ফাইল চিত্র।
সংক্রমণের তৃতীয় ধাক্কায় দেশের করোনা পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ। জনমানসে এ নিয়ে বেশ আতঙ্কও তৈরি হয়েছে। কিন্তু ওই ধাক্কা কি আদৌ আসবে? আর আসলে কবে আসতে পারে, তা নিয়ে স্বাস্থ্যকর্তাদের কাছে ব্যাখ্যা চাইলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্যরা।
আর্থ সামাজিক ক্ষেত্রে করোনার দ্বিতীয় ধাক্কার প্রভাব, দেশে টিকাকরণের হার-এই ছিল এ দিন সংসদীয় স্থায়ী কমিটির আলোচনার বিষয়বস্তু। সরকারের পক্ষে দাবি করা হয়, অতিমারি ও লকডাউন সত্ত্বেও দেশের আর্থিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা চালু রয়েছে। বাড়ার ইঙ্গিত দিয়েছে জিডিপি। ওই অতিমারির আবহে বিশ্বের অনেক দেশের তুলনায় ভারতের অর্থব্যবস্থা ভাল অবস্থায় রয়েছে। যদিও ওই যুক্তি মানতে চাননি কমিটির চেয়ারম্যান ও কংগ্রেস নেতা আনন্দ শর্মা। সূত্রের মতে, তিনি বৈঠকে বলেন দেশে লকডাউনের কারণে অধিকাংশ কল-কারখানা বন্ধ, উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে, বহু মানুষ চাকরি হারিয়েছেন। তাই দেশের আর্থিক অবস্থা ভাল অবস্থায় রয়েছে এ কথা মোটেই বলা যায় না। বিশেষ করে ধাক্কা খেয়েছে গ্রামীণ অর্থনীতি। সূত্রের মতে, কংগ্রেসের আর এক সদস্য প্রদীপ ভট্টাচার্য বৈঠকে বলেন দেশের লোকের হাতে টাকা নেই। কাজ চলে যাওয়ায় ক্রয়ক্ষমতা হারিয়েছেন দেশের মানুষের বড় অংশ। এই পরিস্থিতিতে অর্থনীতিকে বাঁচাতে হলে দেশের মানুষের হাতে নগদের জোগান বাড়াতে হবে। অর্থ মন্ত্রকের প্রতিনিধিরা পাল্টা যুক্তিতে জানিয়েছেন, মে মাস থেকে দেশে বিদ্যুতের
ব্যবহার, টোল সংগ্রহ এবং পণ্যের সরবরাহের সূচক উর্ধ্বমুখী হয়েছে। যা আশাপ্রদ।
দ্বিতীয় ধাক্কা যেতে না যেতেই সংক্রমণের তৃতীয় ঢেউ আছড়ে পড়ার আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। বৈঠকে স্বাস্থ্য কর্তাদের কাছে তৃতীয় ধাক্কা কবে আসতে পারে তা
দলমত নির্বিশেষে জানতে চান সাংসদেরা। সূত্রের মতে, বৈঠকে প্রদীপবাবু বলেন তৃতীয় ধাক্কা নিয়ে মানুষের মনে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। এতে ভুল বার্তা যাচ্ছে। সরকারের উচিত এ নিয়ে প্রকাশ্যে বিবৃতি দিয়ে তৃতীয় ধাক্কা প্রসঙ্গে যাবতীয় সংশয় দূর করা। একইসঙ্গে দ্বিতীয় ধাক্কায় কেন সরকার প্রস্তুত ছিল না, কেন অক্সিজেনের অভাবে দেশবাসীর মৃত্যু হয়েছে তাও উপস্থিত স্বাস্থ্যকর্তাদের কাছে জানতে চান বিরোধী দলের সাংসদেরা। সূত্রের খবর, বৈঠকে উপস্থিত বিজেপি সাংসদেরা পাল্টা দাবি করেন অতিমারি নিয়ন্ত্রণে সরকার যথাসাধ্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। স্বাস্থ্য পরিকাঠামো উন্নয়নের পাশাপাশি দেশের সব মানুষকে বিনামূল্যে টিকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। ইতিমধ্যেই দেশের এক চতুর্থাংশ মানুষ টিকা পেয়েছেন। দেশে টিকার অভাব নিয়ে বিরোধীদের তোলা অভিযোগের জবাবে স্বাস্থ্যকর্তারা বৈঠকে জানান, আগামী অগস্ট-ডিসেম্বরের মধ্যে ১৩৫ কোটি প্রতিষেধকের ডোজ় হাতে পাওয়া যাবে। একইসঙ্গে জানানো হয়েছে দেশের ১৭৪টি জেলায় করোনা ভাইরাসের ‘ভ্যারিয়ান্ট অব কনসার্ন’ পাওয়া গিয়েছে। আর এ দেশে ৫১টি নমুনায় ডেল্টা প্লাস স্ট্রেনের উপস্থিতি পাওয়া গিয়েছে বলে সাংসদদের জানিয়েছেন স্বাস্থ্যকর্তারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy