ করছেন তিনি। এ বার কি শীর্ষবৈঠকের প্রথা বন্ধ করে কোয়াডকে অপ্রাসঙ্গিক করে দেবেন ট্রাম্প?

Quad Meet Quad Squad Quad summit Quad group India US Tariff Row US Tariff War Donald Trump vs India
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy